• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

এসিতে জিম্মি যাত্রীরা

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৩ জুন ২০১৯  

দরজায় কড়া নাড়ছে মুসলমানদের বৃহৎ ধর্মীয় অনুষ্ঠান ঈদুল ফিতর। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ করতে রাজধানী ছাড়ছেন বিপুল সংখ্যক মানুষ। যাত্রীদের চাপ বেড়েছে বাস টার্মিনালগুলোতে। এবার অন্য বিড়ম্বনা কম থাকলেও এসি বাসের নামে আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। এমনকি লোকাল বাসে এসি লাগিয়ে দ্বিগুন ভাড়া আদায় করছে পরিবহন ব্যবসায়ীরা।

রোববার দুপুরে গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, আগে থেকেই ছুটি হওয়ায় টার্মিনালে যাত্রীদের চাপ স্বাভাবিক। আগে যারা টিকিট কেটেছিল তারা বেশ স্বস্তিতিই বাড়ি ফিরছেন। তবে নতুন টিকিট কাটতে আসা যাত্রী নেই বললেই চলে।

টিকিট বিক্রির বিষয়ে টার্মিনালে কর্মরত এক পরিবহনের ম্যানেজার সবুজ বলেন, ঈদের মৌসুম চলছে সেই অনুযায়ী আগের মতো যাত্রী বিড়ম্বনা নেই।

টিকিট কাটতে আসা চার যাত্রীর সঙ্গে কথা হয় ডেইলি বাংলাদেশের। তারা বলেন, আগে থেকে টিকিট কাটা ছিল না। তাই অনেক টেনশন হচ্ছিল। কিন্তু টার্মিনালে এসে দেখি সব ফাঁকা। টিকিট পেতে কোনো ঝামেলায় পড়তে হয়নি অন্য বছরগুলোর মতো। তবে ডাবল ভাড়া আদায় করছেন পরিবহন ব্যবসায়ীরা।

 

 

বাড়তি ভাড়া সম্পর্কে জানতে চাইলে লাইনম্যান কাদের বলেন, যাত্রীদের তেমন চাপ নেই। আমাদের পরিবহনে কখনো ভাড়া বাড়ানো হয় না।

এদিকে কল্যাণপুর বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায় একই চিত্র। সেখানেও বেশ কয়েকটি অভিযোগ পাওয়া যায়, এসি বাসের নামে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও লোকাল বাসে এসি লাগিয়ে আদায় করা হচ্ছে দ্বিগুন ভাড়া।

এক শ্রেণির অসাধু পরিবহন ব্যবসায়ী যাত্রীদের জিম্মি করে এসব ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। সরকারের নির্ধারিত ভাড়ার নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করছে না এসব পরিবহন মালিকরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা থেকে দর্শনা প্রায় ২৫০ কিলোমিটার। বিআরটিএ এর প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী দূরপাল্লার বাসের ভাড়া প্রতি কিলোমিটার ১ টাকা ৫৫ পয়সা। সে হিসেবে দর্শনার ভাড়া আসে ৩৮৭ টাকা। এর সঙ্গে যোগ হবে অনান্য খরচ। ধরে নিলাম অনান্য খরচ ১০০ টাকা। তাহলে ভাড়া হবে ৪৮৭ টাকা।

 

 

তবে রয়েল এক্সপ্রেসসহ অন্য এসি বাসগুলো এই রুটে প্রতি সিটের ভাড়া নিচ্ছে ১২শ’থেকে ১৫শ’ টাকা। অর্থাৎ এসির দোহাই দিয়ে এসব বাস প্রতিটি সিটের ভাড়া নিচ্ছে ননএসির চেয়ে ৭০০ টাকা বেশি। সে হিসেবে ৪০ সিটের গাড়িতে এসি বাবদ যাত্রীর কাছ থেকে অতিরিক্ত ২৮ হাজার টাকা বেশি নেয়া হচ্ছে।

এ সময় বেশ কয়েকজন যাত্রী বলেন, যদি এসির খরচ এতো বেশি হয়। তবে অন্যসময় কেমন করে রয়েল এক্সপ্রেস যাত্রীদের কাছ থেকে ৮০০ টাকা ভাড়া নেয়?

অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে রয়েল বাসের টিকেট কাউন্টার থেকে কেউ কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। মালিক জানে বলে পার পাওয়ার চেষ্টা করেন তারা।

এদিকে ঢাকা টু রাজশাহী দূরত্ব হচ্ছে ৩০০ কিলোমিটার, অন্য সময় এই রুটে এসি বাসের ভাড়া ৮০০ টাকা, আর ঈদ উপলক্ষে ১৫০০ টাকা ভাড়া নিচ্ছে গ্রামীণসহ অন্য পরিবহনগুলো।

এদিকে টার্মিনালে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। টার্মিনালের ভেতরে মাঝে মাঝে মাইকিং করে যাত্রীদের সতর্ক করছেন, সেই সঙ্গে প্রতারণার বিষয়েও সর্তক করছেন যাত্রীদের।

গাবতলী টার্মিনালে ডিউটিরত এসআই মোশারফ বলেন, টার্মিনালে মানুষ খুব শান্তিতে চলাফেরা করছে। আর খুব সহজেই মিলছে টিকিট। যা আগে কখনো দেখিনি। যাত্রীদের নিরাপত্তায় আমরা সব সময় সজাগ রয়েছি।