• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

রিজার্ভ চুরি: এ মাসেই মামলা হবে: অর্থমন্ত্রী

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২১ জানুয়ারি ২০১৯  

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে চুরি হওয়া অর্থ ফেরত আনতে এ মাসেই নিউইয়র্কে মামলা করা হবে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

কোনোভাবেই মামলা করার সময়সীমা ৩ ফেব্রুয়ারি অতিক্রম করবে না বলে জানান তিনি।

রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুই দফা বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, মামলায় বিবাদী কারা বা কে হবে তা নির্ধারণের জন্য বাংলাদেশ ও নিউইয়র্কের আইনজীবীরা কাজ করছেন তারাই এ বিষয়টি চূড়ান্ত করবেন।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, রিজার্ভ চুরির ঘটনা ঘটেছে নিইউ ইয়র্কে। তাই মামলা সেখানেই হবে। আমাদের আইনজীবীরা এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করছে। মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে আইনজীবীর ফি বা কমিশন সম্পর্কে আমরা অবগত রয়েছি। অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ফরাস উদ্দিনের তদন্ত রিপোর্ট আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে কিনা এমন এক প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশের প্রয়োজন হলে করবো, না হলে করবো না।

এদিকে, গত ডিসেম্বরে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানিয়েছিলেন, রিজার্ভ থেকে চুরি যাওয়া অর্থ ফেরত আনতে দুই প্রতিষ্ঠানকে আসামি করে মামলা করা হবে।

প্রতিষ্ঠান দুটি হলো ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশন (আরসিবিসি) ও যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক। মূল আসামি আরসিবিসি হলেও এ ঘটনার সঙ্গে অনেক দেশ জড়িত। এ মামলার জন্য আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত সময় আছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করে যাচ্ছে।

প্রসঙ্গত: ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে সুইফট কোডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রায় ১০১ মিলিয়ন ডলার চুরি করে দুর্বৃত্তরা। এর মধ্যে ২ কোটি ডলার চলে যায় শ্রীলঙ্কা ও ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চলে যায় ফিলিপাইনের জুয়ার আসরে। এ ঘটনার প্রায় একমাস পর ফিলিপাইনের একটি পত্রিকার সংবাদের মাধ্যমে বিষয়টি বাংলাদেশ জানতে পারে।

এ ঘটনা চেপে রাখতে গিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে গভর্নরের পদ ছাড়তে বাধ্য হন ড. আতিউর রহমান। বড় ধরনের রদবদল করা হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ে। পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক জোবায়ের বিন হুদা মানি লন্ডারিং আইনে ১০১ মিলিয়ন ডলার চুরির অভিযোগ এনে ১৫ মার্চ (২০১৬) মতিঝিল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় সিআইডিকে। তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর সিআইডি এ পর্যন্ত ২০ বার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আদালতের কাছ থেকে সময় চেয়ে নিয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় সরকার গঠিত ফরাস উদ্দিনের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট এখনও প্রকাশ করা হয়নি।

একইভাবে রিজার্ভ চুরির ঘটনা নিয়ে রিজাল ব্যাংকের ওপর করা তদন্ত রিপোর্টও প্রকাশ করেনি ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিএসপি (ব্যাংককো সেন্ট্রাল এনজি ফিলিপাইনস)। ফলে বিশ্বব্যাপী আলোচিত এ ঘটনার ভেতরের অনেক তথ্যই প্রকাশিত হচ্ছে না।

চুরি যাওয়া অর্থের মধ্যে এখন পর্যন্ত ফেরত এসেছে ১ কোটি ৪৫ লাখ ৪০ হাজার ডলার। বাকি ৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার ফেরত পাওয়া যায়নি। বিশ্বব্যাপী আলোচিত এ ঘটনার জন্য তৎকালীন গভর্নর ড. আতিউর রহমান পদত্যাগ করলেও বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তাকেই এখন পর্যন্ত শাস্তির আওতায় আনা যায়নি। যদিও এর জন্য দায়ী করা হয়েছে ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনকে (আরসিবিসি)।