• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

ইজ্জত রক্ষার স্বার্থে বিএনপি যা করতে পারে!

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২২ মে ২০১৯  

সম্প্রতি বিএনপির রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও কর্মকাণ্ড নিয়ে নিজের ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন সদ্য বিএনপিতে যোগদান করা গোলাম মাওলা রনি। তার স্ট্যাটাসটি বিডি২৪লাইভের পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হল-

বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্যদের শপথ গ্রহন, মহিলা এমপি পদে মনোনয়ন এবং বগুড়া উপ নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে বিএনপি রীতিমতো বেইজ্জতি হবার মতো অবস্থায় পড়েছে।

সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপি ফিসফাস করে যা কিছু বলার চেষ্টা করছে তা সবকিছুই দলটির জন্য বুমেরাং হচ্ছে। ফলে বিএনপি দীর্ঘদিনের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দলটি কর্মী সমর্থকদের হতাশা-ক্ষোভ, বিরোধীদের করুনা-দয়া-দাক্ষিন্য এবং সাধারন জনগনের হাসি-তামসা ও তুচ্ছ তাচ্ছিল্যের কবলে পড়ে রীতিমতো বস্ত্রহীন হয়ে পড়ার মতো অবস্থায় উপনীত হয়েছে।

দলীয় এমপিদের শপথ গ্রহনের সপক্ষ্যে বিএনপি যতোই কৌশলের কথা বলুক না কেন তা কিন্তু কোন পক্ষের নিকটই বিশ্বাস যোগ্য মনে হচ্ছে না। জনগন এটিকে বিএনপির দূর্বলতা, সিদ্ধান্ত হীনতা অথবা দলীয় এমপিদের অবাধ্যতা ও ব্যক্তিগত লোভ লালসা বলেই বিবেচনা করছে। জনগন মনে করছে যে, ঢাকা শহরে বিনামূল্যে বিলাসবহুল আবাসন, ট্যাক্স ফ্রি গাড়ী, লোভনীয় বেতন ভাতা, টি আর কাবিখার হাতছানি ও ক্ষমতার লোভের কবলে পড়ে বিএনপি দলীয় এমপিরা দলীয় আনুগত্য, শৃঙ্খলা ও সিদ্ধান্ত পায়ে মাড়িয়ে শপথ গ্রহনে দশপায়ে খাড়া হয়ে ছিলো যা সামলে দেয়ার জন্য বিএনপি হয়তো আনুষ্ঠানিক ভাবে স্বীকার করেছে যে, তাদের অনুমতি সাপেক্ষে এমপিরা শপথ নিয়েছে।

উপরোক্ত অশ্বস্তিকর ও অসম্মানজনক জনমতকে সামলে দেয়ার জন্য বিএনপির এমপিরা একযোগে ঘোষনা দিতে পারে যে, আমরা জাতীয় সংসদের মতো জাতীয় সম্পদকে রাতের আধারের ভোট কার সাজির জনকদের নিকট বিনা শর্তে লিজ দিতে পারি না। তাই প্রতিবাদের জন্যই সেখানে যাবো এবং সেই প্রতিবাদের কারনে এমপিদের জন্য বরাদ্ধকৃত বেতন ভাতা, সুযোগ সুবিধা গ্রহন করবো না । আমরা টি-আর, কাবিখার মতো কর্মকান্ডে জড়াবো না অথবা স্থানীয় সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে উপজেলায় গিয়ে ইউ. এন. ও, উপজেলা চেয়ারম্যান, ও চেয়ারম্যানদের ক্ষমতা ও কর্তৃত্বে ভাগ বসাবো না। আমরা শুধু সংসদ অধিবেশনে যোগদান করে সরকারের অবৈধ কর্মকান্ডের ফিরিস্তি জাতির সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করবো।

বিএনপি দলীয় এমপিরা যদি উপরোক্ত ঘোষনা দিতে রাজী না হয় তবে দলের হাই কমান্ড তাদের দলীয় এমপিদের সঙ্গে চমৎকার একটি পলিটিক্স করতে পারে। তারা সংবাদ সম্মেলন করে উল্লেখিত বিষয়গুলোকে দলীয় সিদ্ধান্তরূপে জাতির নিকট তুলে ধরলে লোভীদের লোভের মুখে চুনকালি পড়ে যাবে।

বগুড়া উপ নির্বাচন সম্পর্কেও বিএনপি পলিটিক্স করতে পারে। তারা তাদের দলের বিশ্বস্ত, গ্রহনযোগ্য এবং জাতীয়ভাবে পরিচিত ও জনপ্রিয় কাউকে মনোনয়ন দিতে পারে এই শর্তে যে, নিরাপত্তা জনিত কারন এবং অতীতের ভোট ডাকাতির কারনে প্রার্থী মাঠে যাবে না এবং কোন ভোট কেন্দ্রে এজেন্টও দেবে না। এই অবস্থায় নির্বাচন কমিশন, সরকার ও আওয়ামীলীগ কি করে তা জাতির নিকট পুনরায় তুলে ধরার জন্যই কেবল প্রার্থী মনোনয়ন দেয়া হলো।

উপরোক্ত অবস্থায় যদি প্রতিদ্বন্দ্বি আওয়ামীলীগের প্রার্থীর সঙ্গে আরো কিছু স্বতন্ত্র প্রার্থী যোগ হয় এবং সেই দলে বিখ্যাত হিরো আলম স্যার যদি থাকেন তবে নিদারুন এক খেলা জমে উঠবে। পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য রাতের আধারের ভোট ডাকাতদের হার্টবিট বেড়ে যাবে। তারা যদি মোটা মাথার বুদ্ধিযুক্ত হয় তবে হিরো আলম স্যার কে ঠেকানোর জন্য সরকারদলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবে। অন্যদিকে, তারা যদি সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকে এবং তাদের গডফাদারদের যদি কোন নিষেধাজ্ঞা না থাকে তবে তারা বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবে।

সার্বিক অবস্থায় বগুড়া উপনির্বাচন শেষ মেষ কেমন হবে তা আমি জানিনা। তবে আমার নেতা এবং এই মুহুর্তের জাতীয় বিবেক ও আমাদের মন মানসিকতার বিমূর্ত প্রতীক জনাব হিরো আলম স্যার যদি সংসদ সদস্য হিসেবে মহান জাতীয় সংসদ আলোকিত করতে পারেন তবে মন্দের ভালো হিসেবে বিএনপির জন্য কিছুটা হলেও ইজ্জত রক্ষা হবে।