• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

মানিকগঞ্জ পৌর মেয়রসহ চারজনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১৫ জুন ২০২২  

মানিকগঞ্জ পৌরসভার মেয়র রমজান আলীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা চারটি মামলার তিনটিতে চার্জ গঠন হয়েছে। 

গত ১৭ ও ২৫ মে জেলার সিনিয়র স্পেশাল জজ জয়শ্রী সমদ্দার এ অভিযোগ গঠন করেন। 

চলতি বছরের অক্টোবরের মধ্যে হাইকোর্ট মামলাগুলো নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন দুদকের পিপি আজিজ উল্লাহ। 

মেয়র রমজান ছাড়াও আরও যাদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়েছে, তারা হলেন- পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার মো. ইকবাল হোসেন, ৬নং ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার মো. হামিদুর রশিদ কাজল, মেঘনা মোটর ওযার্কসের প্রোপাইটার মো. আব্দুল আওয়াল ও মেসার্স মহুয়া কনস্ট্রাকশনের মালিক বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম মট্টু।

চার্জ গঠন হওয়া দুদকের মামলাগুলোর একটির নথি থেকে জানা গেছে, ১৯৯৮ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কাঁচাবাজারের দক্ষিণের খাদ ভরাটের কাজ দেওয়া হয় মেসার্স মহুয়া কনস্ট্রাকশনের মালিক বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম মট্টুকে। 

পৌরসভার দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের বাধা সত্ত্বেও মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়াই পৌরসভার তৎকালীন চেয়ারম্যান রমজান আলী একই কাজ বারবার বর্ধিত করে ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশ করে তিন লাখ ২৫ হাজার ৩৩০ টাকা আত্মসাৎ করেন। 

আরেকটি মামলার বিবরণীতে বলা হয়েছে- তৎকালীন চেয়ারম্যান রমজান আলী ৬নং ওয়ার্ডের কমিশনার হামিদুর রশিদ কাজলের যোগসাজশে ২০০৪ সালে পৌরসভার জিপ (মানিকগঞ্জ ম-০২-০০০১০) মেরামতের নামে দুটি চেকের মাধ্যমে এক লাখ টাকা অগ্রিম নিয়ে পরবর্তীতে সমন্বয় না করে ওই টাকা আত্মসাৎ করেন। 

এরপর ২০০৬ সালে হামিদুর রশিদ কাজল জিপগাড়ি মেরামতের জন্য দুটি চেকের মাধ্যমে আরও এক লাখ টাকা অগ্রিম নিয়ে আত্মসাৎ করেন। 

এ ঘটনায় আসামিদের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ৩০ এপ্রিল তৎকালীন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল মাজেদ বাদী হয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানায় এ মামলা করেন।

দুদকের আরেক সহকারী পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম মামলাটি অধিকতর তদন্ত করে মেয়র রমজান আলী, সাবেক কমিশনার মো. হামিদুর রশিদ কাজল ও মো. ইকবাল হোসেন, মেঘনা মোটর ওয়ার্কসের প্রোপাইটার মো. আব্দুল আওয়ালকে আসামি করেন। এরপর ২০০৮ সালে ৩ ডিসেম্বর আদালতে  অভিযোগপত্র দাখিল করেন তিনি।

দুদকের অপর মামলার নথি থেকে জানা গেছে, ১৯৯৮ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত  মানিকগঞ্জ পৌর সুপার মার্কেটের দক্ষিণের জায়গা ভরাটের কাজ দেওয়া হয় মেসার্স মহুয়া কনস্ট্রাকশনের মালিক বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম মট্টুকে। 

পৌরসভার দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের বাধা সত্ত্বেও মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়াই তৎকালীন পৌর মেয়র রমজান আলী একই কাজ বারবার বর্ধিত করে ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজেশ করে পৌরসভার তহবিল থেকে ৪ লাখ ২২ হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাৎ করেন। 

এ ঘটনায় তৎকালীন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল মাজেদ বাদী হয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানায় ২০০৭ সালের ৩ মে মামলা করেন।

দুদকের সহকারী পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম মামলাটি তদন্ত করে পৌর মেয়র রমজান আলী ও ঠিকদার আমিরুল ইসলাম মট্টুকে আসামি করে ২০০৮ সালে ৩ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। 

দুদকের পিপি আজিজ উল্লাহ বলেন, মামলাগুলো আদালতে উত্থাপন করার পর চুক্তিতর্ক শুনানি শেষে ১৭ মে মানিকগঞ্জ সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক জয়শ্রী সমদ্দার ৪ ও ৫ নাম্বার মামলার চার্জ গঠন করেন। আর ১২ নাম্বার মামলার চার্জ গঠন করেন ২৫ মে। 

চলতি বছরের অক্টোবরের মধ্যে হাইকোর্ট মামলাগুলো নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানান তিনি। 

এ বিষয়ে পৌর মেয়র রমজান আলী  জানান, মামলাগুলো করা হয়েছিল হয়রানি করার জন্য। দুদক যে অভিযোগ এনেছে তার কোনোটিই সত্য নয়। তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।