• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

১৭ চিকিৎসকের মধ্যে কর্মস্থলে ৬ জন!

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৩০ জানুয়ারি ২০১৯  

মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাগজে কলমে ১৭ জন চিকিৎসক থাকলেও বাস্তবে মাত্র জন চিকিসক দিয়ে চলছে স্বাস্থ্যসেবা বাকি পদের মধ্যে আবাসিক মেডিকেল অফিসারের (আরএমও) পদ শুন্য এবং জন চিকিসক এখানে না এসে মানিকগঞ্জ কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজে সংযুক্তি দেখিয়ে উপস্থিত হচ্ছে না 

বর্তমানে কর্মরত ৬ জন চিকিৎসকের মধ্যে আবার দুই জন প্রশিক্ষণে রয়েছেন বাকি চার জন ডাক্তার হাসপাতালের আবাসিক বাসভবনে বসবাস না করায় প্রতিদিন ঢাকা মানিকগঞ্জ সদর থেকে আসার কারণে প্রতিনিয়তই তিন-চার ঘণ্টা বিলম্বে উপস্থিত হচ্ছেন

আবার জেলার কয়েকটি প্যারা মেডিকেলের ছাত্র-ছাত্রীরা ইন্টার্নির নামে বহির্বিভাগে রোগী  দেখছেন সাধারণ রোগীরা কিছু না বুঝে তাদের এমবিবিএস ডা. মনে করে চিকিৎসা নিচ্ছে এতে সাধারণ রোগীরা সঠিক চিকিসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং তাদের সাথে প্রতারণা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের এ ছাড়া বেশিরভাগ চিকিৎসক কর্মক্ষেত্রে উপস্থিত না থাকার কারণে ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীদের রাত-দিনে একবার দেখতে যাচ্ছে ডাক্তার আবার নার্স দিয়ে চিকিসা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান রোগীরা

জানা গেছে, জেলার সাতটি উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মধ্যে শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি বেশি গুরুত্বপুর্ণ কারণ এটি ঢাকা-আরিচা মহসড়কের পাশে অবস্থিত হওয়ায় প্রায় প্রতিদিনই সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হওয়া রোগী হাসপাতালে আসে পাশাপাশি উপজেলার যমুনার চরাঞ্চলের দ্ররিদ্র  জনগোষ্ঠীর চিকিৎসার একমাত্র ভরসা এই হাসপাতালটি

মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে হাসপাতালে উপস্থিত হলে দেখা যায়, শুধুমাত্র জরুরি বিভাগে একজন মেডিকেল অফিসার ছাড়া সবাই অনুপস্থিত চিকিৎকের রুমে তালা ঝুলছে বহির্বিভাগে  সাধারণ রোগীদের ভিড়

পরে ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, রাত দিনে একবার ডাক্তার আসে তাও আবার প্রতি রোগীদের সাথে এক-দুই মিনিট কথা বলে চলে যান সমস্যার কথা গুরুত্ব দিয়ে শোনেন না

সকাল ১০ টার দিকে বহির্বিভাগে মেডিসিন, গাইনি এনডিসি কর্নার, মেডিকেল অফিসার  কনসাল্টেটসার্জারি বিভাগ, গাইনি বিভাগে চিকিৎসকের রুম ফাঁকা পরে কনসাল্ট মেডিসিন ডাক্তারের রুমে কয়েক জন প্যারা মেডিকেলের ছাত্রী ইন্টার্নির নামে রোগী দেখছে তাদের  পরিচয় জানতে চাইলে ইন্টার্নির তিন ছাত্রী পালিয়ে যায় বেলা ১০ টার মধ্যে শুধুমাত্র স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা উপস্থিত হন পরে এক এক করে হাসপাতালে চিকিৎসকরা উপস্থিত হন

 

বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা মুক্তা রানী দাশ জানান, 'আমি সকাল ৮টা থেকে এসে ডাক্তারের জন্য অপেক্ষা করছি এখন বেলা ১১টা বাজে পায়ে ব্যাথায় অসহ্য লাগতেছে' তার মতো এ সময় প্রায় শতাধিক রোগী চিকিৎসকের অপেক্ষায় বসে থাকতে দেখা যায়

দেরিতে হাসপাতালে আসার কারণ জানতে চাইলে মেডিকেল অফিসার ডা. শাহ আলমঙ্গীর  বলেন, ঢাকা থেকে আসতে রাস্তায় যানজটের কারণে দেরি হয়েছে হাসপাতালের আবাসিক ভবনের কেন থাকেন না জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, এখানে থাকার মতো পরিবেশ নাই ভবনগুলো পুরোনো হওয়ার কারণে

আরেক মেডিকেল অফিসার (গাইনি) শিরিন শবনাম বলেন, আমি এখানকার কোয়াটার কেমন বলতে পারবো না আমি মানিকগঞ্জ সদর থেকে এখানে আসি

এ বিষয়ে শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আরশাদ উল্লাহ বলেন, মেডিকেল অফিসাররা যদি অন্যত্র সংযুক্তি দেখিয়ে না আসলে আমার কিছুই করার থাকে না চিকিৎসক সময় মতো না আসার কারণ দূর থেকে আসে হাসপাতালের আবাসিক ভবন একটু পুরানো তাই চিকিকরা থাকতে চান না ইন্টার্নি করা শিক্ষার্থীরা রোগী দেখার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন