• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

নির্যাতিত হয়ে দেশে ফিরলো কিশোরী মুক্তা

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৭ জানুয়ারি ২০১৯  

অসচ্ছ্বল পরিবারের ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে সুদূর প্রবাসে পারি জমালেও ঘোরাতে পারেনি ভাগ্যের চাকা জোটেনি এতটুকু সুখের ছোঁয়া, পদে পদে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে

সৌদি কফিল ও তার পরিবারের সদস্যদের নির্মম নির্যাতনে সারা শরীরে ক্ষত চিহ্ন নিয়ে নয় মাস পর বাংলাদেশে ফিরে এসেছে কিশোরী মুক্তা আক্তার (১৬) শরীরের বিভিন্ন জায়গায় সে ছাপ স্পষ্ট 

মুক্তা আক্তার মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার নলি ইউনিয়নের নিদারাবাদ গ্রামের  মুখলেছ মিয়ার দ্বিতীয় মেয়ে মুক্তা নিদারাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে তার বাবা মুখলেছ নলি ইউনিয়ন কৃষক লীগের প্রচার সম্পাদক  মুক্তাসহ মুখলেছের পাঁচ মেয়ে ও একটি ছেলে সন্তান রয়েছে

রবিবার (০৬ জানুয়ারি) দেশে ফিরে রাতেই মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে কিশোরী মুক্তা

তার বাম ও ডান হাতের কব্জিতে কাটা ক্ষত, দুই পায়ে এসিডে পোড়ানো কালো ক্ষতের চিহ্ন এছাড়া শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গায়ও ক্ষতের চিহ্ন রয়েছে     

 

মুক্তার কাগজপত্র ঘেঁটে দেখা গেছে, ২০১৮ সালের ২৬ এপ্রিল সৌদি আরবে গিয়েছিল সে পার্শ্ববর্তী শিবালয় উপজেলার আদম ব্যাপারী আক্তার মিয়া সৌদি আরবে হাসপাতালের কাজে ভিসার প্রলোভন দেখায় তার বাবা মুখলেছকে পরে ৭০ হাজার টাকায় সৌদি আরবে পাঠাতে রাজী হন তিনি সে সময় দালাল আক্তারের সঙ্গে মুখলেছ ২৫০ টাকার তিনটি স্ট্যাম্পে চুক্তিও করেন কিন্তু হাসপাতালের কাজের পরিবর্তে কফিলের বাড়িতে কাজের মেয়ে হিসেবে পাঠানো হয় মুক্তাকে

নির্যাতনের শিকার মুক্তা আক্তার বলে, আমার কফিলের নাম মোহাম্মদ কফিল থাকতো জেদ্দায় আর আমি থাকতাম আবহাতে কফিলের বাড়ির সবাই নিয়মিত আমাকে মারধর করতো

কান্নাজড়িত কণ্ঠে মুক্তা আরো বলে, একদিন কফিল আমাকে চা বানাতে বলেছিল একই সময় কফিলের স্ত্রী পেঁয়াজ ছিলতে বলেছিল চা বানাতে গিয়ে পেঁয়াজ ছিলতে দেরি হয় কেন দেরি হলো এজন্য কফিলের স্ত্রী আমাকে রান্না ঘরে ডেকে নিয়ে ছুরি দিয়ে বাম হাতের কজ্বি বরাবর আঘাত করে একই সঙ্গে ডান হাতেও

মুক্তা বলে, এ ঘটনার পরে দুই দিন ফ্রিজের মধ্যে কয়েক মিনিট আমার মাথা ঢুকাইয়া রাখছে জুতা দিয়া পিটাইছে ওয়ালের মধ্যে আমার মাথা ধরে ধাক্কা মারছে দুই পায়ের হাঁটুর নিচে এসিড দিছে অনেকবার

 

সে বলে, এসব অত্যাচারে আমি বাবাকে ফোনে বলছিলাম, যদি জীবিত দেখতে চাও নিয়ে যাও আমি পালাতে পারতাম কিন্তু পালিয়ে যাব কোথায়? পাসপোর্ট মালিকের কাছে ছিল  

মুক্তার বাবা মুখলেছ মিয়া বলেন, মেয়ের কাছ থেকে অত্যাচারের খবর জানার পর দালালকে ধরে আরো টাকা দিয়ে মেয়েকে দেশে আনার ব্যবস্থা করি

এ ব্যাপারে দালালের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে জানান তিনি