• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

গেটম্যানের ‘গাফিলতি’তে যেভাবে ত্রিমুখী সংঘর্ষ, ঝরল তিন প্রাণ

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৫ ডিসেম্বর ২০২১  

চট্টগ্রামে ডেমু ট্রেনের সঙ্গে বাস ও সিএনজি ট্রেক্সির ত্রিমুখী সংঘর্ষে পুলিশ সদস্যসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১০ জন। নিহতরা হলেন সিএমপি ট্রাফিক বিভাগের কনস্টেবল মনির হোসেন, সৈয়দ বাহার উদ্দিন এবং মোহাম্মদ সাজ্জাদ। শনিবার সকালে নগরীর খুলশী থানাধীন ঝাউতলা রেলক্রসিং এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ত্রিমুখী এ সংঘর্ষের জন্য প্রশাসন ও স্থানীয় লোকজন গেটম্যানের গাফিলতিকে দায়ী করেছেন।

রেলওয়ে পুলিশ চট্টগ্রাম অঞ্চলের পুলিশ সুপার হাছান চৌধুরী বলেন, ‘ঝাউতলা রেলক্রসিংয়ের সড়কে গেটম্যান লোহার বার না দেওয়ার কারণে ট্রেন-বাস-টেক্সির ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়েছে। এতে তিনজন নিহত এবং আহত হয়েছেন ১০ জন।’

সিএমপি’র মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আরাফাতুল ইসলাম বলেন, ‘রেললাইনের ওপর বাস ও সিএনজি টেক্সিকে দেখে ট্রাফিক সদস্য মনির গাড়িগুলো সরানোর চেষ্টা করেন। তখন ট্রেনের ধাক্কায় মনিরসহ তিনজন নিহত হন।’
জানা যায়, শনিবার সকালে নাজিরহাট থেকে চট্টগ্রাম স্টেশনের দিকে আসছিল ডেমু ট্রেন। ট্রেন আসার সংকেত পেয়ে নগরীর ঝাউতলা রেল ক্রসিং এলাকায় গেটম্যান আলমগীর ভূঁইয়া সড়কের এক পাশে লোহার বার ফেললেও অন্য পাশ ছিল খোলা। ট্রেন আসার বিষয়টা বুঝতে না পেরে বাস ও সিএনজি টেক্সি রেললাইনের ওপর উঠে যায়। ডেমু ট্রেন আসতে দেখে ট্রাফিক সদস্য মনির গাড়িগুলোকে সরানোর চেষ্টা করছিলের। মুহূর্তে ট্রেনটি বাস ও সিএনজি টেক্সিকে ধাক্কা দিয়ে কিছুটা দূরে টেনে নিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে মনিরসহ দুইজন নিহত হন। অন্যজন হাসপাতালে মারা যান। আহত  ১০ জনের মধ্যে জমির উদ্দিন, শহীদুল ইসলাম, জয়নাল, জোবায়দা, আদনান ও মোহাম্মদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। 

ঝাউতলা এলাকার  দোকানদার আরিফ হোসেন বলেন, ডেমু ট্রেন যখন আসছিল তখন গেটম্যান এক পাশে লোহার বার ফেলে দেন। অন্যপাশ খোলা রাখেন। এসময় জিইসি মোড় থেকে এ কে খান গেটগামী গাড়িগুলো রেল লাইনের উপর চলে আসে। ট্রাফিক পুলিশ ওই গাড়িগুলো সরানোর চেষ্টা করলেও ট্রেন এসে ধাক্কা দিয়ে গাড়িগুলোকে সামনে টেনে নিয়ে যায়। এতে অনেক হতাহত হয়েছেন।

তবে সাইফ রহমান নামে আরেক স্থানীয় বলেন, ডেমু ট্রেন আসতে দেখে রেললাইনের অদূরেই দাঁড়িয়ে ছিল সিএনজি টেক্সিটি। দুর্ঘটনার কবলে পড়া বাসটি পেছন থেকে সজোরে টেক্সিকে ধাক্কা দেয়। এতে রেললাইনের উপরে চলে যায় টেক্সি। চালকও বাসটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে রেললাইনের উপরে চলে যায়। এতে করে বাস ও সিএনজি টেক্সি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।’

তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন রেলওয়ে পুলিশের 

ঝাউতলা রেল ক্রসিং এলাকায় ট্রেন, বাস এবং সিএনজি টেক্সির ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা তদন্ত করতে কমিটি গঠন করেছে রেলওয়ে পুলিশ চট্টগ্রাম অঞ্চল। কমিটির প্রধান করা হয় রেলওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল গফুরকে। কমিটির বাকি দুই সদস্য হলেন রেলওয়ে পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (সদর) এবং চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে। কমিটিকে তিন কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রেলওয়ে পুলিশ চট্টগ্রাম অঞ্চলের পুলিশ সুপার হাছান চৌধুরী বলেন, ‘ঘটনার পর পরিদর্শনে গিয়ে দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য পাচ্ছি। তাই দুর্ঘটনার মূল কারণ জানতে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’