• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার ‘দুরন্ত ষাঁড়’!

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৫ মার্চ ২০২১  

গত এক দশকে ধারাবাহিক উন্নয়নে বাংলাদেশে দারিদ্র্য হার কমেছে প্রায় ১২ শতাংশ। ৭ শতাংশের মতো গড় জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে বেড়েছে মানুষের জীবন যাত্রার মান। তাই স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উঠতে তিন সূচক মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতায় নির্ধারিত সময়ের আগেই লক্ষ্য অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এতেই গত সপ্তাহে জাতিসংঘ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের চূড়ান্ত সুপারিশ মিলেছে। 

এবার বাংলাদেশের অনবদ্য অর্জনের প্রশংসা উঠে এসেছে মার্কিন অর্থনীতিবিষয়ক গণমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে। মাইক বার্ডের এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন ও ভিয়েতনামের সফল উন্নয়ন মডেলের দৃষ্টান্ত দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশে। গত এক দশকে তৈরি পোশাকশিল্পে ভর করেই বাংলাদেশের রফতানি বেড়েছে ৮০ শতাংশ। যেখানে ভারত ও পাকিস্তানের রফতানি বৃদ্ধির হার অনেকটাই কম বলে উল্লেখ করেছেন প্রতিবেদক। 

প্রতিবেদনটি বলছে, রফতানি শিল্পনির্ভর উন্নয়ন এখনকার যুগে স্বল্পোন্নত থেকে মধ্যম আয়ের দেশে নিয়ে যেতে সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখছে। উল্লেখ করা হয়েছে ২০১১ সালেও যেখানে বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপ ভারতের তুলনায় ৪০ শতাংশ কম ছিল। সেখানে গত বছর করোনা মহামারিতে ভারতকে ছাড়িয়ে যাওয়ার দৌড়ে ছিল বাংলাদেশ। প্রতিবেদনে বাংলাদেশে জনসংখ্যার বড় অংশ তরুণ জনগোষ্ঠীর বিষয়কে ইতিবাচকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ায় তুলনামূলক নারীর কর্মসংস্থান ও শ্রমের মূল্যে সুবিধাজনক অবস্থায় আছে বাংলাদেশ। এ ছাড়া হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় ইকোনমিক কমপ্লেক্সিটি সূচকে বাংলাদেশ ১৩৩ দেশের মধ্যে ১০৮ নম্বরে আছে যা ১৯৯৫ সালে আরো বেশি ছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। 

ওয়াল স্ট্রিটের নিবন্ধের বিষয়ে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) গবেষণা পরিচালক ড. মাহফুজ কবীর সময় সংবাদকে বলেন, রূপকল্প ২০২১ এবং ভিশন ২০৪১ সরকারের এ দুটি পরিকল্পনা স্পষ্ট করেছে কোন কোন খাতে কি কি কাজ করতে হবে। সরকারের নীতি সহায়তা, সরাসরি বিনিয়োগের সুফল পাচ্ছে জনগণ। করোনার মধ্যেও উন্নয়ন ধরে রাখা গেছে, যা অনেক দেশই পারেনি। এসব অর্জনের স্বীকৃতি দিচ্ছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনও। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন তারই অংশ। 

বাংলাদেশের এই অগ্রগতিকে ধরে রাখতে নিবন্ধে ভিয়েতনামের মতো বাংলাদেশকে আরও উন্নত মানের পণ্য উৎপাদন ও রফতানির দিকে মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যার সঙ্গে একমত দেশের ব্যবসায়ীরাও। বিজিএমইএর সাবেক সহসভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম সময় সংবাদকে বলেন, ‘এখন উদ্যোক্তারা আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স, রোবোটিক্সের মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। তবে তা প্রতিযোগিতার জন্য যথেষ্ট নয়। এখানে উৎসাহিত করতে হবে সরকারকে। তাদের সঙ্গে বসে সুনির্দিষ্ট নীতি তৈরি করতে হবে। এখানে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ দরকার হবে। তা ছাড়া আমার প্রতিযোগী দেশের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যেতে পারব না বলেও জানান তিনি।’

পোশাকের বাইরে রফতানি বহুমুখীকরণ আর এশিয়ায় বাজার বাড়াতে আঞ্চলিক বড় জোট বা ফোরামগুলোতে যুক্ত হওয়ার পরামর্শ আছে ওয়াল স্ট্রিটের নিবন্ধে।