• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

৬৪ জেলায় গৃহহীনদের ৩২ হাজার ঘর দেবে সরকার

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১২ মার্চ ২০১৯  

২০২১ সালের মধ্যে সবার জন্য সুপরিকল্পিত আবাসন নিশ্চিত করতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর ও পরিকল্পিত বাসযোগ্য আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলাই হচ্ছে শেখ হাসিনা সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে ঘোষণা করেছেন ‘সকলের জন্য আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে; বাংলাদেশে কেউ আর গৃহহীন থাকবে না’। শেখ হাসিনা সরকারের এ ভিশন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, আমি ‘ইনোভেটিভ’ মানুষ। মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়ে কিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। টিআর কাবিখার বিশেষ বরাদ্দ দিয়ে মাঠ পর্যায়ে তেমন একটা উন্নয়ন হয় না। তাই পরিকল্পনা করেছি বিশেষ বরাদ্দের টাকা দিয়ে দেশের গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মাণ করে দেব।

সূত্র জানায়, এখন থেকে টিআর কাবিখার পরিবর্তে এসব কর্মসূচীর অর্থ দিয়ে গৃহহীন পরিবারের জন্য ঘর নির্মাণ করে দেয়া হবে। যার নাম দেয়া হয়েছে ‘দুর্যোগ সহনীয় ঘর নির্মাণ’। শীঘ্রই এর কার্যক্রম শুরু হবে। মূলত টিআর ও কাবিটা বরাদ্দ নিয়ে নানা সময়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় এবং মাঠে দৃশ্যমান উন্নয়ন না হওয়ায় এই কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে।

বিষয়টি সম্পর্কে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব শাহ কামাল বলেন, দুর্নীতি বন্ধ করতে যে কোন কঠিন পদক্ষেপ নিতে আমরা বদ্ধপরিকর। যেসব কর্মসূচী নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে সেগুলো বাতিলের চিন্তাভাবনা করছি। দুর্নীতি প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্পষ্ট নির্দেশনার প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল।

সূত্র মতে, প্রতিবছর টিআর খাতে দুইশ’ কোটি টাকা এবং কাবিখা খাতে একশ’ কোটি টাকা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়কে বরাদ্দ দেয় অর্থ বিভাগ। তাই এমপিদের বরাবরে টিআর ও কাবিখা বরাদ্দ না দিয়ে সেই অর্থে বছরে ৬৪ জেলায় ৬৪ হাজার ঘর নির্মাণ করে দেবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে এ বছরের জুনের মধ্যে প্রতি জেলায় পাঁচশ’ অর্থাৎ ৬৪ জেলায় ৩২ হাজার ঘর নির্মাণ করে দেয়া হবে।

এরপর ডিসেম্বরের মধ্যে ৬৪ জেলায় আরও ৩২ হাজার সেমিপাকা ঘর নির্মাণ করে দেয়া হবে। সব মিলিয়ে এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ৬৪ জেলায় ৬৪ হাজার ঘর নির্মাণ করে দেয়া হবে। চারশো’ বর্গফুটের সেমি পাকা প্রতিটি ঘরে দুইটি রুম, দু’টি বারান্দা, একটি বাথরুম ও একটি রান্নাঘর থাকবে। এতে প্রাথমিক খরচ ধরা হয়েছে ঘরপ্রতি দেড় লাখ টাকা। যাদের জমি আছে কিন্তু ঘর নেই তাদের বিষয়টি প্রথমেই চিন্তা করবে মন্ত্রণালয়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, স্থানীয় পর্যায়ে গৃহহীন ঠিক করবেন জনপ্রতিনিধিরা। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা সদস্যরা গৃহহীনদের তালিকা পৌঁছে দেবেন উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের কাছে। এরপর ওই তালিকা অনুযায়ী ইউএনওরা ব্যবস্থা নেবেন। আগামী পাঁচ বছর এই কার্যক্রম চালালে সারাদেশে তিন লাখের বেশি ঘর নির্মাণ করা যাবে। এতে আর কেউ গৃহহীন থাকবে না, মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তুতি সম্পর্কে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যে কোন দুর্যোগ মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুত রয়েছি। সরকারের কাছে প্রয়োজনীয় চাল, জিআর, তাঁবু মজুদ রয়েছে, কেনা হয়েছে দুই থেকে আড়াই কোটি টাকার যন্ত্রপাতি। স্কাউট, গার্লস গাইডসসহ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ৫০ হাজারের মতো স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে রোহিঙ্গা এখন কোন চ্যালেঞ্জ নয়। তাদের জন্য প্রয়োজনীয় খাবার, ল্যাট্রিন প্রস্তুত করা হয়েছে। তাদের সন্তানদের লেখাপড়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখন তাদের প্রত্যাবর্তন নিয়ে কাজ চলছে। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নিজে কাজ করছেন। জাতিসংঘে তিনি পাঁচ দফা দাবিও রেখেছেন। আন্তর্জাতিক পর্যায়েও আলোচনা চলছে। পাশাপাশি জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থাও এ নিয়ে কাজ করছে।