• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

গৃহঋণ পেয়েছেন মাত্র ৮ জন

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৩০ জানুয়ারি ২০১৯  

সরকারি কর্মচারীদের পাঁচ শতাংশ সরল সুদে সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ টাকা পর্যন্ত গৃহ-নির্মাণ ঋণ দিচ্ছে সরকার। গত ১ অক্টোবর থেকে এ কার্যক্রম শুরুর কথা থাকলেও আবেদনপত্র যাচাই ও অর্থ মন্ত্রণালয়ে গৃহ-নির্মাণ ঋণ সেলের কার্যক্রম ঠিক মতো শুরু না হওয়ায় তাতে বিলম্ব হয়। গত ২৩ ডিসেম্বর দুই জনকে মনোনীত করে কার্যক্রম শুরু করে মন্ত্রণালয়।

তবে ২৩ ডিসেম্বর থেকে বুধবার (৩০ জানুয়ারি) পর্যন্ত এ ঋণের জন্য মনোনীত হয়েছে মাত্র আটজন। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাত্র ছয়দিন আগে অর্থাৎ ২৩ ডিসেম্বর স্বল্প পরিসরে দুই অতিরিক্ত সচিবকে গৃহঋণ দিয়ে কার্যক্রম শুরু করে অর্থ বিভাগ। সেই দিন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. ভুবন চন্দ্র বিশ্বাস ও যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আনোয়ারুল ইসলাম সরকারের নামে সরকারি আদেশ (জিও) জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের গৃহ-নির্মাণ ঋণ সেল। দুজনই বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন থেকে ঋণ নিয়েছেন। হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন থেকে ভুবন চন্দ্র বিশ্বাস ৩৫ লাখ আর আনোয়ারুল ইসলাম সরকার ঋণ নিয়েছেন ৬৫ লাখ টাকা। এরপর দীর্ঘ ৩৭ দিন পার হলেও মাত্র ছয় জনকে মনোনীতি করে জিও করতে পেরেছে গৃহ-নির্মাণ ঋণ সেল।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাগো নিউজকে বলেন, আশা ছিল এ ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে অনেক বেশি সাড়া পাব। কিন্তু বাস্তবতা এর বিপরীত। গত ৩৭ দিনে মাত্র ছয় জনকে ঋণ দেয়ার ব্যাপারে মনোনীত করতে পেরেছেন তারা।

তিনি বলেন, যেসব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এ ঋণ দিতে সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেছে, তারাই প্রকাশিত নীতিমালার আলোকে আবেদন যাচাই করে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সেলে পাঠায়। এরপর যোগ্য বিবেচিতদের অনুকূলে জিও করে অর্থ মন্ত্রণালয়।

তিনি আরও বলেন, শুনেছি অনেকে ঋণের জন্য চুক্তিবদ্ধ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করছে। কিন্তু যাচাই-বাছাইয়ে ত্রুটি ধরা পড়ায় যোগ্য বিবেচিত হচ্ছেন না।

এদিকে চুক্তিবদ্ধ চারটি সরকারি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, সরকারি চাকরিজীবীদের গৃহঋণের আবেদন এ পর্যন্ত ২৫ হাজার ছাড়িয়েছে। প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসব আবেদন যাচাই-বাছাই শুরু করেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে নির্ধারিত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বোর্ড থেকে অনুমোদন নিয়ে অর্থ বিভাগের গৃহঋণ সেলে পাঠানো হবে। পরে সেখান থেকে ঋণের ভর্তুকি নির্ধারণ করে জিও করবে অর্থ মন্ত্রণালয়।

সরকারি চাকরিজীবীদের কম সুদে গৃহঋণ দিতে সোনালী, অগ্রণী, জনতা ও রূপালী ব্যাংক এবং বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করে অর্থ মন্ত্রণালয়। ওই ঋণের সরল সুদহার হবে ১০ শতাংশ। যার মধ্যে ৫ শতাংশ ভর্তুকি দেবে সরকার। ইতোমধ্যে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ভর্তুকি বাবদ ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে সরকার। দেশে মোট ২১ লাখ সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারী আছে, যাদের মধ্যে প্রায় ৭০ ভাগ কর্মচারী।

গত ১ অক্টোবর থেকে অনলাইনে গৃহ-নির্মাণ ঋণের জন্য আবেদন জমা শুরু হয়। অভিন্ন আবেদনপত্রে ২৮টি তথ্য চাওয়া হয়, যার মধ্যে ই-টিন নম্বর দেয়া বাধ্যতামূলক। এছাড়া প্রাইভেট প্লটের জন্য ৪-৬টি দলিল এবং সরকারি/লিজ পাওয়া প্লটের জন্য ৪-৭ দলিল দিতে হচ্ছে আবেদনকারীদের।

উল্লেখ্য, গত ৩০ জুলাই সরকারি কর্মচারীদের গৃহ-নির্মাণ ঋণ নীতিমালা প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করে অর্থ বিভাগ। নীতিমালা অনুযায়ী, চাকরি স্থায়ী হওয়ার পাঁচ বছর পর এবং সর্বোচ্চ ৫৬ বছর বয়স পর্যন্ত গৃহঋণের জন্য আবেদন করা যাবে। বেতন স্কেলের গ্রেডভেদে সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ এবং সর্বনিম্ন ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নেয়া যাবে। ছয় মাস গ্রেস পিরিয়ডসহ ২০ বছরে ঋণ পরিশোধ করতে হবে।