• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

মির্জাপুরে খুঁড়িয়ে চলছে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১৫ অক্টোবর ২০২১  

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৪ পদ থাকলেও আছেন শুধু ফার্মাসিস্ট ও এসএসিএমও। কিন্তু তারাও নিয়মিত কেন্দ্রে আসেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। তারা তিন দিন করে ভাগ করে কেন্দ্রে বসেন। মাঝে মধ্যে বন্ধও থাকে। এতে বিঘ্নিত হচ্ছে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাসেবা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে সরকার উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ও কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলার আমরাইল তেলিপাড়া গ্রামে গলচড়া উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন করা হয়। এতে একজন মেডিকেল কর্মকর্তা, একজন ফার্মাসিস্ট, একজন এসএসিএমও ও একজন মিডওয়াইফ নিয়োগ দেওয়া হয়।

উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে প্রত্যন্ত অঞ্চলে এই উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অবস্থান। আশপাশের গ্রামের মানুষের প্রাথমিক চিকিৎসাসেবায় এ উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিই একমাত্র ভরসা। কিন্তু কেন্দ্রের মেডিকেল কর্মকর্তা ও মিডওয়াইফ কয়েক মাস আগেই প্রেষণে অন্য জায়গায় চলে যান। ফার্মাসিস্ট ও এসএসিএমও কর্মস্থলে থাকলেও তারা সপ্তাহে তিন দিন করে ভাগ করে কর্মস্থলে আসেন। আবার মাঝে মধ্যে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি বন্ধও রাখা হয়। তাদের দুজনকে একত্রে কর্মস্থলে দেখা যায়না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) মির্জাপুর উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল বহুরিয়া ইউনিয়নের আমরাইল তেলিপাড়া গ্রামের গলচড়া উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, এসএসিএমও জামিলুজ্জামান সেবা নিতে আসা রোগীদের সামলাচ্ছেন। তবে ফার্মাসিস্টকে দেখা যায়নি।

সেবা নিতে সাইফুল ইসলাম নামের এক যুবক বলেন, ১২ অক্টোবর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি বন্ধ ছিল। রোগী এসে ফিরে গেছে। ওষুধ নিতে আসলে বলে ওষুধ নাই। ওষুধ না পেয়ে আমিও ফিরে যাই।

হায়দার আলী নামে এক কৃষক জানান, স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পাশেই তার চারটি আবাদি জমি আছে। জমিতে কাজ করার সময় মাঝে মধ্যে জানালা খোলা দেখতে পান। তবে এখানে আসা হয় না।

ওষুধ নিতে আসা মোমেনা বেগম ও রোকেয়া বেগম জানান, খোলা থাকলে রোগী আসে। রোগী আসলেও তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়। এছাড়া ওষুধ নাই বলে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।

মিজানুর রহমান ও জিন্নাত আলী জানান, দুজনে সপ্তাহে তিনদিন করে আসেন। মাঝে মধ্যে বন্ধও রাখা হয়। কোনদিন দুজনকে একসঙ্গে পাওয়া যায়নি। তারা সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে আসলেও দুপুর ১টা বাজলেই চলে যান। রোগীরা ওষুধ নিতে এসে বন্ধ দেখে ফিরে যান। প্রতিদিন ৩৫-৪০ জন রোগী আসেন বলে তারা জানান।

দুজনে মিলে সপ্তাহে তিনদিন করে অফিস করার বিষয়ে জানতে চাইলে জালিমুজ্জামন কিছু না বলে নীরবতা পালন করেন।

উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে না আসার বিষয়ে জানতে চাইলে ফার্মাসিস্ট সঞ্জিত কুমার সরকার বলেন, পূজার কারণে আজ কর্মস্থলে যাওয়া হয়নি।

তিন দিন ভাগ করে কেন্দ্রে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন।

মির্জাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাকসুদা খানম বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আজ আমার শেষ কর্মদিবস ছিল। তবে ওই উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মিডওয়াইফ রাজিয়া সুলতানা তানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও মেডিকেল কর্মকর্তা অন্য জায়গায় প্রেষনে আছেন। বাকি দুজনের অফিসে না যাওয়ার বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত নতুন কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবহিত করা হবে।