• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

সেই কলেজছাত্রী নিরাপত্তাহীনতায়, হুমকি-হয়রানির অভিযোগ

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২৬ মে ২০২২  

টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনজুর হোসেনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগকারী কলেজছাত্রী তাঁর ওপর যেকোনো সময় হামলার আশঙ্কা করছেন। মনজুর হোসেন এলাকার মাদকাসক্তদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ওই ছাত্রীকে মানসিকভাবে হয়রানি করছেন ও হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

বুধবার দুপুরে টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ওই কলেজছাত্রী এ অভিযোগ করেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, মনজুর হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়ার পর তিনি নিজে বাদী হয়ে তাঁর (কলেজছাত্রীর) নামে পর্নোগ্রাফি অ্যাক্টে ঢাকায় একটি মামলা করেন।


মামলাটি সিআইডি তদন্ত করছে। সেই মামলায় দ্বিতীয় সাক্ষী করা হয়েছে কলেজছাত্রীর গ্রামের এক ব্যক্তিকে। যাঁর বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় মাদক, চুরি, ডাকাতি, হত্যা ও ধর্ষণের মামলা আছে।  
তিনি আরো বলেন, মনজুর হোসেন তাঁর প্রভাব খাটিয়ে দিনের পর দিন তাঁকে ছবি এডিট করে ভুয়া ভিডিও এলাকায় ছড়িয়ে দিচ্ছেন। তা ছাড়া নামসর্বস্ব কিছু অনলাইন পত্রিকায় ভুয়া সংবাদ পরিবেশন করিয়ে সামাজিকভাবে হেয় করে যাচ্ছেন। এ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে এবং তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়রানিমূলক মামলার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়ে ওই কলেজছাত্রী প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ সকলের মানবিক দৃষ্টি আশা করেছেন।

অভিযুক্ত বাসাইল উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনজুর হোসেন মুঠোফোনে বলেন, 'মেয়েটির বিষয়ে আমি কারো সঙ্গে কোনো কথা বলিনি। ওই ছাত্রী আমার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করতে ব্যর্থ হয়ে এসব অভিযোগ করছেন। '

প্রসঙ্গত, গত বছরের ২০ অক্টোবর ওই কলেজছাত্রী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগে দেন। অভিযোগে বলা হয়, বাসাইলের ইউএনও মনজুর হোসেনের সঙ্গে তাঁর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয়। বিয়ের কথা বলে ইউএনও তাঁর সরকারি বাসভবনে ডেকে শারীরিক সম্পর্ক করেন। পারিবারিকভাবে তাঁর (ছাত্রীর) বিয়ে অন্য জায়গায় ঠিক হলে তিনি বিয়ের জন্য ইউএনওকে বলতে থাকেন। ইউএনও বিয়ের কথা বলে তাঁকে বাড়ি থেকে চলে আসতে বলেন এবং টাঙ্গাইল শহরের পাওয়ার হাউজের কাছে একটি বাসা ভাড়া নেন। সেই বাসায় তাঁরা দুই মাস একত্রে বসবাস করেন। গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে তাঁকে (ছাত্রী) নিয়ে ইউএনও ভারতের কলকাতায় যান। সেখান থেকে উড়োজাহাজে করে হায়দরাবাদে গিয়ে দুজন চিকিৎসা নেন। সেখানে অবস্থানকালে পাসপোর্ট দেখে জানতে পারেন মনজুর হোসেন বিবাহিত। ভারতে ১২ দিন অবস্থানের পর ৫ অক্টোবর তাঁরা ফিরে আসেন। তার পর থেকে ইউএনও তাঁকে এড়িয়ে চলতে থাকেন।

কলেজছাত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন শৃঙ্খলা অধিশাখা থেকে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসককে এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। জেলা প্রশাসনের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সোহানা নাসরিন তদন্ত করেন। তদন্ত করে মনজুর হোসেনের ওই কলেজছাত্রীর অনৈতিক সম্পর্কের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনটি জেলা প্রশাসক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়ে দেন।

জানা যায়, গত বছরের নভেম্বর মাসে ইউএনও মো. মনজুর হোসেন বাসাইল থেকে ঢাকায় বদলি হন। এরপর চলতি বছরের ৪ মার্চ ইউএনও হিসেবে তাঁকে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলায় পদায়ন করা হয়। কলেজছাত্রীর অভিযোগের বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশের পর তাঁকে প্রত্যাহার করা হয়।