• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

শীতের ‘পূর্বাভাসের’ হেমন্তের শুরু

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১৭ অক্টোবর ২০২১  

শীতের ‘পূর্বাভাসের’ হেমন্তের শুরু হয়েছে। কার্তিক ও অগ্রহায়ণ দুই মাস মিলে যে ঋতু প্রতি বছর আমাদের দেশে আসে সে ঋতুকে আমরা হেমন্ত নামে জানি। যার কালপর্ব বাংলা বর্ষপঞ্জির কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাসব্যাপী। অর্থাৎ ১৭ অক্টোবর থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

হেমন্ত ঋতু ছয় ঋতুর চতুর্থ ঋতু। মাস হিসেবে বাংলা পঞ্জিকার সপ্তম মাস, হেমন্ত ঋতুর প্রথম মাস, যা শরতের পরবর্তী এবং শীতের পূর্ববর্তী ঋতু। তাই এ ঋতুকে এ দেশের মানুষজন শীতের পূর্বাভাস বলে অভিহিত করেন। হেমন্তের পুরো সকাল আবছা কুহেলিকায় ঢাকা থাকে। ঢাকা থাকে চারদিকের মাঠ-ঘাট। সবুজ ঘাস ও ধান গাছের ডগায় জমে থাকে শিশিরবিন্দু, যা আমাদের জানান দেয় হেমন্ত এসেছে। এসময় হালকা শীত অনুভূত হয়। সূর্য ওঠার পর ধীরে ধীরে কুহেলিকা মুক্ত হয় চারপাশের মাঠ-ঘাট ও আকাশ। হেমন্ত মানেই শিশিরভেজা নয়ন মনোমুগ্ধকর এক সকাল। এ সময় শরতের কাশফুল একদিকে মাটিতে নুইয়ে পড়ে অন্যদিকে মহাসমারোহ নবান্নের আগমন ঘটে। অনেকেই এ ঋতুকে বৈচিত্র্যময় রং ও পাতা ঝরার ঋতুও বলে থাকেন। কারণ হিসেবে বলা যায়, ঝাউগাছ ছাড়া প্রায় সবগাছের পাতাই এসময় ঝরে যেতে শুরু করে এবং শীতের আগমনের আগেই অধিকাংশ বৃক্ষ পাতাহীন হয়ে যায়।

হেমন্তের ফসল কাটাকে ঘিরেই নবান্ন উৎসবের সূত্রপাত

বইপাঠে জানা যায়, কৃত্তিকা ও আগ্রানামক দুটি তারার নামানুসারে এ ঋতুর মাসদ্বয়ের নাম রাখা হয়েছে কার্তিক ও অগ্রহায়ণ। কার্তিকের আঞ্চলিক নাম ‘কার্তি’। যাকে গাঁয়ের লোকজন ‘মরা কার্তিক’ নামেই জানেন। মরা কার্তিকের পরই আসে সর্বজনীন লৌকিক উৎসব নবান্ন। এই নবান্ন শব্দটির আভিধানিক অর্থ হলো নতুন অন্ন বা নতুন ভাত। হেমন্তকালীন ধান কাটার পর নতুন চালের পিঠা-পায়েস প্রভৃতি খাওয়ার উৎসব বা পার্বণবিশেষ, যা পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী মহোৎসব, পলস্নী বাঙালির প্রাণের উৎসব। মূলকথা, নবান্ন হলো নতুন আমন ধান কাটার পর সেই ধান থেকে তৈরি চালের প্রথম রন্ধন উপলক্ষে আয়োজিত আনন্দানুষ্ঠান, যা সাধারণত অগ্রহায়ণ মাসে পাকা আমন ধান কাটার পর অনুষ্ঠিত হয়। হেমন্তের এই ফসল কাটাকে ঘিরেই নবান্ন উৎসবের সূত্রপাত।