• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

একজন মানুষই আস্ত খেয়েছেন হাজার জনকে!

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২৪ এপ্রিল ২০২০  

মানুষ কীভাবে মানুষকে খায়? তা অবশ্য জানে শুধু নরখাদকেরাই! পৃথিবীতে এ পর্যন্ত অনেক নরখাদকদের সন্ধান পাওয়া গেছে। 

ফিজি, আমাজন জঙ্গলে ও আফ্রিকার কঙ্গোসহ নিউজিল্যান্ডের মাওরি জনগোষ্ঠীর মধ্যে মিলেছে এমন মানুষের সন্ধান। এমনকি নরখাদকের সন্ধান মিলেছে ইউরোপের হল্যান্ডেও। শোনা যায় উগান্ডার স্বৈরাচারী রাষ্ট্রনায়ক ইদি আমিনও নাকি মানুষের মাংস খেতেন।

 

রাতু উদ্রে উদ্রে

রাতু উদ্রে উদ্রে

তবে পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বর্বরতম নরখাদক কে ছিলেন তা কি জানেন? পৃথিবীর সেরা নরখাদক হিসেবে পরিচিত তিনি। এমনকি তার নাম উঠেছে গিনেস বুকেও। ভাবা যায়, নরখাদকের নামও উঠেছে গিনেস বুকে!  ১৯ শতকের দিকে বিখ্যাত ওই নরখাদক ছিলেন ফিজির এক আদিবাসী সর্দার। তার নাম রাতু উদ্রে উদ্রে। প্রায় হাজারের কাছাকাছি মানুষকে তিনি আস্ত খেয়ে ফেলেছিলেন।

প্রত্যেকটি মানুষকে খাওয়ার পর এই নরখাদক তার শিকারের স্মৃতিতে একটি করে পাথর সাজিয়ে রাখতেন। পরবর্তীতে আবার সেগুলো নিজে গুণতেন। সর্দারের বাসনা ছিল মৃত্যুর পর যেন পাথরগুলোও তার সমাধির পাশেই রাখা হয়। তার ইচ্ছা অনুযায়ী মৃত্যুর পর উত্তর ভিটিলেভুর রাকিরাকি এলাকায় এক পাথরের স্তূপের মধ্যেই সমাধিস্থ করা হয়েছিল সর্দারকে।

 

বয়স্ক রাতু

বয়স্ক রাতু

১৮৪০ সালে মিশনারি রিচার্ড লিথ ফিজিতে উদ্রের সমাধির পাশ থেকে ৮৭২ টি এরকম পাথর পেয়েছিলেন। লিথ মনে করেন, আরো বেশি পাথর ছিল সমাধির পাশে। পরবর্তীকালে, স্থানীয়রা নিজেদের প্রয়োজনে অনেক পাথর সরিয়ে নিয়েছিল। উদ্রের এক ছেলের সন্ধান পেয়েছিলেন লিথ, তার নাম ছিল রাভাতু। যদিও তার ছেলে নরখাদক ছিল না। 

নরখাদক উদ্রের নিশানা ছিল ফিজির আদিবাসী গোষ্ঠীর সংঘর্ষে হেরে যাওয়া যুদ্ধবন্দীরা। লিথকে উদ্রের ছেলে রাভাতু বলেছিল, তার বাবা মানুষের মাংস ছাড়া আর কিছু খেত না। মানুষদের পুরো শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গই আগুনে ঝলসে খেতেন তিনি। একেবারে পুরোটা দেহ খেতে না পারলে বাকিটা একটি বাক্সে তুলে রাখতেন। পরে আবার সেটি আগুনে ঝলসে খেতেন।

 

পাথরে ঘেরা তার সমাধি

পাথরে ঘেরা তার সমাধি

অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লরেন্স গোল্ডম্যান তার একটি বইয়ে নরখাদক মানুষদের নিয়ে লিখেছেন। সেই বইটিতে সর্দার উদ্রে সম্পর্কেও বিশদভাবে আলোচনা করা হয়েছে। ‘অ্যানথ্রোপোলজি অব ক্যানিবলিজম’  নামক বইটির শেষ কয়েকটি লাইনে লেখক ভয়ানক মন্তব্য করে লিখেন, নরখাদক মানুষগুলোকে আমরা সবাই ভয় পাই।

তবে একইসঙ্গে তারা প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য। কারণ তারা শক্তির প্রতীক। নিজেদের বীরত্ব ওরা এভাবেই প্রমাণ করতে চেয়েছে হাজারো বছর ধরে। যদিও লেখকের এই মন্তবের কারণে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল পৃথিবীতে। পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে নৃশংসতম নরখাদক মানুষ  হিসেবে স্বীকৃতি পায় উদ্রে। মৃত্যুর পরে হলেও গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে উঠে আসে তার নাম।