• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

ফোন দিলেই ফ্রিতে পৌঁছে যাবে দুধের গাড়ি!

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৯ এপ্রিল ২০২০  

লকডাউন ঘোষণা না হলেও কার্যত বাংলাদেশের সব খাতেই অচলাবস্থা বিরাজ করছে। উন্মুক্ত পথে চলাফেরার সুযোগ নেই। স্বাস্থ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গিয়ে সচেতনতায় বন্ধ হয়ে অনেক হোম সার্ভিস। তার মধ্যে অন্যতম হলো বাড়িতে রোজকার দুধের যোগান। 

বাড়িতে দুধ নিয়ে আসা ব্যক্তিটি বের হতে পারছেন না। এতে ছোট শিশুদের নিয়ে অনেকেই বিপদে পড়েছেন। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে হচ্ছে দুধ। আবার যেসব শিশুরা দুধের ওপর নির্ভরশীল তারা কষ্ট পাচ্ছে। এসব ভুক্তভোগীদের কথা ভেবে ঢাকায় ‘হোম ডেলিভারি’ সেবা দিচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লিমিটেড (মিল্ক ভিটা)।

নির্ধারিত নম্বরে করলে চাহিদামত দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য পৌঁছে যাবে বাসায়। শুধু তাই নয়, পণ্য বাসায় পৌঁছতে কোনো বাড়তি টাকা নেয়া হচ্ছে না। কেবল পণ্যের দাম দিলেই হবে। পণ্য অর্ডার করার নির্ধারিত নম্বরটি হচ্ছে- ০১৯০৪৪৪১১০০

মিল্কভিটার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (যুগ্মসচিব) অমর চান বণিক বলেন, করোনার সংকটকালে জনসেবার অংশ হিসেবে আমরা ঘরে ঘরে পণ্য পৌঁছে দিচ্ছি। কোনো হোম ডেলিভারি চার্জও নিচ্ছি না। মিল্কভিটার পণ্যের প্রতি মানুষের আস্থা রয়েছে। আমরা উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রতিটি পণ্যের গুণগত মান বজায় রাখি। করোনা সংকট কেটে গেলে সারাবছর অনলাইনের মাধ্যমে পণ্য বিক্রির ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

 

বাসায় পণ্য সরবরাহের কাজটি সমন্বয়ের দায়িত্বে আছেন সমবায় বিভাগের উপনিবন্ধক তোফায়েল আহম্মদ। তিনি বর্তমানে প্রেষণে মিল্কভিটায় অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) পদে কর্মরত আছেন। সরাসরি ফোন ধরে ক্রেতার অর্ডার নিচ্ছেন তিনি।

জানতে চাইলে মিল্কভিটার এই উদ্যোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে স্বাধীনতার মাসের শুরু থেকে মিল্কভিটার পণ্য হোম ডেলিভারির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। মিল্কভিটার চেয়ারম্যান শেখ নাদির হোসেন লিপু স্যারের নির্দেশে আমরা এই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। পুরো বছর ধরেই আমরা ক্রেতাদের এই সেবা দিবো। ভবিষ্যতেও এই সেবা চালু রাখার চিন্তা আছে।

করোনা প্রাদুর্ভাবে সাধারণ ছুটির সময়টাতে এই কার্যক্রম আরও জোরদার করা হয়েছে জানিয়ে তোফায়েল আহম্মদ বলেন, মানুষের এখন ঘরে থাকা জরুরি। সেক্ষেত্রে তাদের কাছে খাবার পৌঁছতে হবে। করোনা প্রতিরোধে দুধ খুবই গুরুত্বপূর্ণ খাবার। এ বিষয়টি মাথায় রেখে এই সংকটের মধ্যেও আমরা সেবা চালু রেখেছি।

তিনি আরো বলেন, সাধারণত আমরা ক্রেতাদের কমপক্ষে ৫০০ টাকার পণ্যের অর্ডার করতে বলি। তবে এই সংকটকালীন সময়ে কোনো শর্ত চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে না। ৫০০ টাকার কম অর্ডার করলেও আমরা চাহিদানুযায়ী পণ্য পৌঁছে দিচ্ছি। ডেলিভারি চার্জও ফ্রি। আমাদের ডেলিভারিম্যানরা সব বাধা-বিপত্তি পেরিয়েও নানান পথে গ্রাহকের বাসায় তাদের চাহিদামতো পণ্য পৌঁছে দিচ্ছেন। এ কাজে আমরা পুলিশের সহযোগিতাও কামনা করছি।

গৃহবন্দী মানুষ খাবার না পেলে কী খাবে? অনেক বাসায় বাচ্চারা আছে। তারা দুধের অভাবে কষ্ট পাচ্ছে। আমরা তো জনগণের সেবার জন্যই কাজটি করছি। পুলিশ যদি আমাদের সহযোগিতা না করে তাহলে তো আমরা নির্বিঘ্নে সেবাটি চালিয়ে যেতে পারবো না। এক্ষেত্রে তাদের সহযোগিতা কামনা করি।

মিল্কভিটার পণ্যের মধ্যে রয়েছে, তরল দুধ, টোনড মিল্ক, ফ্লেভার্ড মিল্ক, লাবাং, মাঠা, মাখন, ঘি, ননীযুক্ত গুঁড়াদুধ, ননী বিহীন গুঁড়াদুধ, ক্যান্ডি চকলেট, আইসক্রিম, চকোবার, ললিজ, রসমালাই, মিষ্টি দই, টক দই, রসগোল্লা, কাঁচা সন্দেশ, প্যারা সন্দেশ, মোজারেলা চিজ।

ঘরে বসে যারা পণ্য পেয়েছেন তাদের অনেকেই বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুলে ধরে প্রশংসা করেছেন। সংকটকালে রাষ্ট্রায়ত্ত সমবায় ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মিল্কভিটার এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন তারা।