• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

তাঁবু ছেড়ে ঘরে কুলসুম

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১৯ নভেম্বর ২০১৮  

খোলা আকাশের নিচে পলিথিনের তাঁবুতে বসবাস করেছিলেন গৃহহীন বৃদ্ধা   কুলসুম।  বিষয়টি জাতীয় অনলাইন পোর্টালে প্রকাশ হলে টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার দেউলী ইউনিয়নের কড়াইল-স্বল্পবড়টিয়া গ্রামের সবার নজরে আসে।
অবশেষে ঘর পান ৬২ বছর বয়সী বৃদ্ধা কুলসুম। অনেকেই মমতার হাত প্রসারিত করে দেন কুলসুমের প্রতি। তাঁবু ছেড়ে আসেন টিনের ঘরে। এই ঘরকে ‘মানবতার ঘর’ নামে আখ্যা দেন স্থানীয়রা। গত সোমবার ঘরটি বুঝিয়ে দেয়া হয় তাকে।
এক বছর হলো বিধবা হয়েছেন কুলসুম,  দিনমজুর স্বামী সোনা মিয়ার মৃত্যুতে পরিবারে নেমে আসে অসচ্ছলতা। কুলসুমের জোড়াতালির ছোট একটি ঘর থাকলেও অভাবের সংসারে সেটি বিক্রি করে দেন।
পরে মা-ছেলে ও নাতি সবাই চলে যান টাঙ্গাইল সদরের কাকুয়া চরে ছেলে মোশারফের শ্বশুরবাড়িতে। সেখানে পুত্রবধূ আছমা পরিবারের একমাত্র সম্বল দুটি গরু রেখে মা-ছেলেকে তাড়িয়ে দেন। নাতনি মরিয়ম মায়ের কাছে থেকে গেলেও বাবার সঙ্গে চলে আসে ছেলে আসলাম। এরপর থেকেই ওই ঝুপড়িতে থাকেন তারা। 
এমন দৃশ্য দেখেও সরকারি বা বেসরকারি কোনো প্রকার সহযোগিতা মেলেনি কুলসুমের ভাগ্যে। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকেও কোনো প্রকার সহযোগিতা পাননি তারা। 
বয়স্ক ভাতা যেনো তাদের জন্য নয়!  ভাগ্যে জুটেনি ভিজিএফের কার্ড। 
তাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে স্থানীয় প্রশাসন কুলসুমের সহযোগিতায় এগিয়ে আসে। পাশাপাশি স্থানীয়রাও তাকে সহযোগিতার হাত বাড়ান।
দেলদুয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাদিরা আক্তার ঘর নির্মাণের জন্য বৃদ্ধা কুলসুমকে ৩০ হাজার টাকা দেন। 
এছাড়া দেউলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. কামরুল ইসলাম  ১০ হাজার টাকা দিয়ে কুলসুমকে সহায়তা করেন। আটিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম মল্লিক মিয়া ৩ বান্ডিল টিন কিনে দেন।
দেউলি ইউনিয়নের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক মোশারফ বাপ্পি কুলসুমের ঘর তৈরি করতে যাবতীয় কাঠের যোগান দেয়াসহ ঘর নির্মাণের তদারকি করেন। 
এ ছাড়া স্থানীয় অনেকে এগিয়ে আসেন কুলসুমের সহায়তায়। এমন অসংখ্য সহযোগিতায় তৈরি হয় বৃদ্ধা কুলসুমের টিনের ঘর। জয় হয় মানবতার, তৈরি হয় এই মানবতার ঘর।