• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

বার্ধক্যে চনমনে থাকতে চাইলে করণীয়

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৮ ডিসেম্বর ২০১৮  

প্রকৃতির নিয়মে বয়স বেড়েই চলেছে। কৈশোর ও যৌবন পেরিয়ে এখন অনেকেই এগিয়ে চলেছে বার্ধক্যের দিকে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে তেজ কমতে থাকে রক্তের। প্রবণতা আসে হৃদরোগের। পেশীতে শিথিলতা, ব্যথার মতো সমস্যাকে স্বাভাবিক বলেই মেনে নেন সবাই। ম্লান হয়ে সিঁটিঁয়ে যাওয়া ত্বকে বার্ধক্যের পায়ের আওয়াজ শুনেও হাল ছেড়ে দিয়ে অপেক্ষা করা ছাড়া গতি থাকে না। অথচ এই সব সমস্যারই সমাধান হতে পারে গোসলে। তবে যে সে গোসল নয়।

গরম বাষ্প শরীরের বিশেষ করে শ্বাসতন্ত্রের শ্লেষ্মা ছিল্লির বন্ধ মুখ খুলে দেয়। ফলে বুক ভরে শ্বাস নেয়া যায়। সর্দি বা সাইনাসের সমস্যায় এই চিকিৎসা পদ্ধতি বিশেষ আরাম দেয়। জিম করার ফলে এমনি হার্টরেট বেশি থাকে। সেই সঙ্গে স্টিম রুমে ঢুকলে আর্দ্র উষ্ণতায় তা বজায় থাকে। যার প্রভাবে শরীরে রক্ত চলাচলও বাড়ে। ফলে শরীরের অন্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও সক্রিয় হয়ে ওঠে। যার প্রভাবে দেহের অতিরিক্ত ফ্যাট পুড়ে ওজন হ্রাস পায়। আর আপনি হয়ে ওঠেন স্লিম অ্যান্ড ট্রিম।

এভাবেই শরীরের বয়স কমিয়ে বার্ধক্যেও যৌবনকে বেধে রাখতে পারে বাষ্পের উষ্ণতা। সেই সঙ্গে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে সক্রিয় করে পরমায়ু বাড়াতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে স্টিম-বাথ। আর্দ্র বাষ্পের উষ্ণতায় অবগাহন। সোজা কথায় যাকে বলে স্টিম বাথ। অর্থাৎ বাষ্প গোসল। বার্ধক্যেও চনমনে বোধ করার জন্য এমন উষ্ণতার দাওয়াই দিচ্ছেন চিকিৎসকরাই। বলছেন, সিক্ত বাষ্পের উষ্ণ স্পর্শেই যৌবনের উষ্ণতা ফিরে পেতে পারে শরীর। চিকিৎসকদের দাবি, স্টিম বাথ বাষ্প স্নান করলে বয়স্কদের হৃদ-সংবহনতন্ত্র অর্থাৎ কার্ডিওভাস্কুলার সিস্টেম চাঙ্গা হয়ে যায়। কীভাবে?

২০১২-র একটি গবেষণার কথা । তাতে দেখা গিয়েছে, আর্দ্র উষ্ণতায় শরীরের সূক্ষ সূক্ষ রক্তবাহগুলি প্রসারিত হয়। ফলে সহজেই তাতে রক্ত সংবাহিত হতে পারে এবং দেহের বিভিন্ন প্রান্তে অক্সিজেন পৌঁছে দিতে পারে। আর এই অতিরিক্ত অক্সিজেনেই চাঙ্গা হয় শরীর। শুধু তাই নয়, রক্তবাহ প্রসারিত হওয়ায় রক্তের চাপও কমে ফলে সুস্থ ও সতেজ থাকে হার্ট। শুধু হার্টের কথাই বা বলা কেন? চনমনে হৃদয়ের প্রভাবে চমক লাগে ত্বকেও। বিশেষজ্ঞদের দাবি, আর্দ্র বাষ্প চামড়াকে ঘামায়, আর ঘাম বেরিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গেই লোমকূপগুলি পরিষ্কার হয়ে যায়। ফলে ময়লা ও মরা চামড়া সরে ত্বক হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত।

অতিরিক্ত পরিশ্রমে পেশীর ব্যথা যখন কষ্ট দেয় তখনও বাষ্প-স্নান আরাম দেয়। আবার শারীরিক পরিশ্রমের আগে বাষ্পস্নান পেশি সন্ধির আড়ষ্ঠতা কমিয়ে নমনীয় করে তোলে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে আর্দ্র বাষ্পের প্রভাবে এন্ডরফিন হরমোন ক্ষরণ বেড়ে যায়। যা শারীরিক ও মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। আবার একই ভাবে দেহে কর্টিসল ক্ষরণ কমিয়ে স্ট্রেস মুক্তি ঘটায়।

তবে শুষ্ক বাষ্প এড়াতে পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। তাদের দাবি, ড্রাই স্টিম বাথ বা সওনা শরীরের জলের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। তাই ১৫-২০ মিনিটের বেশি শুষ্ক-বাষ্প ঘরে থাকলে ডিহাইড্রেশন হতে পারে। বদলে সিক্ত বাষ্প আপনাকে করে তুলবে প্রাণবন্ত ও আকর্ষণীয়। তবে আমজনতার পক্ষে রোজ রোজ বাষ্প স্নানের সুযোগ কোথায়! বিশেষ করে চিকিৎসা সংক্রান্ত সুফল পেতে স্টিম রুমের উষ্ণতা যেমন ১১০ থেকে ১১৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটের মধ্যে বেঁধে রাখা জরুরি তেমনই ঘরের আর্দ্রতা ১০০ শতাংশই যেন বজায় থাকে সেই দিকেও নজর রাখা জরুরি বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। সেক্ষেত্রে নিয়মিত গরম পানিতে একটু সময় নিয়ে গোসল কিছুটা হলেও ভাল থাকতে সাহায্য করবে আপনাকে।