• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

ধান তুলতে দেখা দিয়েছে শ্রমিক সংকট

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১৩ মে ২০২২  

গাজীপুরে বোরো ধানের আবাদ ঘরে তুলতে শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে । শ্রমিকের তুলনায় চাষীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় শ্রমের মূল্যও প্রায় দ্বিগুণ। অনেকে বাধ্য হয়ে নিজের ধান পরিবারের লোকজন নিয়ে কাটছেন।

বাড়তি শ্রমমূল্য দিয়ে খেতের ধান কেটে বাড়িতে নিচ্ছেন কৃষকরা। এতে উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় লোকসান গুনতে হবে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। নাহিদ হাসান উচ্চমাধ্যমিকে পড়াশোনা করছেন। বলেন, জমির ধান কাটার শ্রমিক না পাওয়ায় আমার বাবা ও ভাই মিলে ধান কাটছি। এতে সময়ও বেশি লাগছে।

অনেকেই খোঁজাখুজি করে শ্রমিক পেয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা আফতাব উদ্দিন। তিন বিঘা জমির ধান কাটতে দুইদিন খোঁজ করে শ্রমিক পয়েছেন। বিঘা প্রতি ৬ হাজার টাকা করে শ্রমিক পেয়েছেন তিনি। ধান কাটা শ্রমিকের বাজার এখন বিঘা প্রতি ৭ হাজার টাকা।

চুক্তিতে জমি নিয়ে বোরো আবাদ করে করে বিপাকে পড়েছেন অনেকে। ১০ মণ ধান পেলে জমির মালিককে দিতে হয় চার মণ। এতে উৎপাদন খরচত তূলতে হিমশিম খাচ্ছেন কৃষকরা।

৭০ শতক জমিতে বোরো আবাদ করেছেন শ্রীপুরের সাহাব উদ্দিন। ৭ থেকে ৯’শ টাকা প্রতিদিন শ্রমিকের মজুরি। এরপরেও শ্রমিক পাচ্ছি না। বাধ্য হয়ে পরিবার পরিজন, ভাই-ভাতিজা নিয়ে প্রতিদিন একটু একটু করে ধান কাটছি।

কর্ণপুরের খালেদা আক্তার বলেন, কামলা (শ্রমিক) নিলে আমরা খেতে পারিনা। পেটতো বাঁচাতে হবে। সরকার ধান কাটা, রোপণের জন্য মেশিন দেয় কিন্তু আমরা এখনও এগুলো পাইনি। আমরা কী এসব পাবো না?

বিঘা প্রতি ১২ মণ বা ১৪ মণ ধান পাওয়া যায়। বর্গা করায় জমির মালিককে অর্ধেক দিতে হচ্ছে। ৬ বা ৭ মণ ধান পেলে খরচ বেশি হয়ে যায়। এখনও দিনমজুর পাওয়া যায় না। অনেক ছাত্র স্কুল কলেজ বাদ দিয়ে পরিবারের সঙ্গে ধান কাটছেন।

ধান কাটা শ্রমিক রমজান আলী জানান, ধান কাটার পুরো মৌসুম শুরু হয়েছে। ধান কাটার শ্রমিক যদি থাকে ১০০ কৃষক থাকে তিন হাজার। বাজারে সকল কিছুর মূল্য বেশি। আমরাও শ্রমের বেশি মূল্য না নিলে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে চলতে পারি না।

গাজীপুর শিল্প এলাকা হওয়ায় এখানে ধান কাটা শ্রমিকের সংকট রয়েছে। সরকারিভাবে সমন্বিত উপায়ে ধান কাটা যন্ত্রের ওপর ৫০ ভাগ ভর্তুকি দেওয়া উচিত।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এবার বোরো আবাদে জেলা সদর, কালিয়াকৈর, কালীগঞ্জ উপজেলায় আশপাশের নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ৫০০ হেক্টর জমির ফসল আগাম কাটতে হয়েছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এবার জেলায় সর্বমোট ১ হাজার ৭৪০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। ইতোমধ্যে অর্ধেকের বেশি ধান কেটে ফেলা হয়েছে।