• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

সাভার ভূমি অফিসে কর্মচারীর হাতে আলাদিনের চেরাগ

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১৭ জানুয়ারি ২০১৯  

সাভারে ভূমি অফিসের চতুর্থ শ্রেণীর এক কর্মচারীর আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটেছে দুর্নীতির অভিযোগে ওই ব্যক্তিকে বরখাস্ত করা হলেও থেমে নেই তার অপকর্ম সরকারি কাগজপত্র নয়ছয় করে এবং দালালীর টাকায় তিনি বনে গেছেন প্রায় ৫০ কোটি টাকার অগাধ বিত্ত বৈভবের মালিক  

আয়ের সঙ্গে সঙ্গতি বিহীন সম্পদ অর্জনকারী এই ব্যক্তির নাম দীন ইসলাম ভূঁইয়া তিনি একসময়ে আশুলিয়া ভূমি অফিসে এমএলএসএস (চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী) পদে চাকুরী করতেন দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে তাকে ধামরাই ভূমি অফিসে শাস্তিমূলক বদলি করা হলে দুর্নীতির অভিযোগে সাসপেন্ড (সাময়িক বরখাস্ত) হন গত তিন বছর ধরে তিনি সাসপেন্ড থাকলেও আশুলিয়া ভূমি অফিসের সামনে নিজে একটি অফিস খুলে সেখানে নামজারী, খাজনা, খারিজ ও পর্চার কাজের দালালি করে আসছেন

সাভার পৌর এলাকার গেন্ডা মহল্লার পূর্ব ভবানীপুরে তার রয়েছে বহুতল চারটি ভবন সারি সারি এসব ভবনের মধ্যে বি ৮/৪ গেন্ডা, পূর্ব ভবানীপুর হোল্ডিংয়ের চারতলা ভবনের (১০ তলা ফাউন্ডেশন) দোতলায় তিনি থাকেন পরিবার নিয়ে একই এলাকার বি ৮/১, বি ৮/২, বি ৫/১৯ (গেন্ডা, পূর্ব ভবানীপুর) হোল্ডিংয়ের বাড়িগুলো তার ভাড়া দেয়া এরমধ্যে প্রশাসন ও এলাকাবাসীর চোখে ধুলো দিত ধূর্ত দীন ইসলাম একটি বাড়ির জন্য ব্যাংক থেকে ঋন নিয়েছেন বলে চাউর রয়েছে

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর থানার গড়নগর গ্রামের রেনু ভূঁইয়ার পুত্র দীন ইসলাম ভূঁইয়া প্রায় দেড়যুগ আগে কাজের খোঁজে সাভারে আসেন এক সময়ে তার নুন আনতে পাত্তা ফুরালেও সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাই ভূমি অফিসে নয়-ছয় করে তার নাটকীয় উত্থান ঘটে

সেই সূত্রে মোটা অঙ্কের টাকায় এলএমএস পদে চাকুরী বাগিয়ে নিয়ে ভূমি অফিসে দুর্নীতি ও অনিয়মের শিকড় গড়েন এরপর আর তাকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি যেন আলাদীনের চেরাগ হাতে পাওয়ার মতো অবস্থা দাঁড়িয়েছে তার অল্প কয়েক বছরের ব্যবধানে শুধু বেড়েছে তার সম্পদ ও নগদ টাকা

এখন সাভার পৌর এলাকার গেন্ডা বাসস্ট্যান্ডের অদূরে চারটি বহুতল ভবন ছাড়াও টান গেন্ডা ও নামা গেন্ডায় রয়েছে আরো ৫টি প্লট কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে অল্পদিনের ব্যবধানে তার জমি ও মার্কেট দেখে ‘থ’ বনে গেছেন স্থানীয়রাও সাভার ও বাজিতপুরের একাধিক ব্যাংকে তার নিজের, স্ত্রী, তিন কন্যা ও এক পুত্রের নামে রয়েছে ফিক্সড ডিপোজিটসহ কয়েক কোটি টাকার হিসাব রয়েছে কয়েক লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র বাজিতপুরে প্রায় ৩৪ শতাংশ জমির উপর তার পাকা-আধাপাকা মার্কেটসহ কয়েক বিঘা জমি রয়েছে ফসলী জমির পরিমাণ প্রায় ৪০ বিঘা

তার একমাত্র পুত্র প্লাবন একটি হত্যা মামলার অন্যতম আসামি হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে ধরতে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না মামলার তদন্তকারী সংস্থা ও তদন্ত  কর্মকর্তা বদল হলেও তাদের ভূমিকা রহস্যজনকই থেকে যাচ্ছে স্বল্প শিক্ষিত দীন ইসলামের সম্পদের পাহাড় দেখে স্থানীয়দের সন্দেহ হলে নানাভাবে একাধিকবার দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)সহ বিভিন্ন দপ্তরকে জানালেও তিনি আছেন বহালে বৈধ কোনো আয়ের উৎস্য ছাড়া চোখ ছানাবড়া করার মতো সম্পদের মালিক দীন ইসলাম রয়েছেন বহাল তবিয়তে