• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

নৌপথে সদরঘাট থেকে সেন্টমার্টিন

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১৮ এপ্রিল ২০১৯  

কখনো নৌপথে সদরঘাট থেকে সেন্টমার্টিন যাওয়ার ইচ্ছে হয়নি? ‘না’ কিংবা ‘হ্যাঁ’। উত্তর না-বোধক হলে শিরোনাম পড়ে হলেও খানিকটা ইচ্ছে হতেই পারে। কারণ, অপরিচিত জার্নি, বেশ রোমাঞ্চকরও বটে! এ কারণেই নৌপথে সদরঘাট থেকে সেন্টমার্টিন যাত্রার আদ্যোপান্ত জানানো হলো এই আয়োজনে-

প্রথম ধাপে আপনাকে যেতে হবে হাতিয়া। প্রতিদিন বিকেল ৫টায় সদরঘাট থেকে হাতিয়ার উদ্দেশ্যে লঞ্চ ছেড়ে যায়। পৌঁছে পরদিন সকাল ৭ টায়, ১৪ ঘণ্টার জার্নি। লঞ্চের ডেক ভাড়া ৩৫০ টাকা। এছাড়া সিঙ্গেল কেবিন ১২০০ ও ডাবল কেবিন ২২০০ টাকা।

হতিয়া থেকে সকাল ১০টায় চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে লঞ্চ ছাড়বে। সেটাতেই উঠতে হবে। এই লঞ্চ আপনাকে সমুদ্রের বুক চিরে বিকেলের মধ্যেই চট্টগ্রাম পৌঁছে দেবে। রাতটা চট্টগ্রামেই কাটাতে হবে। বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাই একদম ফ্রি টাইম। এই সময়টাতে চট্টগ্রামের লোকাল ফুড ও মেজবানি মাংস অবশ্যই খাবেন! অবশ্য, না খেলেও দোষ নেই!

তারপরদিন ভোর ৭ টায় চট্টগ্রাম সদরঘাট থেকে কুতুবদিয়াগামী ট্রলারে উঠতে হবে আপনাকে। ট্রলার চলতে শুরু করার ৩০ মিনিটের মধ্যে আপনি সমুদ্রে ঢুকে যাবেন। এভাবে সাগরের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে দুপুর ১ টা পর্যন্ত। চট্টগ্রাম থেকে আনোয়ারা হয়ে, মগনামাঘাট হয়ে দুপুর ১ টার দিকে আপনি কুতুবদিয়া পৌঁছাবেন। কুতুবদিয়ার ‘সমুদ্র বিলাস’ নামের হোটেলটাতেই থাকতে হবে আপনাকে। কারণ এটিই এই দ্বীপের একমাত্র আবাসিক হোটেল। ভাড়া নেবে দুই জনের নন এসি রুম ভাড়া ৮০০ টাকা, তিনজনের ১০০০ এবং চার জনের রুম ভাড়া ১২০০ টাকা।

 

ট্রলারে ভ্রমণ বেশ রোমাঞ্চকর বটে!

ট্রলারে ভ্রমণ বেশ রোমাঞ্চকর বটে!

কক্সবাজার জেলায় অবস্থিত দ্বীপটি। এর আয়তন প্রায় ২১৬ বর্গ কিলোমিটার, তবে পুরো জায়গাটিই দেখার মতো। আছে কুতুবদিয়া চ্যানেল, সমুদ্র সৈকত, বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র, বাতিঘর, লবন চাষ, কুতুব আউলিয়ার দরবার শরীফ ও বাতিঘর। এই দ্বীপে কোনো বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। জেনারেটর ও সৌর বিদ্যুৎ দিয়ে এখানকার বৈদ্যুতিক চাহিদা মেটানো হয়ে থাকে। তবে এখানে আছে নানান বৈচিত্র্য। এই সুযোগে জায়গাটিও ঘুরে দেখতে পারবেন।

পরদিন সকাল ৯ টায় আবারো ট্রলার ধরতে হবে। এবার গন্তব্য কক্সবাজার। মাতাবাড়ি, ঢালঘাটা হয়ে দুপুর ২ টার মধ্যে ট্রলার বড় মহেশখালী দ্বীপে চলে আসবে। নেমে গিয়ে চষে বেড়ান মহেশখালী আর সোনাদিয়া দ্বীপ। আর সময় বাঁচাতে চাইলে সরাসরি কক্সবাজার চলে যান। এবার আপনাকে মাছ ধরার ট্রলারদের সাথে দর কষাকষি তে নামতে হবে। কক্সবাজার থেকে যে সব ট্রলার গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যায়, তারা দুপুরের আগেই চলে আসে। এই সময়টা ওদের অবসর। যে কোনো একটা ট্রলার সেন্টমার্টিন পর্যন্ত ভাড়া করে নেন। যেতে ৪ থেকে ৬ ঘণ্টা লাগবে। সব ঠিকঠাক থাকলে রাত ৯ টা – ১০ টার দিকে আপনার সেন্টমার্টিন পৌঁছানোর কথা।

তবে চাইলে কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বাসে চলে যেতে পারেন। কিংবা পুরোটা পথ সী বিচ দিয়ে সাইকেল চালায়ে গিয়ে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনের জাহাজে উঠতে পারেন। কিন্তু এতদূর যেহেতু পুরোটা পানি পথে আসছেন, বাকিটুকুই বা বাদ যাবে কেন? একটু অ্যাডভেঞ্চার হলে মন্দ কী!