• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

যেখানে বাস্তবেই রয়েছে রূপকথার গ্রাম!

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৩ মার্চ ২০২০  

ছোটবেলা রূপকথার গল্প শুনেছেন নিশ্চয়! রূপকথার গ্রামগুলো সবুজ, সুন্দর, শান্ত থাকে। আর চারপাশে পাখিদের কলরবে মুখরিত থাকে। সেখানকার মানুষগুলোও বেশ শান্তিতে সেখানে বাস করে। তবে জেনে অবাক হবেন, রূপকথার সেই গ্রামটি শুধু কল্পনাতেই নয় রয়েছে বাস্তবেও।

গ্রামটির নাম গিয়েথুর্ন। নেদারল্যান্ডসের ছোট্ট এবং সুন্দর একটি গ্রাম। সবুজে ঘেরা এই গ্রাম পর্যটকদের কাছেও খুব জনপ্রিয়। তবে এর পেছনেও রয়েছে একটি বিশেষ কারণ।

 

গিয়েথুর্ন গ্রামের একটি দৃশ্য

গিয়েথুর্ন গ্রামের একটি দৃশ্য

যদি ভাবেন, এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য পর্যটকেরা এই গ্রামে বারবার ছুটে আসেন, তাহলে কিছুটা ভুল ভাবছেন। আসলে এই গ্রামে এমন এক বিশেষত্ব রয়েছে, যা বিশ্বের অন্য কোনো গ্রামে নেই। এই গ্রামে যাতায়াতের জন্য কোনো সড়কপথ নেই। সড়ক নেই, তাই কোনো গাড়ি নেই। আর গাড়ি নেই তাই গ্রামে হর্নের কোনো কোলাহলও নেই। সারাদিনই শান্ত থাকে প্রকৃতি।

 

গিয়েথুর্ন গ্রামের একটি দৃশ্য

গিয়েথুর্ন গ্রামের একটি দৃশ্য

নিশ্চয় জানতে ইচ্ছে হচ্ছে- যাতায়াতের যদি রাস্তাই না থাকে, তাহলে গ্রামের মানুষেরা যাতায়াত করেন কীভাবে? সবটাই হয় জলপথে। গ্রামের প্রান্তে প্রান্তে পৌঁছে গেছে জলপথ। আর এই জলপথেই গ্রামের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে পৌঁছে যান বাসিন্দারা। এর জন্য যে নৌকা ব্যবহার করা হয়, গ্রামের শান্ত পরিবেশ বজায় রাখতে তাতে নীরব ইঞ্জিন লাগানো থাকে।

এই বিশেষত্বই গ্রামটাকে অনন্য করে তুলেছে। এই গ্রামে সবচেয়ে জোরে যে শব্দ শোনা যায়, তা হয়তো কোনো হাঁসের ডাক বা অন্য কোনো পাখির ডাক।

 

গিয়েথুর্ন গ্রামের একটি দৃশ্য

গিয়েথুর্ন গ্রামের একটি দৃশ্য

কেন এই গ্রামে কোনো রাস্তা নেই? এই গ্রামকে নেদারল্যান্ডস-এর ভেনিসও বলা হয়। ১২৩০ সালে এই ম্যাজিকাল গ্রামের প্রতিষ্ঠা হয়। এই গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় মাটির নিচে ছোট বড় ফাঁপা অংশ ছিল। গ্রামে মানুষ বসবাস শুরু করার পর, সেগুলো খুঁড়ে বের করতে শুরু করল। বছরের পর বছর ধরে সেগুলো খুঁড়ে বের করার ফলে গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় ছোটখাটো হ্রদ তৈরি হয়। সেগুলোকেই জুড়ে জুড়ে ক্যানাল রোড তৈরি হয়েছে।

 

গিয়েথুর্ন গ্রামের একটি দৃশ্য

গিয়েথুর্ন গ্রামের একটি দৃশ্য

গ্রামের বিভিন্ন দিক থেকে এই ক্যানাল বা খাল চলে যাওযায় গ্রামটাও ছোট ছোট দ্বীপে পরিণত হয়েছে। সেই দ্বীপগুলোর মধ্যে যোগসূত্র তৈরি করেছে ১৫০টিরও বেশি সেতু। এই গ্রামটি বিশ্বের নজরে আসে ১৯৫৮ সালে। ডাচ ফিল্মমেকার বার্ট হান্সট্রা তার কমেডি ফিল্ম ‘ফ্যানফেয়ার’-এর শুটিং এই গ্রামে করার পর।