• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয় পুরস্কারজয়ী পরিচালকের মাথায় গোবরপানি

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২৭ জানুয়ারি ২০১৯  

শবরীমালা মন্দির ইস্যু নিয়ে একের পর এক বিতর্কিত ঘটনার জন্ম দিচ্ছে ভারত। এর আগে শরবীমালা মন্দিরে ঢোকার কারণে শ্বশুরবাড়িতে প্রবেশ করতে পারেননি এক নারী। এবার মন্দিরটি নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় গোবরমিশ্রিত পানি এসে পড়ল গায়ে। শবরীমালা বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের মতামত ব্যক্ত করায় শুক্রবার সকালে সন্দেহভাজন ডানপন্থী সমর্থকদের হাতে নিগৃহীত হয়েছেন জাতীয় পুরস্কার বিজয়ী পরিচালক প্রিয়নন্দন।

পুলিশের উদ্ধৃতি দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, প্রিয়নন্দনের বাড়ির কাছেই ঘটনাটি ঘটে। পরিচালককে মারধর করা হয় এবং তার ওপর গোবরমিশ্রিত পানি ঢেলে দেয়া হয়। বিষয়টির তদন্ত চলছে।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে পরিচালক প্রিয়নন্দন জানান, আক্রমণকারী ব্যক্তিটি এগিয়ে এসে তাকে জিজ্ঞাসা করে, আপনি কি আমাকে চিনতে পারছেন? তিনি বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছিল ওই ব্যক্তি আমার জন্যই অপেক্ষা করছিল। সে আমার পিছু পিছু আসে এবং আমাকে মারধর করে। একপর্যায়ে গায়ে গোবরমিশ্রিত পানি ছুঁড়ে মারে।’ সকাল ৯টার দিকে ঘটনাটি ঘটে বলে তিনি জানান।

প্রিয়নন্দন বলেন, ‘সাধারণত আমি এই বিশেষ রুটে প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ হাঁটতে যাই, কিন্তু আজ সামান্য দেরি হয়ে যায়। এটি একজন মানুষের আক্রমণ নয়, এর পেছনে অন্যরাও রয়েছে।’

৫৩ বছর বয়সী পরিচালকের দ্বিতীয় ছবি ‘পুলিজন্মা' ২০০৬ সালে সেরা ফিচার ফিল্মের জাতীয় পুরস্কার পায়। তার দাবি, শবরীমালা মন্দিরের বিষয়ে সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেছিলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ডানপন্থী সমর্থকরা এই আক্রমণ চালিয়েছে।

২৮ সেপ্টেম্বর সুপ্রিমকোর্টের রায় দেয় যে, সব বয়সের নারীদের মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি রয়েছে। পরে এ বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে একটি পোস্ট দেন পরিচালক। এতে ডানপন্থী বাহিনীর হুমকির মুখে পড়েন তিনি। পরে ওই পোস্ট সরিয়ে নেন প্রিয়নন্দন।

হামলার নিন্দা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারায়ি বিজয়ন। তিনি বলেন, ‘এটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি হামলা। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের মত প্রকাশ করেছেন বলেই আজ তার প্রতি এমন নিন্দনীয় আক্রমণ করা হলো। তার পোস্টের পরেই তিনি সাইবার আক্রমণের শিকার হন। এ সহ্য করা হবে না এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

বামপন্থী ভাবনায় বিশ্বাসী প্রিয়নন্দন তার চলচ্চিত্রের কর্মজীবন শুরু করেন পরিচালক কে আর মোহনান এবং পিটি কুঞ্জু মহাম্মদের সহকারী পরিচালক হিসেবে।

২০০১ সালে তিনি তার প্রথম ফিচার ফিল্ম পরিচালনা করেন এবং আজ পর্যন্ত সাতটি চলচ্চিত্রের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। অসংখ্য তথ্যচিত্রও তৈরি করেছেন প্রিয়নন্দন।