• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

রিটার্নিং কর্মকর্তাদের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে ডাকার অভিযোগ

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২৩ নভেম্বর ২০১৮  

রিটার্নিং কর্মকর্তাদের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে ব্রিফ করার অভিযোগ কাল্পনিক ও মনগড়া বলে দাবি করেছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪–দলীয় জোট। এ বিষয়ে তারা লিখিত ব্যাখ্যা দিয়ে আজ বিকেলে তা ইসিতে জমা দিয়েছে।

সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়ার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম ও ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সঙ্গে দেখা করে ব্যাখ্যা জমা দেয়।

গত কয়েক দিনে ঐক্যফ্রন্ট থেকে ইসিতে যেসব দাবি ও অভিযোগ করা হয়েছিল, তা খণ্ডনের জন্য ১৪ দলের পক্ষ থেকে এই চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে কাউকে ডাকা হয়নি। জেলা প্রশাসকেরা নিজ নিজ জেলায় সব মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়কারীর দায়িত্ব পালন করেন। ঢাকায় এলে এই কাজের অংশ হিসেবে তাঁরা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে যান। এ রকম কাজে দু-একজন কর্মকর্তা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে যেতেই পারেন। তবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কোনো কর্মকর্তাকে ডাকা হয়নি বা তাঁদের ব্রিফও করা হয়নি। চিঠিতে বিএনপির অভিযোগকে অসত্য ও মনগড়া বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

২০ নভেম্বর বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করে বলা হয়েছে, রিটার্নিং কর্মকর্তারা ইসির সঙ্গে মতবিনিময় শেষে কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার আগ মুহূর্তে তাঁদের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে নির্বাচনে সরকারি দলের পক্ষে ভূমিকা রাখার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়।
১৪ দলের লিখিত অভিযোগে দাবি করে বলা হয়, আদালতের রায়ে দণ্ডিত ও পলাতক তারেক রহমান অজ্ঞাত স্থান থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন। সংবিধান অনুযায়ী দণ্ডপ্রাপ্ত কোনো আসামি সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করতে পারেন না।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, ১৭ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্ট নেতারা আইনজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। সেখানে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা আচরণবিধি লঙ্ঘন করে দলের জন্য ভোট চেয়েছেন। বিএনপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কোনো দণ্ডিত ব্যক্তি দলের দায়িত্বে থাকতে পারেন না। অথচ ড. কামাল দণ্ডিত তারেক রহমানকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দাবি করে তারেক ও খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করেছেন। বিষয়টি আদালতের রায়ের লঙ্ঘন। কারণ আদালত বিএনপির গঠনতন্ত্র সংশোধনের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন।

১৪ দল থেকে ইসিকে বলা হয়েছে, বিএনপির পক্ষ থেকে সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কাল্পনিক অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছে। বিএনপি মূলত প্রশাসনকে মানসিকভাবে কোণঠাসা করে নিজেদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের কাজ করে যাচ্ছে। ইসি সচিবসহ সরকারের কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তার শাস্তির দাবি ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছু নয়।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার বিএনপির পক্ষ থেকে ৭০ জন পুলিশ কর্মকর্তা এবং  জনপ্রশাসনের ২২ জন কর্মকর্তাকে প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।

নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম ও ইসি সচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে দিলীপ বড়ুয়া সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপি ইসি সচিবালয়ের সচিব ও প্রশাসনে রদবদলের দাবি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে। দলটি দ্বিমুখী আচরণ করছে। একদিকে তারা নির্বাচনমুখী আচরণ করছে। আবার অবস্থা খারাপ মনে হলে যাতে নির্বাচন বানচাল করা যায়, সে প্রস্তুতিও রাখছে। কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণের কথা বলে তারা সংঘাতের উসকানি দিচ্ছে।

বিএনপি থেকে সরকারি কর্মকর্তাদের বদলির দাবির বিষয়ে দিলীপ বড়ুয়া বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে ইসি যেকোনো কর্মকর্তাকে বদলি করতে পারে। এই এখতিয়ার তাদের আছে। তারেক রহমান সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘তারেক রহমান আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। গুরুত্বপূর্ণ হলো একজন দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক কয়েদি গণমাধ্যমে কথা বলছেন। এই অধিকার তাঁর নেই।’

১৪ দলের প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।