• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

হাবিবের মোটরসাইকেল যেন ভ্রাম্যমাণ বাগান

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১৯ মে ২০২২  

ব্যতিক্রম উদ্যোগে গাছের প্রতি নিজের ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন রং মিস্ত্রি হাবিবুর রহমান। নিজের মোটরসাইকেলকে তিনি সাজিয়েছেন নানা প্রজাতির গাছ দিয়ে। দুই চাকার বাহনটি যেন হয়ে ওঠেছে ভ্রাম্যমাণ বাগান।

সড়কে চলা হাজারো গাড়ির ভিড়ে আলাদা করে নজর কাড়ে তার মোটরসাইকেলটি। কৌতুহলী মানুষ মোটরসাইকেলটি দেখতে ভিড় জমান, ছবি তোলেন।

হাবিবুরের গ্রামের বাড়ি রংপুরে। পরিবার নিয়ে বসবাস করেন ঢাকায়। পেশায় একজন রং মিস্ত্রি। পেশাগত কাজে মানিকগঞ্জে এলে তার মোটরসাইকেলটি নজরে আসে প্রতিবেদকের।


গাছ ও প্রকৃতিকে খুব ভালোবাসেন হাবিবুর। গ্রামের বাড়িতে বাগান করেছেন। শহরের বাসাতেও নানা প্রজাতির গাছ রয়েছে। কিন্তু এসব ছেড়ে তাকে জীবিকার তাগিতে ছুটে চলতে হয় দেশের নানা স্থানে। তাই সিদ্ধান্ত নেন তার একমাত্র বাহন সখের মোটরসাইকেলটিও তিনি সাজাবেন গাছ দিয়ে। শুরু হয় চেষ্টা। তিন মাসের চেষ্টার পর আসে সফলতা।

হাবিুবর রহমানের মোটরসাইকেলের চাকা, সিটকভার, তেলের ট্যাঙ্কি, পা দানি, নম্বর প্লেটের উপর-নিচে সবখানেই বিশেষ কায়দায় গাছ রেখেছেন। সামনে শোভা পাচ্ছে তাজা গোলাপ ফুল। কৃত্রিম ঘাসের পাশাপাশি জীবন্ত গাছ দিয়ে সাজিয়েছেন তার বাইক।


শুধু তাই নয়, হাবিবুরের পায়ের জুতাও কৃত্রিম সবুজ ঘাস দিয়ে সাজানো। মাথার হেলমেটে রং করেছেন জাতীয় পতাকার রঙে। হাবিবুরের মোটরসাইকেলের এই সাজসজ্জা দেখে মুগ্ধ মানুষ। মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বালিয়াখোরা বাজারে মোটরসাইকেলটি থামলে দেখতে ভিড় করেন অনেকে।

স্থানীয় সংবাদকর্মী শরিফুল ইসলামসহ কয়েকজন জানান, মোটরসাইকেলে এমন বাগান তারা প্রথম দেখলেন। অনেক সুন্দর করে গাছ দিয়ে বাইকটি সাজানো হয়েছে। গাছ ও প্রকৃতিকে সঙ্গে নিয়েই তিনি পথ চলছেন। এই উদ্যোগ সমাজের জন্য একটি ম্যাসেজ বহন করে।


বৃক্ষপ্রেমী হাবিবুর রহমান জানান, সবুজ প্রকৃতিকে প্রায় সবাই ভালোবাসেন। তারপরও অসচেতনভাবে বৃক্ষনিধণ হচ্ছে সারাদেশে। এটা সত্যিই কষ্টের। তার এই ভিন্ন রকম আয়োজনের উদ্দেশ্য গাছের প্রতি নিজের ভালোবাসা প্রকাশ আর গাছ ও প্রকৃতির প্রতি মানুষকে আরো বেশি আকৃষ্ট করা। যাতে তারা বেশি বেশি গাছ লাগান এবং গাছের পরিচর্যা করেন।

তিনি আরও জানান, সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে যখন মানুষ তার মোটরসাইকেলে গাছ পালা দেখে তাকিয়ে থাকেন। কোথাও থামলে লোকজন ভিড় জমায়, নানা প্রশ্ন করেন এবং ছবি তোলেন।

হবিবুর রহমানের চাওয়া, সবাই গাছকে ভালোবাসুক, সবুজে বাঁচুক। কারণ সবুজই প্রাণের স্পন্দন।