• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

ঝড়-বৃষ্টিতে বাইক চালানোর ক্ষেত্রে কিছু সাবধানতা

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৩ জুলাই ২০২১  

চলার পথকে দ্রুত ও সহজ করতে আজকাল অধিকাংশ মানুষই মোটরসাইকেল বা বাইক ব্যবহার করেন। শহুরে জীবনে যারা অভ্যস্ত, তারা দেশের ট্রাফিক সম্পর্কে বেশ ভালো ধারণা রাখেন। তাইতো যান্ত্রিক এ শহরে ট্রাফিক জ্যাম এড়াতে বাইকের উপরই ভরসা রাখেন বেশিরভাগ মানুষ। বিশেষ করে চাকরিজীবীরা।

শুধু তাই নয়, সময় বাঁচাতে এখন মানুষ রাইড শেয়ারিং অ্যাপস এর মাধ্যমে মোটরসাইকেল ভাড়া করে বিভিন্ন জায়গায় যান। তবে রাইড শেয়ারিং মোটরসাইকেল হোক কিংবা নিজের, এই বর্ষার মৌসুমে বাইক চালানোর ক্ষেত্রে কিছু সাবধানতা মেনে চলা অবশ্যই জরুরি। নইলে এই ঝড়ো আবহাওয়ায় বাতাসের দাপট কিংবা বৃষ্টিতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাওয়ার কারণে দুর্ঘটনা ঘটে মৃত্যুও হতে পারে।

এমন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রান পাওয়ার রয়েছে কিছু সহজ উপায়। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক সেই উপায়গুলো-

>> যখনই আপনি দেখবেন তীব্র বাতাস শুরু হয়েছে তখনই আপনার প্রথম কাজ হবে বাইকটি থামিয়ে নিরাপদ জায়গায় পার্ক করা এবং নিজে একটি নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়া। সাধারনত এরকম তীব্র বাতাসের সঙ্গে প্রচুর ধূলো উড়ে আসে, কাজেই সেগুলো সম্পর্কে সাবধানে থাকুন এবং হেলমেট এর ভাইজর নামিয়ে রাখতে ভুলবেন না!

>> ঝড়ের মধ্যে রাইড করার সিদ্ধান্ত খুবই খারাপ। বাতাসের প্রচন্ড বেগ, ভারী বর্ষণ এবং ধূলো সবকিছু মিলিয়ে ঝড়ের মাঝে বাইক রাইড করলে দুর্ঘটনা হওয়ার প্রবনতা বেশি থাকে। তাই একজন সচেতন রাইডার এর উচিত ঝড়ের মধ্যে রাইড করা থেকে বিরত থাকা।

অনেক ক্ষেত্রেই ঝড়ে থেমে থাকার মতো সময় আমাদের হাতে থাকে না এবং অনিচ্ছাসত্ত্বেও আমাদের ঝড়ের মধ্যেই বাইক রাইডিং করতে হয়। এরকম পরিস্থিতিতে এগুলো মেনে চললে কিছুটা হলেও সুবিধা পাওয়া যাবে-

>> ঝড়-বৃষ্টির মৌসুমে বাইকের টায়ার প্রেশার ক্যাটালগে যেটি দেয়া আছে তা থেকে কিছুটা কম রাখুন। এর ফলে ঝড়ের মধ্যে রাস্তায় ভালো গ্রিপ পাওয়া যাবে।

>> যখনই ঝড় শুরু হবে, আপনার বাইকের গতি কমিয়ে আনুন এবং সাবধানতার সঙ্গে রাইড করুন। কারণ ঝড়ো বাতাস এবং বৃষ্টিভেজা রাস্তায় আপনার বাইক খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলতে পারে। কাজেই, ঝড়ের সময় খুবই কম গতিতে বাইক চালান এবং যেকোনো ঝূকিপূর্ণ ওভারটেক ও লেন পরিবর্তন থেকে বিরত থাকুন।

>> ঝড়ো আবহাওয়ায় হঠাৎ ব্রেক না করে খুবই ধীরে ব্রেক করুন। যেহেতু রাস্তা বৃষ্টিতে ভিজে খুবই পিচ্ছিল হয়ে পড়ে তাই হঠাৎ ব্রেক করলে বাইকের টায়ার পর্যাপ্ত গ্রিপ দিতে পারে না এবং দুর্ঘটনা ঘটে। কাজেই, বৃষ্টি এবং ঝড়ের সময় ধীরগতিতে ব্রেক করুন যাতে টায়ারে অধিক প্রেশার না পড়ে।

>>  অধিকাংশ সময়েই বৃষ্টি বা ধূলো নয়, বরং ঝড়ো বাতাস রাইডারকে বিপদে ফেলে দেয়। সাধারনত ঝড়ের সময় প্রচন্ড জোরে বাতাস বয় এবং ঝড়ো বাতাসের গতিবিধি পরিবর্তন হয়। কাজেই, বাতাসের গতিবিধি লক্ষ্য রাখুন যাতে করে সামনে/পেছনে/পাশ থেকে হঠাৎ করে ঝড়ো বাতাস এসে বাইকের কন্ট্রোলিং এর কোনো প্রকার প্রভাব না ফেলে।

>> যেহেতু এই মৌসুমটি খুবই অনিশ্চয়তায় ভরপুর এবং খা খা রোদের দুপুরেও হঠাৎ করে তীব্র ঝড় বা বৃষ্টি শুরু হয়ে যেতে পারে, তাই আপনার উচিত নিজেকে যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত রাখা। কাজেই, সর্বদা রেইনকোট বহন করুন। যে কোনো ঝড়ের পরিস্থিতিতে এটা আপনাকে শুকনো রাখবে এবং ধূলিঝড় এর ক্ষেত্রে আপনাকে ধূলোবালি থেকে সুরক্ষা দেবে।

>> একজন বাইকারের প্রথম প্রায়োরিটি হওয়া উচিত একটি ফুল ফেস হেলমেট। একটি ফুল ফেস হেলমেট শুধুমাত্র দুর্ঘটনা থেকেই সুরক্ষা দেয় না বরং তীব্র বাতাস, ধূলোবালি এবং বৃষ্টি থেকেও রাইডারকে রক্ষা করে। হাফ ফেস হেলমেট এর ক্ষেত্রে বিশাল সম্ভাবনা আছে যে হেলমেট এর ভেতরে ধূলোবালি এবং বৃষ্টির পানি প্রবেশ করবে, তবে একটি ফুল ফেস হেলমেট এ সবকিছু থেকেই রাইডারকে সম্পূর্ন সুরক্ষা দেয়।

পরিশেষে, একজন অভিজ্ঞ রাইডারও বৃষ্টিতে রাইড করার সময় সমস্যায় পড়তে পারে। কাজেই ঝড়ো আবহাওয়ায় রাইড করা থেকে বিরত থাকাই সেরা সিদ্ধান্ত। তবে যদি একান্তই কেউ ঝড়ো আবহাওয়াতে রাইড করতে বাধ্য হয়, তবে অবশ্যই উপরের বর্ণিত নিয়মগুলো অনুসরণ করতে পারেন। সবসময় সাবধানতার সঙ্গে রাইড করুন এবং অবশ্যই সর্বদা হেলমেট পড়ে বাইক রাইড করুন।