• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

হলুদ-আদার পানিই ধ্বংস করবে করোনা! দাবি ইন্দোনেশিয়ানদের

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১ এপ্রিল ২০২০  

করোনাভাইরাস বিশ্বব্যাপী এখন এক আতঙ্কের নাম। এর থেকে বাঁচতে যে যার কাছ থেকে যা শুনছে তাই প্রয়োগ করছে। কোনটি সত্যি বা মিথ্যা যাচাই না করেই অনেকে গোমূত্র, চুল ধোয়া পানি পান থেকে শুরু করে গায়ে ছাই পর্যন্ত মাখছেন! 

তবে কখনো কি ভেবে দেখেছেন, আপনি যা করছেন আসলেই সেটি কার্যকরী কিনা! যেখানে বিজ্ঞানীরা এখনো এই ভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কার করতে পারেনি সেখানে এসবের কি আদৌ কোনো ভিত্তি আছে?

ঠিক এমনই এক অদ্ভূত কাজ করছে ইন্দোনেশিয়ানরা। তারা বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট কিংবা জুস বারে গিয়ে গ্লাসের পর গ্লাস ‘জামু’ পান করছে। এটি মূলত হলুদ ও আদা দিয়ে তৈরি একটি বিশেষ পানীয়। ইন্দোনেশিয়ানদের ধারণা, এই জামু পানি পান করলেই তারা করোনামুক্ত থাকবে। 

এ বিষয়ে যদিও তাদেরকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা তবে তারা নিজেদের বিশ্বাসেই অটল। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন জুস বারসহ রেস্টুরেন্টগুলোও জামু পানীয়র বিক্রি বাড়িয়ে দিয়েছে। ক্রেতার সংখ্যাও বাড়ছে দিনকে দিন।

 

জামু পানীয়

জামু পানীয়

যুগ যুগ ধরে ইন্দোনেশিয়ার বাসিন্দারা এই জামু পানীয়টি পান করে থাকে। তাদের মতে, এটি সব ধরনের রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে। এমনকি টিউমার ও ক্যান্সারও ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে এই পানীয়। সেইসঙ্গে এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও বেশ কার্যকরী। 

অ্যাম্বার নামক ৪৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি জানান, আমি প্রায় প্রতিদিনই জামু পান করি। এটি আমার শরীরকে চাঙা রাখে। তার স্ত্রীও জামু পানীয়টি বেশ পছন্দ করেন বলে জানান। তিনি বলেন, গত দুইদিন ধরে আমার খুশখুশে কাশি ও জ্বর ভাব ছিল। এটি পান করার পর থেকে শরীর ভালো লাগছে। আমরা জেনেছি জামু পান করলে নাকি কোভিড-১৯ প্রতিরোধ করা সম্ভব।

অ্যাম্বার জানান, যারা জামু পানীয়ট এরই মধ্যে গ্রহণ করেছেন তারা করোনামুক্ত থাকবেন। কারণ এটি আদা ও হলুদ দিয়ে তৈরি করা হয়। এগুলো ভেষজ ওষুধ হিসেবে পরিচিত। করোনাভাইরাসের সঙ্গে এই উপাদান দুটি লড়াই করতে সক্ষম। যদি কারো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ন্ত থাকে তবে সে এই ভাইরাস থেকে মুক্তি পাবে। আর এই জামু নামক পানীয়টি ইমিউন সিস্টেমকে উন্নত করে। এমনকি যারা হাঁচি, কাশি বা ঠাণ্ডায় আক্রান্ত তারাও এটি পান করে উপকৃত হয়ে থাকেন।

 

জামু বিক্রি করছেন এক বয়স্ক নারী

জামু বিক্রি করছেন এক বয়স্ক নারী

এ বিষয়ে সেখানকার একজন হেমাটোলোজিস্ট ডা. জুবাইরি জরবান বলেন, ইন্দোনেশিয়ান সরকার এরই মধ্যে গুজব না ছড়ানোর বিষয়ে কঠোরভাবে নির্দেশ দিয়েছে। জামুও এর বাইরে নয়। এই বিষয়টি সম্পূর্ণ গুজব ও কাল্পনিক। মানুষের অন্ধবিশ্বাস ছাড়া আর কিছুই নয় এটি। জামু কখনোই করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করতে পারবে না। এমনকি কেউ যদি শারীরিকভাবে শক্তিশালীও হয় তবুও সে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন। 

যেমন- ফুটবলার পাউলো দিবালা ও পাওলো মালদিনি তারা তো শারীরিকভাবে অনেক ফিট অন্যদের চেয়ে, কিন্তু তারাও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে কেউ যদি সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়ে থাকে তবে তার শরীরে করোনার উপসর্গগুলো কম প্রকাশ পাবে। করোনা প্রতিরোধের সবচেয়ে সর্বোত্তম পন্থা হলো হাত ধোয়া, মাস্ক ব্যবহার করা ও সর্বোপরি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা।