• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

নাব্য সংকটে বন্দরে ভিড়তে পারছে না জাহাজ

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২২ জানুয়ারি ২০২২  

পদ্মা-যমুনা নদীতে নাব্য সংকটের কারণে সরাসরি বাঘাবাড়ি ও নগরবাড়িতে ভিড়তে পারছে না সার ও তেলবোঝাই কার্গো জাহাজ। ফলে চট্রগ্রাম বন্দর থেকে ছেড়ে আসা জাহাজগুলো শিবালয় উপজেলার অন্বয়পুর এলাকায় নোঙর করে আছে।

পরে ওই সব কার্গোতে থাকা পণ্য অর্ধেক কমিয়ে তারা নগরবাড়ি, পাবনা ও বাঘাবাড়িতে যাচ্ছে। এতে মোটা অঙ্কের টাকা ব্যয় হচ্ছে পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের। সেই সঙ্গে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে জাহাজ চালক ও ব্যবসায়ীদের। 


জানা যায়, সরকারিভাবে বন্দরনগরী চট্টগাম, খুলনা ও মোংলা থেকে কার্গো জাহাজের মাধ্যমে সার, সিমেন্ট, চিনি ও জ্বালানি তেল আসছে রাঘাবাড়ি, নগরবাড়ি ও পাবনাসহ উত্তরাঞ্চলের মানুষের জন্য। কিন্তু নাব্য সংকটের কারণে মানিকগঞ্জের শিবালয়ের অন্বয়পুর এলাকায় নোঙর করছেন জাহাজ চালক। সপ্তাহখানেক অপেক্ষার পর সকাল-সন্ধ্যা কাজ করে অর্ধেক মাল আনলোড করে যেতে হচ্ছে গন্তব্যে।

যমুনার অন্বয়পুরে নোঙর করে থাকা মা-বাবার দোয়া নামের কার্গো জাহাজের চালক ইয়ামিন শেখ বলেন, চট্টগ্রাম থেকে সার নিয়া শিবালয়ে পৌঁছতে ৫ দিন লেগেছে। নাব্য সংকট থাকায় পণ্যবাহী জাহাজগুলো ডুবোচরে আটকে যাচ্ছে। যার কারণে আরিচা ঘাটের কাছে নোঙর করছি। 

এমভি পূর্ণিমা কার্গো জাহাজের চালক নাঈম শেখ বলেন, মালবোঝাই সব জাহাজ এখানে নোঙর করেছে। এরপর সিরিয়াল অনুযায়ী পৃথক একটি মিনি কার্গো বা ট্রলারের মাধ্যমে অর্ধেকমাল কমানো হচ্ছে। বাকি মাল নিয়ে উত্তরাঞ্চলের দিকে রওনা দিতে হচ্ছে। অন্যথায় জাহাজ চরে আটকা পড়বে।  

একাধিক জাহাজ চালক বলেন, নাব্য সংকটের কারণে এ জায়গায় (শিবালয়ের অন্বয়পুর) জাহাজ নোঙর করে থাকি। আর বিআইডব্লিউটিএর লোকজন এসে মালামালের কাগজপত্র দেখেন। কাগজপত্র ঠিক থাকলেও প্রতিটি জাহাজ থেকে ১ হাজার করে টাকা দিতে হচ্ছে। না দিলে সমস্যা করে। এছাড়া চট্টগ্রাম থেকে আসতে তো বিভিন্ন জায়গা চাঁদা দিতেই হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম, মোংলা, খুলনা থেকে বাঘাবাড়ি, নগরবাড়ি ও উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার জন্য আসা সার, জ্বালানি তেলসহ বিভিন্ন মালবাহী কার্গো জাহাজ আসে। কিন্ত নদীতে জাহাজ চলাচলের জন্য যে পরিমাণ পানি থাকার প্রয়োজন তা না থাকায় আরিচা-পাটুরিয়ার বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ৭০টির মতো জাহাজ নোঙর করে আছে। প্রতিটি জাহাজে ১২শ থেকে ১৪শ টন মাল থাকে। কিন্তু নদীতে নাব্য কম থাকায় ওই সব জাহাজ তাদের গন্তব্যস্থলে যেতে পারে না।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) উপপরিচালক শাহ আলম  বলেন, বিষয়টি তাদের নজরে এসেছে। ড্রেজিং ইউনিট নদীর নাব্য রক্ষায় তাদের প্ল্যানিংমাফিক ড্রেজিং কাজ অব্যাহত রেখেছে।

বাংলাদেশ অভ্যান্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) আরিচা কার্যালয়ের ড্রেজিং বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান উদ্দিন আহম্মেদ জানান, নদীতে ১০ পুল গভীরতার জাহাজগুলো চলতে পারে কিন্তু পণ্যবাহী একটি কার্গো জাহাজের ডাফট (গভীরতা) ১৪-১৫ ফুট হবে।

কিন্তু কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত হচ্ছে- শুষ্ক মৌসুমে ৮ ফুট গভীরতার জাহাজগুলো চলতে পারবে। কিন্তু কার্গো মালিকরা বেশি মুনাফা লাভের আশায় সরকারের নির্ধারিত সীমারেখার অধিক মাল বহন করছেন- এজন্য মাল আনলোড করে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে।