• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

কমে আসছে বাংলা চলচ্চিত্রের অশ্লীলতা

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯  

বাংলা চলচ্চিত্রে অশ্লীলতা নতুন কিছু নয়। বহুবছর আগে থেকেই দেশীয় চলচ্চিত্রে অশ্লীল কর্মকাণ্ড হয়েআসছে। বিশেষ করে একটা সময় দেশীয় চলচ্চিত্রে ব্যাপক হারে অশ্লীলতা ছেয়ে গিয়েছিল। ১৯৫৪ সালে ‘মুখও মুখোশ' দিয়ে ছবি নির্মাণ শুরু হয় বাংলাদেশে৷ ১৯৫৬ সালে এটি মুক্তি পায়৷ ১৯৫৬ থেকে ১৯৭১ পর্যন্তআমাদের চলচ্চিত্র হিন্দি ও উর্দু ছবির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলতো৷ তখন এহতেশাম, জহির রায়হান, ফতেহলোহানী, শুভাষ দত্তরা সিনেমা নির্মাণ করতেন৷ হিন্দি ও উর্দু সিনেমার সাথে প্রতিযোগিতার কারণে তারা ছবিরমানের দিকে খেয়াল রাখতেন। তাদের ছবি দর্শক গ্রহণও করেছিল। হিন্দি/উর্দু ছবির সাথে ফাইট করেওঅনেক ব্যবসাসফল ছবি উপহার দিয়েছিলেন তখনকার পরিচালকেরা। স্বাধীনতার পর তখনকার শিল্পীদেরদাবির মুখে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হিন্দি ও উর্দু ছবির আমদানি বন্ধ করে দেন৷ এরপর ৭০-এর দশক জুড়ে মৌলিক ছবির বাজার ছিল গর্ব করার মতো৷

১৯৯৭ সালের দিকে দেশীয় চলচ্চিত্রে অশ্লীলতা প্রভাব বিস্তার করে৷ চলচ্চিত্রে অশ্লীলতার হার এতোটাই ভয়াবহছিল যে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন (এফডিসি) প্রায় পুরোটাই ধ্বসের মুখে পড়ে। সেই সময়কারবিএনপি জামায়াত সরকার চলচ্চিত্রের উন্নয়নের জন্য কোনো ধরণের ব্যবস্থা নেয়নি বললেই চলে। ধরা যায়,এফডিসিকে পুরোটাই ছেড়ে দিয়েছিলো নিজ হস্তে চলার জন্য। এরপর ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকারক্ষমতায় আসার আগ পর্যন্ত বাংলা চলচ্চিত্রের অশ্লীলতার প্রভাব লক্ষ্য করা যায়৷ বলা হয়ে থাকে সেই সময়টাহলো বাংলা চলচ্চিত্রের অন্ধকার যুগ। তৎকালীন তত্বাবধায়ক সরকারের কঠোর অভিযান এর পর অশ্লীলতা দূরহলেও সিনেমার সুদিন ফেরেনি। নকল ও মানহীন গল্পের সিনেমা নির্মাণ হয়েছে একের পর এক। ইন্টারনেটেরকল্যাণে সিনেমার গল্প নকল করার জন্য তখন আর ভারতে যাওয়া লাগতো না। ঘরে বসেই ল্যাপটপে হুবহু সিনটু সিন কপি করে তৈরি শুরু হলো স্ক্রিপ্ট। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হলো না।

এরপর ২০০৮ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দমিয়ে দেয়া হয় বাংলা চলচ্চিত্রের অশ্লীলতা। এরপর এখন পর্যন্ত চলচ্চিত্রে অশ্লীল কর্মকাণ্ড হয়না বললেই চলে। তবে মাঝেআবারো অশ্লীল কর্মকাণ্ড মাথাচাড়া দিয়ে উঠার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত সরকারের হস্তক্ষেপে আর সফলতাপায়নি চলচ্চিত্রের পরিচালকরা। এদিকে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর টানা তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগসরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশে যাবতীয় অশ্লীল কর্মকাণ্ড রোধে আরও বেশি কঠোর হতে শুরু করে। অশ্লীলকর্মকাণ্ড রোধে অশ্লীলতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রীমোস্তফা জব্বার। আর এরই পরিপ্রেক্ষিতে নড়েচড়ে বসে বিটিআরসি। ইতোমধ্যে বন্ধ করা হয়েছে প্রায় ২০হাজার অশ্লীল কর্মকাণ্ডে সম্বলিত সাইট। আর সরকারের এই কঠোর তদারকির কারণে খুব দ্রুতই বাংলাচলচ্চিত্রে অশ্লীলতার হার কমে যাবে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।