• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

মালদ্বীপে বৈধতা পাচ্ছে ৫০ হাজার বাংলাদেশি

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২৫ ডিসেম্বর ২০২১  

মালদ্বীপে অবৈধভাবে অবস্থান করা বাংলাদেশিদের বৈধতা দেওয়ার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। খুব শিগগিরই বৈধতার প্রক্রিয়া নির্ধারণ ও কর্মী নিয়োগের জন্য দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের বিষয়ে একমত হয়েছে বাংলাদেশ ও মালদ্বীপ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম মোহাম্মদ সলিহ নিজেই এ আশ্বাস দিয়েছেন। সে হিসেবে মালদ্বীপে থাকা কমপক্ষে ৫০ হাজার বাংলাদেশি বৈধতা পেতে যাচ্ছেন বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট কূটনীতিক ও কর্মকর্তারা। পাশাপাশি ২০১৯ সাল থেকে বন্ধ শ্রমবাজারে বৈধ কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়াও শুরু করতে যাচ্ছে দুই দেশ। বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের শীর্ষ বৈঠক শেষে ঘোষিত ৩১ দফা যৌথ ইশতেহারেও বৈধতার বিষয়টি উঠে এসেছে। যৌথ ইশতেহারে বলা হয়- মালদ্বীপের আর্থসামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশি প্রবাসীদের বিশাল অবদানের প্রশংসা করে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট সলিহ বাংলাদেশের বড়সংখ্যক কর্মীর কাগজপত্রবিহীন থাকা ও তাদের বঞ্চনার শিকার হওয়ার বিষয়ে জোর দেন। পরে দুই শীর্ষ নেতা এসব কর্মীর বৈধতার গুরুত্বের বিষয়ে একমত হন। পাশাপাশি অভিবাসী কর্মীদের বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক দ্রুত স্বাক্ষরের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের সরকারপ্রধান। এ ইস্যুর সমাধান করতে প্রয়োজনীয় পদ্ধতি নির্ধারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোকে নির্দেশও দেওয়ার কথা উঠে এসেছে যৌথ ইশতেহারে। মালদ্বীপে বাংলাদেশ হাইকমিশনে সে দেশে বসবাসরত প্রবাসীদের সঙ্গে একটি মতবিনিময় সভায় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেছেন, ‘আমি আশা করি মালদ্বীপে যত অবৈধ বাংলাদেশি আছেন সবাই বৈধতা পাবেন। সমঝোতা স্মারক করা হচ্ছে। ফলে মালদ্বীপে বাংলাদেশ থেকে কর্মী আসা-যাওয়া করবে।’ এ ছাড়া মালদ্বীপ থেকে প্রবাসীরা যেন সহজে দেশে টাকা পাঠাতে পারেন সেজন্য একটি ব্যাংকের শাখা মালদ্বীপে খোলার ব্যবস্থা করবেন বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী। জানা যায়, মালদ্বীপে বাংলাদেশি প্রবাসী কর্মীর সংখ্যা ১ লাখের বেশি। পর্যটননির্ভর দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপের হোটেল, রিসোর্ট, রেস্তোরাঁসহ পর্যটনসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে সবচেয়ে বেশি কাজ করেন বাংলাদেশিরা। এ ছাড়া মাছ ধরা, নির্মাণ, কারখানায়ও কাজ করেন তারা। মালদ্বীপ সরকার থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে তার মধ্যে কমপক্ষে ৫০ হাজার প্রবাসীই অবৈধ হয়ে গেছেন। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়া স্থগিত করে অবৈধদের বৈধ করার একটি সুযোগ দিয়েছিল মালদ্বীপ সরকার। তখন ৪০ হাজার অবৈধ অবস্থানকারী বাংলাদেশি প্রবাসী কর্মী রেজিস্ট্রেশন করেন। ওই সময় রেজিস্ট্রেশন করলে ধরে দেশে পাঠিয়ে দিতে পারে এমন আশঙ্কায় আরও প্রায় ২০ হাজার বাংলাদেশি রেজিস্ট্রেশনই করেননি। বৈধতা পেতে সেবার মালদ্বীপের পক্ষ থেকে বেশ কিছু শর্র্তের কারণে আশঙ্কায় পড়েন বাংলাদেশিরা। এসব শর্তের মধ্যে ছিল নিয়মিত হতে চাইলে মালদ্বীপের নিয়োগকর্তার মাধ্যমে কাজে থাকতে হবে। একজন নিয়োগকারীর হাতে পাঁচজন নিয়োগের কোটা থাকে। এজন্য প্রথমে অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে। পরে যাচাই-বাছাই হবে। এ ছাড়া আগের নিয়োগকারীর কোনো অভিযোগ আছে কি না তা-ও যাচাই  করা হয়। কিন্তু অবৈধ অবস্থান করা বাংলাদেশি অনেকেরই নেই পাসপোর্ট। কারণ তারা ট্যুরিস্ট ভিসায় বিমানবন্দরে নামার পরই তাদের পাসপোর্ট রেখে দেয় দালালরা। তারা শুরুতেই অবৈধ হয়ে যান। আবার এক বছরের চুক্তির মেয়াদ শেষে অবৈধ হয়েছেন অনেকে। তারা অন্য কোম্পানিতে চলে গেছেন কিন্তু কাগজপত্র নবায়ন না করায় অবৈধ হয়েছেন। মালদ্বীপে অবৈধদের অবস্থানে তেমন কোনো সমস্যা না হলেও তারা বেতন-ভাতা পান অন্যদের তুলনায় অনেক কম। পাওয়া যায় না অন্য সুযোগ সুবিধাও।