• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

সুরক্ষা সামগ্রী ছাড়া কাজ করেও করোনায় আক্রান্ত হননি কোনো কর্মী

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২৩ জুলাই ২০২০  

নগর পরিচ্ছন্ন রাখাই তাদের কাজ। গায়ের জরাজীর্ণ পোশাকে লেখা ‘সেবক’। কেউ আবার তাদের ডাকে পরিচ্ছন্নকর্মী বলে। করোনা মহামারির মাঝেও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখতে কাজ করছেন সাড়ে তিন হাজার ‘সেবক’। সুরক্ষাসামগ্রী ছাড়া কাজ করলেও করোনার প্রাদুর্ভাবের চার মাসে আক্রান্ত হননি কেউ।

বৃহস্পতিবার রাতে ডেইলি বাংলাদেশকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন বিভাগ। যেখানে আমলা-শিল্পপতিরাও করোনার কবল থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না সেখানে পরিচ্ছন্নকর্মীদের করোনামুক্ত থাকা সত্যিই সুখবর। তবে অসন্তোষ ফুটে উঠেছে চসিকের পরিচ্ছন্নকর্মী শিপক নাথের কণ্ঠে।

তিনি বলেন, বাসা-বাড়ির বর্জ্যে ব্যবহৃত মাস্ক আর হ্যান্ড গ্লাভস থাকে। এছাড়া যেসব করোনা রোগী বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদের ব্যবহৃত বর্জ্যও বাসার ডাস্টবিন হয়ে আমাদের সংস্পর্শে আসছে। তাহলে কি আমরা ঝুঁকিমুক্ত? আমাদের দুইমাস আগে দুটি করে কাপড়ের মাস্ক ও একটি করে হ্যান্ড গ্লাভস্ দেয়া হয়েছিল। সেগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। সেই থেকে এখন পর্যন্ত আমরা কোনো সুরক্ষা সামগ্রী পাইনি।

চসিকের উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোরশেদ আলম চৌধুরী জানান, করোনার এই সময়ে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে সেবকরা। তবে এখনও পর্যন্ত
কোনো সেবক করোনায় আক্রান্ত হননি। কাউন্সিলরদের উদ্যোগে তাদের মাঝে মাস্ক সরবরাহ করা হলেও তা পর্যাপ্ত নয়।

চসিকের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমনের দাবি, সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত এসব পরিচ্ছন্নকর্মীকে গাউন, হ্যান্ড গ্লাভস, গামবুট ও মাস্ক দেয়া হয়েছে। তাদের কাছে সব ধরনের নিরাপত্তা সামগ্রী রয়েছে। তবে তারা এসব ব্যবহারে আগ্রহী নয়। আমরা নিয়মিত সেবক কলোনিগুলোর খোঁজ রাখছি। এখন পর্যন্ত কোনো সেবক কিংবা তাদের পরিবারের সদস্য আক্রান্ত হননি।

সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন বিভাগ জানিয়েছে, প্রতিদিন প্রায় ৬০ লাখ নগরবাসীর বর্জ্য অপসারণে কাজ করেন তিন হাজার ৮২৬ জন পরিচ্ছন্নকর্মী। সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দিন দায়িত্ব নিয়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেন। দিনে পরিচালিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে রাতে নিয়ে যান। এ পরিকল্পনায় তিনি ‘ডোর-টু-ডোর’ বর্জ্য সংগ্রহ প্রকল্পও হাতে নেন।

২০১৭ সালে ‘ডোর-টু-ডোর’ বর্জ্য সংগ্রহ কার্যক্রমের আওতায় দৈনিক ভিত্তিতে এক হাজার ৯৭২ জন পরিচ্ছন্নকর্মী নিয়োগ দেয়া হয়। নগরের ৪১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৪টি কনজারভেন্সি ও ১৭টি নন-কনজারভেন্সি ওয়ার্ডে ‘ডোর-টু-ডোর’ বর্জ্য সংগ্রহের পাশাপাশি এসব কর্মী সড়ক ও নালা-নর্দমা পরিষ্কারের কাজও করেন। তাদের বসবাসের জন্য রয়েছে চসিকের মালিকানাধীন চারটি কলোনি। জামালখান এলাকার ঝাউতলা কলোনিতে ১০০ পরিবার, বান্ডেল কলোনিতে ৩০০ পরিবার, ফিরিঙ্গিবাজার কলোনিতে ৫০টি পরিবার, মাদারবাড়ি কলোনিতে ১৫০টি পরিবার, হালিশহরে ৪০টি পরিবার বাস করে। হালিশহর কলোনি ছাড়া বাকি সব কলোনির পরিচ্ছন্নকর্মীরা হরিজন সম্প্রদায়ের।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকে তিন শিফটে নালা-নর্দমা পরিষ্কার, ‘ডোর-টু-ডোর’ বর্জ্য সংগ্রহ, সেগুলোকে নির্দিষ্ট গ্রাউন্ডে নেয়ার কাজ করেন চসিকের এসব পরিচ্ছন্নকর্মী।