• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

মাদক দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে জনতার মার খেল দু’পুলিশ

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৩ জুন ২০১৯  

এক শিক্ষার্থীকে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগে জনতার মার খেল দুই পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে কিশোরগঞ্জের ভৈরব বাজারে।

ঘটনার শিকার ওই শিক্ষার্থীর নাম সজীব আহমেদ। তার বাবার নাম সাবু মিয়া। বাড়ি উপজেলার সম্ভুপুর এলাকায়। তার বাবা পেশায় কাঠমিস্ত্রী। সজীব সম্ভুপুর সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র।
 
জনরোষের শিকার ওই দুই পুলিশ হলেন ভৈরব থানার এসআই আবুল খায়ের ও আজিজুল হক।

সজীবের পরিবার ও এলাকাবাসী জানান, মোটরসাইকেলে চড়ে সজীব তার দুই বন্ধুকে নিয়ে শনিবার সন্ধ্যার পর ভৈরব বাজারে ঈদের কেনাকাটা করতে যায়। বাসায় ফেরার পথে শহরের চান্দ ভান্ডারের কাছে পোশাকবিহীন দুই পুলিশ কর্মকর্তা তাদের গতিরোধ করে। এরপর পুলিশ কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের বলেন, তোদের কাছে মদ আছে। পুলিশের কথায় ভয় পেয়ে সজীবের দুই বন্ধু একটি মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে গেলেও সজীব আটকে যায়।

তখন এসআই খায়ের সজীবকে বলেন, তোর থানায় যেতে হবে। শিক্ষার্থীর মোটরসাইকেলের পেছনে বসেন এসআই আজিজুল। সজীব চালাতে থাকে মোটরসাইকেল। কিন্তু শিক্ষার্থী সজীব তার বাড়ি সম্ভুপুরের সামনে গিয়ে থেমে যায়। সেখানে সজীব তার মোটরসাইকেল ফেলে দৌড়ে বাসায় গিয়ে ঘটনাটি খুলে বলে। তার বাবা এ খবর শুনে ঘটনাস্থলে এসে লোকজন নিয়ে জড়ো হন।

এরপর স্থানীয় জনতা দুই পুলিশকে মারধর করেন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে এলাকার কিছু মুরব্বি দুই পুলিশকে তাদের জিম্মায় রাখেন। তারপর ভৈরব থানায় খবর দিলে রাত সাড়ে ৯ টায় দুই এসআইকে উদ্ধার করে থানা পুলিশ। সেসঙ্গে সজীবের বাবাসহ ছয়জনকে আটক করে পুলিশ।

সজীবের বাবা সাব মিয়া বলছিলেন, আমার ছেলে মাদক সেবন করে না। পুলিশ আমার ছেলেকে মাদক দিয়ে ফাঁসাতে চেয়েছিল। তাই সে কৌশলে পালিয়ে আসে।

স্থানীয় বাসিন্দা বোরহান মিয়া বলেন, আমিসহ কয়েকজন পুলিশকে জনতার হাত থেকে রক্ষা করি। তা নাহলে পুলিশ আরো মার খেত।

তিনি বলেন, সজীব ছেলেটিকে কখনও নেশা করতে দেখেনি। সে মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকার ছেলে নয়। ভালো ছেলেকে পুলিশ মাদক দিয়ে ফাঁসাতে চেয়ে তারা নিজেরাই ফেঁসে গেছে।

ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, সজীবের হাতে মদের বোতল ছিল। তাই তাকে আটক করেছিলাম।

ভৈরব থানার ওসি মো. মোখলেছুর রহমান জানান, সজীবের হাতে মদ থাকায় পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসার সময় সজীব পালিয়ে যায়।

দুই এসআইয়ের গণধোলাইয়ের শিকার হওয়ার কথা অস্বীকার করে ওসি বলেন, ঘটনার সময় সজীবের বাবাসহ ছয়জনকে আটক করলেও পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অনুরোধে তাদের ওইদিনই সন্ধ্যায় ছেড়ে দেয়া হয়। আমরা মামলা করতে পারতাম, কিন্ত বাড়াবাড়ি না করে মীমাংসা করা হয়েছে।

ভৈরব সার্কেলের এএসপি মো. রেজোয়ান দীপু জানান, আমি ঘটনা শুনে মীমাংসা করে দিয়েছি। পুলিশ ও সজীবের পরিবারসহ ভুল বোঝাবুঝির অবসান করেছি।