• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

মির্জাপুরে টিকার অপেক্ষায় ৬২ হাজার ২৫৮ জন

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১  

করোনার টিকার জন্য গত ৬ আগস্ট স্ত্রীসহ নিজের জন্য নিবন্ধন করেছেন মির্জাপুর পৌরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ড পাহাড়পুর গ্রামের বাসিন্দা মো. হান্নান মিয়া। কিন্তু আজও টিকার মেসেজ পাননি তিনি। একইদিন টিকার আবেদন করেছেন পাহাড়পুর গ্রামের মোর্শেদা বেগম ও মুন্দিরাপাড়া গ্রামের উজ্জল হোসেন। তারাও মেসেজ পাননি। মেসেজ না পাওয়ায় টিকা দিতে পারছেন না বলে জানা গেছে। এদিকে মেসেজ ছাড়া টিকা দেওয়া হয় না বলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে সাফ জানিয়ে দে‌ওয়া হয়েছে। এদিকে নিবন্ধন করারও পরও মেসেজ না আশায় হতাশায় রয়েছেন নিবন্ধনকারীরা।

নিবন্ধন করে টিকার অপেক্ষায় আছেন মির্জাপুর উপজেলার ৬২ হাজার ২৫৮ জন। অপেক্ষায় আছেন দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণকারীরাও। প্রথম ডোজ নেওয়ার প্রায় দুই মাস পার হলেও মেসেজ পাননি অনেকেই। কবে মেসেজ আসবে ও কবে টিকা পাওয়া যাবে, সেটা জানেন না তারা।

হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, এ উপজেলায় এক লাখ ছয় হাজার ৭৬৩ জন টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন। সিনোফার্ম-ভেরোসেল-(চীন) প্রথম ডোজ পেয়েছেন ৩১ হাজার ৯৪৯ জন। দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ২০ হাজার ৩৩৭ জন। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন ১২ হাজার ৫৫৬ জন। দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ১০ হাজার ৯৪৩ জন। বাকি রয়েছেন এক হাজার ৬১৩ জন। সিনোফার্ম-ভেরোসেল-(চীন) ১৮ হাজার ৬৮০ ডোজ টিকা মজুদ থাকলেও অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা না থাকায় এক হাজার ৬১৩ জন দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিতে পারছেন না। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন আগামী মাসে টিকা আসলে তাদের দেওয়া হবে। 

সব মিলেয়ে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ উপজেলায় প্রথম ডোজ টিকা পেয়েছেন ৪৪ হাজার ৫০৫ জন আর দ্বিতীয় ডোজ টিকা পেয়েছেন ৩১ হাজার ২৮০ জন। আর ৬২ হাজার ২৫৮ জন নিবন্ধনকারীরা টিকার জন্য অপেক্ষা করছেন। মেসেজ না আসায় এই বিপুলসংখ্যক মানুষ টিকা দিতে পারছেন না বলে জানা গেছে। 

মাঝে টিকার সমস্যা ছিল। এখন সেটা কেটে গেছে। টিকা আসছে। নিয়মিত এক হাজার থেকে এক হাজার ৫০০ জন পর্যন্ত নিবন্ধনকারী টিকা নিচ্ছেন বলে হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে।

জিয়ারত খান বলেন, নিজের টিকা দিতে পারলেও স্ত্রীর মেসেজ না আসায় টিকা নিতে পারছেন না। 

পাহাড়পুর গ্রামের হান্নান মিয়া বলেন, আপনজনদের ‘করোনায়’ আক্রান্ত হয়ে ভুগতে দেখেছেন। গত ৬ আগস্ট স্ত্রীসহ আমার নিবন্ধন করেছি। এখনো মেসেজ পাইনি।’ এ নিয়ে হতাশায় রয়েছেন বলে জানান।

মুন্দিরাপাড়া গ্রামের উজ্জল হোসেন ও কামাড়পাড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, নিবন্ধন করার দেড় মাস পার হলেও মেসেজ পাননি। 

মির্জাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল টেকনোলোজিস্ট (ইপিআই) ইজাজুল হক জানান, ‘প্রতিদিন গড়ে এক হাজার থেকে ১৫০০ জন টিকা পাচ্ছেন। প্রথম ডোজ নেওয়ার পর দ্বিতীয় ডোজের জন্য সর্বনিম্ন ২৮ দিন অপেক্ষা করতে হবে। এরপর তারা মেসেজ পাবেন। যারা মেসেজ পাচ্ছেন, তারা যেকোনো দিন হাসপাতালে এসে টিকা নিতে পারবেন।’

মির্জাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাকসুদা খানম বলেন, এ উপজেলায় এক লাখের ওপর টিকার নিবন্ধনকারী আছেন। মাঝে টিকার সমস্যা ছিল। এখন সেটা কেটে গেছে। আবেদনকারীদের সিরিয়ালি টিকা দেওয়া হচ্ছে। ধীরে ধীরে সবাই-ই টিকা পাবেন।’ তবে মেসেজ ছাড়া কাউকে টিকা দেওয়া হয় না বলে জানান তিনি।