• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

এডিপির আকার ২ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৬ জানুয়ারি ২০২১  

আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে ‘বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির’ (এডিপি) আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। এটি চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের এডিপির চেয়ে ৮ শতাংশ বেশি। টাকার অঙ্কে নতুন এডিপির আকার বাড়ছে ৭ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকা, যা কি না নতুন অর্থবছরের প্রাক্কলিত জিপিডির ৬ শতাংশ। প্রসঙ্গত নতুন অর্থবছরের প্রাক্কলিত জিডিপির আকার হচ্ছে ৩৫ লাখ ৫২ হাজার ৭৮৮ কোটি টাকা।
অর্থ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এনইসি বৈঠকে নতুন এডিপি চূড়ান্ত অনুমোদনের সময় নতুন এডিপির আকার খানিকটা বাড়তে পারে বলে সূত্র উল্লেখ করেছে।


অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে বর্তমান এডিপির আকার কাটছাঁট করা হতে পারে। গত ২০১৯-২০ অর্থবছরের মূল বাজেটে এডিপির আকার ছিল ২ লাখ ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে ৯ হাজার ৮০০ কোটি টাকা কমিয়ে আকার ১ লাখ ৯২ হাজার ৯২১ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়। এর আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রকৃত এডিপি বাস্তবায়নের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৪৭ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা। তার আগে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের এডিপির অর্থ ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৫৩৮ কোটি টাকা।
সূত্রমতে, চলমান করোনা পরিস্থিতিতে গত অর্থবছর ও চলতি অর্থবছরের রাজস্ব আদায়ের গতিধারা পর্যালোচনায় নতুন বাজেটে সার্বিক ঘাটতি প্রাক্কলন করা হয়েছে ২ লাখ ৭ হাজার ৫৬৫ কোটি টাকা। এটি প্রাক্কলিত নতুন জিডিপির ৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে সার্বিক বাজেট ঘাটতির পরিমাণ ধরা হয়েছে ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। এটি চলতি জিডিপির ৬ শতাংশ। নতুন বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ ১৭ হাজার ৫৬৫ কোটি টাকা বাড়লেও জিডিপির অনুপাতে ঘাটতি কমছে।


এ দিকে, ২০১৯ সালে করা অর্থ বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, গত ছয়টি (২০১৯ সালের আগে) অর্থবছরে মূল এডিপির আকার বেড়েছে প্রায় ২১৪ শতাংশ। গত পাঁচ বছরে যেসব উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে, সেগুলোর মোট ব্যয় ১৫ লাখ কোটি টাকার অধিক। সে হিসাবে বছরে প্রায় ৩ লাখ কোটি টাকা এডিপি বরাদ্দ প্রয়োজন। কিন্তু বাস্তবায়ন সক্ষমতার অভাবে প্রতি বছরই মূল বাজেটের এডিপি কাটছাঁট করে সংশোধিত এডিপি প্রণয়ন করা হয়। আর সংশোধিত এডিপিও পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয় না।
এ দিকে, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের হার আগের তুলনায় বাড়লেও সংশোধিত এডিপির লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হচ্ছে না। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের ‘বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের’ (আইএমইডি) হিসাবে, গত পাঁচটি অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়নের গড় হার ৯২ শতাংশ। কিন্তু বাজেট উপাত্ত পর্যালোচনায় দেখা যায়, প্রকৃত এডিপি বাস্তবায়নের গড় হার হচ্ছে সংশোধিত এডিপির প্রায় ৮১ শতাংশ (৮০.৬৭%)।


এডিপি বাস্তবায়নের হার বাড়াতে ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত বাজেট মনিটরিং কমিটির বৈঠকে কিছু সুপারিশ দিয়েছিল অর্থ বিভাগ। এগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ অনুমোদিত ব্যয়সীমার মধ্যে প্রতিটি মন্ত্রণালয় বা বিভাগের অগ্রাধিকারভুক্ত প্রকল্পগুলোর বিপরীতে অর্থায়ন নিশ্চিত করা; নতুন অগ্রাধিকার প্রকল্পের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত অর্থের সংস্থান না হলে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ কমিয়ে বা স্থগিত রেখে নতুন প্রকল্পে অর্থায়ন করা; সর্বোচ্চ বৈদেশিক সাহায্যপ্রাপ্ত ১০০টি প্রকল্পে বৈদেশিক সাহায্যের ছাড় ও ব্যবহার নিশ্চিত করতে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ নিয়মিত পরিবীক্ষণ সভা করা; দক্ষ প্রকল্প পরিচালকের অভাব পূরণে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে চুক্তিভিত্তিক প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ করা এবং প্রবৃদ্ধি সহায়ক ১০টি বড় প্রকল্প সবচেয়ে দ্রুততম সময়ে বাস্তবায়ন করা ইত্যাদি।
জানা গেছে, এই সুপারিশ এখন পর্যন্ত পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। তাই সংশোধিত এডিপি বাস্তবায়ন লক্ষ্য অনুযায়ী হচ্ছে না।