• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

উৎফুল্ল মানিকগঞ্জের আলুচাষিরা

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২৭ জানুয়ারি ২০২৩  

ঘিওর উপজেলাসহ সমগ্র মানিকগঞ্জ জেলায় চলতি বছর আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। ভালো দাম পেয়ে খুশি কৃষকরা। গত দুই বছর অনেকটা ক্রেতাশূন্য ছিল এখানকার আলুর পাইকারি বাজার। কিন্তু এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। ক্রেতারা ভিড় করছেন ক্ষেত থেকে আলু কেনার জন্য। আর গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকরা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ জমিতে আলুর আবাদ করেছেন।
হাটবাজারগুলোতে নতুন আলু বিক্রির শুরুতেই বাড়তি দাম পেয়ে কৃষকদের মধ্যে উৎসাহ দেখা দিয়েছে। স্থানীয় কৃষকদের আলু বেচাকেনায় গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। ঘিওর, বালিয়াখোড়া, নালী, বানিয়াজুরী, সিংজুরী, পয়লা ও বড়টিয়া ইউনিয়নের হাটবাজারে প্রচুর আলু কেনাবেচা হচ্ছে। এসব হাটবাজার থেকে ঢাকার কাওরান বাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আলু পাঠানো হয়।
ঘিওর উপজেলার রাধাকান্তপুর গ্রামের কৃষক মুন্নাফ মোল্লা বলেন, তিন বিঘা জমিতে আলু রোপণসহ সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ৮০ হাজার টাকার মতো। আলু উৎপাদন হয়েছে প্রায় ২২৫ মণ। বিক্রি করেছি এক লাখ ৩০ হাজার টাকায়। ডায়মন্ড জাতের আলুর আবাদ ও ফলন তুলনামূলক বেশি হয় বলেও জানান তিনি।
পয়লা এলাকার কৃষক মনির হোসেন বলেন, এক লাখ ৮০ হাজার টাকা খরচ করে ৮ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। ক্ষেত থেকেই তিন লাখ টাকার আলু বিক্রি হয়েছে।
প্রান্তিক কৃষক বীর সিংজুরি গ্রামের লাল মিয়ার সাথে আলাপ করে জানা যায়, এবার তিনি ১০ বিঘা জমিতে আলু আবাদ করেছেন। সব খরচ মিলিয়ে প্রতি কেজি আলুর উৎপাদন খরচ পড়েছে ৮ থেকে ১০ টাকা। স্থানীয় হাটবাজারগুলোতে খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১৮ থেকে ২২ টাকা কেজি দরে। ক্ষেত থেকে পাইকারি ৬০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে।
জেলা কৃষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বলেন, মানিকগঞ্জের জমি আলু চাষের উপযোগী, উৎপাদন খরচও কম। তাই কৃষকদের পাশাপাশি শিক্ষিত বেকার যুবকরাও অন্যের জমি লিজ নিয়ে আলু চাষ করেছেন। আলু আবাদে সার, বীজ, কীটনাশক, সেচ ও শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধির ফলে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। কিন্তু এ বছর ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকরা বিগত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে।
মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড পাইকারি কাঁচাবাজারের আড়তদার আলী হোসেন জানান, গত এক সপ্তাহে এ আড়তে আলু পাইকারি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৮ থেকে ২২ টাকা দরে। প্রতিদিন এ আড়ত থেকে ১০-১২ টন আলু যায় ঢাকার কারওয়ান বাজার ও বাইপাইল পাইকারি আড়তে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কৃষি কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, চলতি বছর কৃষকরা ডায়মন্ড, কার্ডিনাল, মূলটা, গ্যানোলা জাতের আলু রোপণ করেছেন। আলুর বাম্পার ফলন এবং বিক্রির শুরুতেই বাড়তি দাম পেয়ে কৃষকরা খুশি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা চিত্রা সরকার বলেন, উপজেলায় ৩৮০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। আবাদ হয়েছে ৫৮৫ হেক্টর জমিতে। সাতটি ইউনিয়নের মধ্যে বেশি আবাদ হয়েছে পয়লা ও বালিয়াখোড়া ইউনিয়নে। আমাদের মাঠপর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত কৃষকদের খোঁজখবর ও কৃষি পরামর্শ দিয়ে আসছেন।