• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

ফারুকের মৃত্যুবার্ষিকী পালন, দ্রুত বিচারের দাবি

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১৯ জানুয়ারি ২০১৯  

টাঙ্গাইলের আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়েছে এ উপলক্ষে শুক্রবার সকালে জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে দলীয় কার্যালয়ে দিনব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন করেন টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের পরে নিহত ফারুক আহমদের কবর জিয়ারত ও পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়

এ সময় টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক তানভীর হাসান ছোটমনি, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নাহার আহমেদ, পৌরসভার মেয়র এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জামিলুর রহমান মিরনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন এ ছাড়া দুপুরে গণভোজ এবং সন্ধ্যায় দলীয় কার্যালয়ে মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়

অপরদিকে এই হত্যাকাণ্ডের চার্জশীটভুক্ত অন্যতম আসামী সাবেক এমপি রানা আত্মসমর্পণ করলেও তার অপর তিন ভাই এখনো পলাতক রয়েছেন পুলিশ বলছে, বাকি আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যহত রয়েছে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ এমপি রানা ও তার তিনভাইকে জেলা আওয়ামী লীগের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে

এ ব্যাপারে ফারুক আহমেদের স্ত্রী নাহার আহমদ বলেন, ‘আমি দ্রুতই মামলার বিচারকাজ শেষ করার দাবি করছি এ ছাড়া এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত আসামীদের মধ্যে এখনো যারা গ্রেফতার হয়নি তাদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি করছি

জানা যায়, দীর্ঘ ২২ মাস পলাতক থাকার পর রানা গত ২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইলের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন আদালত জামিন না-মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বেশ কয়েক দফা উচ্চ আদালত ও নিন্ম-আদালতে আবেদন করেও জামিন পাননি তিনি

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তার কলেজপাড়া এলাকার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পর ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন ঘটনার তিনদিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমদ বাদি হয়ে টাঙ্গাইল মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন প্রথমে মামলাটি টাঙ্গাইল মডেল থানা পুলিশ তদন্ত করলেও পরবর্তীতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে এবং ২০১৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি রানা (তখন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের এমপি ছিলেন) ও তার তিনভাইসহ মোট ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে

তদন্ত চলাকালে ২০১৪ সালের ১১ আগস্ট সাবেক এমপি আমানুর রহমান খান রানার ঘনিষ্ঠ কর্মী আনিসুর রহমান রাজা গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে তিনদফায় মোট ১৫ দিন রিমান্ড শেষে ওই বছরের ২৭ আগস্ট টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহাদত হোসেনের নিকট স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন অপর আসামী মোহাম্মদ আলী গ্রেপ্তার হন একই বছরের ২৪ আগস্ট তিনি দশদিনের রিমান্ড শেষে ৫ সেপ্টেম্বর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শেখ নাজমুন নাহারের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন উভয় আসামীর জবানবন্দিতে ফারুক আহমদ হত্যাকাণ্ডে টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সাবেক এই এমপি আমানুর রহমান খান রানা ও তার ছোট ভাই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করলে হত্যাকাণ্ডে সাথে খান পরিবারের চার ভাইয়ের জড়িত থাকার কথা প্রথম প্রকাশ পায়

এ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনার সঙ্গে আমানুর রহমান খান রানার অপর ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার তদানিন্তন মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি ও টাঙ্গাইল জেলা বণিক সমিতির সভাপতি জাহিদুর রহমান খান কাকন যুক্ত বলে মোহাম্মদ আলী তার জবানবন্দিতে প্রকাশ করেন গত ২০১৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বর আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত বর্তমানে মামলার সাক্ষীগ্রহন চলছে

প্রসঙ্গত, টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসন থেকে রানাকে বাদ দিয়ে তার পিতা আতাউর রহমান খানকে মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ আতাউর রহমান খান দলের মনোনয়ন পেয়ে এবাবের একাদশ সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হিসেবে বিজয়ী হন