• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাদক-সন্ত্রাস ঠেকাতে যৌথ অভিযান

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২৩ মে ২০২৩  

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সন্ত্রাসী কার্যক্রম ঠেকাতে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হবে। এ অভিযানে প্রয়োজনে সেনাবাহিনীও থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।মঙ্গলবার (২৩ মে) সচিবালয়ে রোহিঙ্গা সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও আইনশৃঙ্খলা সম্পর্কিত জাতীয় কমিটির সভায় অংশগ্রহণ শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

বলপ্রয়োগে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের (রোহিঙ্গা) সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও আইনশৃঙ্খলা সম্পর্কিত জাতীয় কমিটির সভার সিদ্ধান্ত তুলে ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক‌্যাম্পগুলোতে রক্তপাত হচ্ছে। তাদের অপতৎপরতা বাড়ছে। সেজন‌্য সভায় এভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা যেন ক‌্যাম্পের অভ‌্যন্তরে কোনো ধরনের অপতৎপরতা চালাতে না পারে, সেই লক্ষ‌্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল, চেকপোস্ট ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হবে।’

তিনি বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট তথ‌্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা হবে। আরসা ও আরাকান আর্মির কেউ যেন রোহিঙ্গা ক‌্যাম্পে না ঢুকতে পারে, সেজন‌্য আমরা ব‌্যবস্থা গ্রহণ করবো। সেজন‌্য প্রয়োজন মোতাবেক সেনাবাহিনীসহ যৌথ অভিযান হতে পারে।’

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক‌্যাম্পের মধ‌্যে মাদক ও অস্ত্র উদ্ধারে ব‌্যাপক অভিযান চলবে। প্রয়োজনে যৌথ অভিযান চলবে। ক‌্যাম্প থেকে যেন কোনো রোহিঙ্গা বের হয়ে না আসতে পারেন, সেজন‌্য কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছি, ওয়াচ টাওয়ার হয়েছে, সেখানে নিয়মিত টহলের ব‌্যবস্থাও আছে। সেগুলো আরও জোরদার করা হবে। যাতে তারা বাইরে না আসতে পারেন। যৌথ টহলসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সবসময় তৎপর থাকবে।’

যৌথ অভিযানে সেনাবাহিনী থাকবে কি না, জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রয়োজনে আমরা সেনাবাহিনীকে ডাকবো। আমরা কোনোক্রমেই মাদকের ব‌্যবসা হতে দেবো না। কোনোক্রমেই আর সেখানে যাতে রক্তপাত না হয়, সেই ব‌্যবস্থা আমরা করবো।’

কবে থেকে যৌথ অভিযান শুরু হতে পারে, এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আজকেই নির্দেশনা যাবে। এখন শুরু করবে, যেগুলো যেগুলো করার সেগুলো এখন থেকেই শুরু করবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সীমান্ত এলাকায় বিজিবিকে আরও সতর্ক অবস্থায় রাখার নির্দেশনা দেবো। মিয়ানমার বর্ডারে বিজিবিকে আরও শাক্তিশালী করা হবে, যাতে নতুন করে মিয়ানমারের নাগরিকরা বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে।’

‘রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর ব‌্যাপারে কূটনৈতিক তৎপরতা যেটা চলছে, সেটাকে আরও বেগবান করার জন‌্য আলোচনা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ‌্য, জন্ম নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এখানে আলোচনা হয়েছে’ যুক্ত করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘সীমান্তের নাফ নদীতে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের জেলেরা মাছ ধরেন। সেজন্য বাংলাদেশের জেলেদের নৌকাকে রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনার জন‌্য আগের মিটিংয়ে বলা হয়েছে, রেজিস্ট্রেশন করার প্রক্রিয়া অব‌্যাহত রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমরা মাদক আইসের একটা বড় চালান ধরেছি। একটি চালান রোহিঙ্গা ক‌্যাম্পের মধ‌্যেই পেয়েছি। সেজন‌্য আমরা ক‌্যাম্পে ক‌্যাম্পে সার্চ করবো। মাদক বন্ধ করাই আমাদের মূল লক্ষ‌্য।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত রয়েছে, সেটা এখনো সচল। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেটা নিয়ে কাজ করছে। আমরা আশা করি (প্রত‌্যাবাসন) এটা চলতে থাকবে।’ কিছু সংখ‌্যাক রোহিঙ্গা ফিরে যাওয়ার বিষয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এটা কেটে যাবে। আমরা তাদের কত দীর্ঘ সময় রাখবো? আমরা তো চাচ্ছি, তারা তাদের দেশে ফিরে যাক।’