• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

গর্তে ভরা সড়ক, দুর্ভোগ সীমাহীন

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২২ জানুয়ারি ২০২২  

দেশের উত্তর-পশ্চিম জনপদের গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়ক। এ সড়ক দিয়ে রাজধানী ঢাকায় দিনে কয়েক লাখ যানবাহন যাতায়াত করে।
তবে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের দেখভালের দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষের অবহেলার যেনো শেষ নেই।

অনেক দিনের দুর্ভোগের এই সড়কে দুর্ভোগ আর দ্বিগুণ করতেই মনে হয় সড়কটির দায়িত্ব নিয়েছে আশুলিয়ায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। গত দুই মাস থেকে দায়িত্ব নেওয়ার পরই আরও করুন অবস্থা হয়েছে এই সড়কের। যেখানে সেখানে যানজটসহ সড়কে ছোট-বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হচ্ছে। শুধু তাই নয় পথচারীদের চলাচলের জন্য ফুটপাতও পানির ড্রেনেজ ব্যবস্থার জন্য কেটে রাখা হয়েছে মাসের পর মাস ধরে৷

জানা গেছে, ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজের পাশাপাশি সড়কটিতে যানবাহন চলাচলে সম্পূর্ণ ঠিক ঠাক রাখারও কাজ করছেন এক্সপ্রেসওয়ে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সড়কটির সংস্করণ কাজ নিম্নমানের সামগ্রী ও রাবিশ (ব্যবহৃত অযোগ্য ইটের গুঁড়া) দিয়ে করায় সড়কের অবস্থা আরও নাজেহাল হয়ে পরছে।

রোববার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড-ইপিজেড সড়কের জিরাবো, নরশিংহপুর, জামগড়া, ইউনিক এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে রাস্তার এমন দুর্বিষহ অবস্থা।

আরও দেখা গেছে, পিচঢালা ও কার্পেটিং করা এই সড়কে বর্ষকালে বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি পানি জমে গর্ত হয়েছে। সেই গর্তগুলো রাবিশ দিয়ে সংস্করণ করা হয়েছে৷ এ কারণে সংস্করণ করা নিম্নমানের ইট গাড়ির চাকার চাপে প্রতিনিয়ত উঠে যাচ্ছে অথবা ভেঙে যাচ্ছে। এতে সড়কে চলাচলরত যানবাহনের যেমন ক্ষতি হচ্ছে তেমন ছোটো থেকে বড় দুর্ঘটনাও ঘটছে বিভিন্ন সময়। শুধু তাই নয় রাবিশ থেকে তৈরি হয় ধুলো-ময়লা। প্রায়ই ধুলা উড়ে অন্ধকার হয়ে যায় এই সড়ক। এদিকে সড়কের পাশে পথচারীদের চলাচলের জন্য ফুটপাত থাকার কথা থাকলেও কারখানার বর্জ্য পানি থাকায় চলাচল করতে পারে না। এতে ওই এলাকায় পোশাক কারখানার শ্রমিকদের কারখানায় যাতায়াতের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়।  

প্রতিদিন এই সড়ক হয়ে মোটরসাইকেল যোগে জিরাবো পোশাক কারখানায় যায় মাহবুবুল আলম রিপন।

তিনি  বলেন, এই সড়ক নিয়ে কিছু বলার নেই। এই সড়কের অবস্থা সব সময়ই খারাপ থাকে। বিভিন্ন স্থানে ১ থেকে ৩ ফুট পরপর অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত রয়েছে। সড়কের দুই পাশে ফুটপাত এখন খোলা ড্রেন হয়েছে ফলে একটু বৃষ্টি হলেই পানি রাস্তায় জমে যায়।

ইউনিক এলাকায় সড়কের পাশে চায়ের দোকানি জসিম বলেন, প্রায় ৭ বছর থেকে দেখছি রাস্তার এই অবস্থা। শুনেছি এই রাস্তা দিয়ে উড়াল সড়ক হবে। কিন্তু মানুষ এখন চলাচল করতে পারে না। প্রতিদিনই কোনো না কোনা যানবাহনের চাকা গর্তে পড়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ঢাকায় দ্বিতীয় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হিসেবে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ২০২৬ সালের জুনে চালু হবে। এই ২৪ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ে হযরত শাহজাহাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে আবদুল্লাহপুর, আশুলিয়া, বাইপাইল ও নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ডিইপিজেড) সঙ্গে সংযুক্ত করবে। চার লেনের সড়কের পাশাপাশি এক্সপ্রেসওয়েরও কাজ চলবে।

সড়কটির দায়িত্বে থাকা প্রজেক্ট ম্যানেজার সাহাবুদ্দিন বলেন, আমরা রাস্তাটি খারাপ অবস্থায় পেয়েছি। এই রাস্তাটি চার লেনের হবে। কিছুদিন পরে এক্সপ্রেসওয়ের পিলার করতে হবে রাস্তার মাঝখানে। এর আগে রাস্তার দু’পাশের সড়ক ঠিক করা হবে যেনো যানবাহন চলাচল করতে পারে।

আর রাবিশ দিয়ে সড়ক সংস্করণের ব্যপারে তিনি বলেন, রাবিশ দিয়ে কাজ করা হচ্ছে টেমপরারি (সাময়িকভাবে)। আমরা একদম ফ্রেশ রাস্তা করবো। এবং ফ্রেশভাবে রিপিয়ার করবো। ঠিকাদার দিয়ে জোর করে অনুমদিতোভাবে রিপিয়ার করানো হচ্ছে। সড়ক বা এক্সপ্রেসওয়ের মেইন কাজ এখনও শুরু করতে পারিনি।

পরিপূর্ণভাবে কাজ শুরু হবে কবে থেকে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, রাস্তাটি সড়ক ও জনপথ এর কাছ থেকে কিছু দিন আগেই নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে রাস্তাটির সয়েল টেস্ট করা হয়েছে। মোবিলাইজেশন এডভান্স দেওয়ার পর কমেন্সমেন্ট ডেট শুরু হবে। তবে কিছু আইনগত ব্যপারের কারণে আমরা এখনও মোবিলাইজেশন দিতে পারিনি। এখন আমরা তাদেরকে দিয়ে রাস্তা রিপিয়ার করাচ্ছি যেনো রাস্তা আগের থেকে খারাপ না হয় যায়।

রাস্তায় দুই কিলোমিটার অংশের পানি জমার বিষয়ে তিনি বলেন, রাস্তাটির দুই-আড়াই কিলোমিটার পানি জমে। দ্রুত ড্রেনের কাজ করার জন্য বলা হয়েছে। রাস্তার দ’পাশেই বড় ড্রেন হবে। আর ড্রেনের ওপরে ফুটপাত বানানো হবে।