• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

শারীরিকভাবেই নয়, মানসিকভাবেও সহিংসতার শিকার নারীরা:আনিসুল হক

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৩ মার্চ ২০১৯  

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, নারীরা শুধু শারীরিকভাবেই নয়, তারা বিভিন্ন উপায়ে মানসিকভাবেও সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। যদিও মানসিকভাবে সহিংসতার শিকারের ঘটনাগুলো সেভাবে প্রকাশ পাচ্ছে না। এর কারণে পরবর্তীতে আত্মহত্যার মতো অনেক ঘটনা ঘটছে। অনেক সময় এর প্রভাব পড়ছে পরিবারের উপরেই। নারীরা তাদের ন্যায্য অধিকার বা বিচার পাত্তয়ার ক্ষেত্রে এখনও অনেকটা পিছিয়ে আছেন। অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে সহিংসতার শিকার হচ্ছেন অনেকে। যা মোটেও কাম্য নয়।

শনিবার দুপুরে রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ‘পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধে সরকারি আইনি সেবার ভূমিকা’ শীর্ষক এক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আইনমন্ত্রী বলেন, নারীরা যদি জানে, তার বাবা-মা, শ্বশুর-শাশুড়ি বা সালিশের মাতব্বররাই শেষ ভরসাস্থল নয়, তাদের ভরসার আরও জায়গা আছে, তাহলে তারা লিগ্যাল এইড অফিসে যাবে। এ বিষয়ে নারীদের সচেতন করতে হবে।

তিনি বলেন, পরিবার কেন্দ্রিক নারীর প্রতি এসব শারীরিক ও মানসিক সহিংসতা প্রতিরোধে সরকার ২০১০ সালে ‘পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন’ এবং ২০১৩ সালে পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ বিধিমালা প্রণয়ন করে। কিন্তু বাস্তবে এ আইনের প্রয়োগ খুব একটা দেখা যায় না। তার মানে, এ আইন সম্পর্কে তারা এখনও পুরাপুরি জানেন না। তাই এ আইন সম্পর্কে নারীদের পাশাপশি পুরুষদেরও জানাতে হবে। এজন্য প্রয়োজন প্রচারণা ও সচেতনতা বৃদ্ধি।

আইনমন্ত্রী বলেন, পরিবার কেন্দ্রিক সহিংসতার শিকার নারীরা দেশে প্রচলিত আইন সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন হলে এবং তাদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অপরাধসমূহ আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করালে, দেশে নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা অনেকটাই হ্রাস পাবে।

মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার সরকার নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সব সময়ই আন্তরিক। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সহিংসতার শিকার নারীদের অধিকার ও সুবিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে বিনা খরচে তাদের সরকারি আইনি সেবা প্রদান করা হচ্ছে। আইনগত সহায়তা প্রদান আইন- ২০০০ অনেকটাই নারীবান্ধব। তাই এ আইনের আওতায় নারী সেবা গ্রহীতার সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। শারীরিক ও মানসিকভাবে সহিংসতার শিকার নারীরা এখন ঘরে বসেই ‘১৬৪৩০’ হেল্প লাইনে ফোন করে সরকারি আইনি সেবা নিচ্ছেন। এখন পর্যন্ত এক লাখ ৮৫ হাজার ২৮৬ নারী বিনা খরচে সরকারি আইনি সেবা নিয়েছেন।

আনিসুল হক বলেন, সরকার আইনি সহায়তা কার্যক্রম এখন ইউনিয়ন পর্যন্ত নিয়ে গেছে। নারী নির্যাতনের অনেক খবর সরকারের কাছে পৌঁছায় না। তাই বেসরকারি সংস্থাগুলোকে নারীর প্রতি সহিংসতার অভিযোগ পেলে তা সরকারি লিগ্যাল এইড অফিসে পৌঁছানোর বিষয়ে সহযোগিতার আহ্বান জানান।

জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার ভারপ্রাপ্ত পরিচালক বিকাশ কুমার সাহার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মূসা খালেদ, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক এবং মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।