• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

মানিকগঞ্জে স্কুলের অনিয়মের বিষয়ে প্রতিবেদন চেয়েছেন পুলিশ সুপার

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২৭ জুন ২০২২  

মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে ঝিটকা আনন্দ মোহন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ নিয়ে অনিয়মের যে অভিযোগ উঠেছে, সে বিষয়ে প্রতিবেদন চেয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার মো. গোলাম আজাদ খান। তার নির্দেশে সম্প্রতি স্কুলের অভিযুক্ত শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা।

জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিএসবি) এসআই শামসুল হুদা রবিবার বলেন, পুলিশ সুপার মহোদয় নির্দেশ দিয়েছেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদ নিয়ে যে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে সে বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন দিতে। এ বিষয়ে আমি অভিযুক্ত শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলেছি। অভিযোগকারীদের সঙ্গেও কথা বলে বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দেবো।

এদিকে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষকের পদ নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার নিরসন না করে ব্যবস্থাপনা কমিটির তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। গত ২৩ জুন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৮, ২৯ ও ৩০ জুন মনোনয়নপত্র বিতরণ ও গ্রহণ হবে এবং ১৮ জুলাই নির্বাচনের তারিখ। নির্বাচনের সার্বিক কার্যক্রমে প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়কে স্থান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

তফসিল ঘোষণাকারী প্রিজাইডিং অফিসার উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মুহাম্মদ কামরুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, নির্বাচনের জন্য আমি যাবতীয় কার্যক্রমের স্থান হিসেবে প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়কে উল্লেখ করেছি। নিয়ম অনুযায়ী প্রধান শিক্ষকের পদে যিনি থাকবেন তিনি এই কার্যালয়ের দায়িত্ব পালন করবেন।

প্রিজাইডিং অফিসার বলেন, কেউ নিয়ম ভেঙে প্রধান শিক্ষকের পদ দখল করে থাকলে সেটি ব্যবস্থাপনা কমিটিতে যারা আছেন তারা দেখবেন।

‘শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশ উপেক্ষা করে প্রধান শিক্ষকের পদ দখল!’ শিরোনামে গত ২০ জুন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এতে বলা হয়, নিয়মের বাইরে গিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ দখলের অভিযোগ উঠেছে মানিকগঞ্জের এক স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে। সিনিয়র শিক্ষককে ডিঙিয়ে জুনিয়র শিক্ষক বসে আছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে। এতে প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। এ ঘটনা জেলার হরিরামপুরের ঝিটকা আনন্দ মোহন উচ্চ বিদ্যালয়ের।

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড থেকে গত ৩ এপ্রিল বিদ্যালয়টির এডহক কমিটির সভাপতির প্রতি একটি চিঠি (স্মারক নম্বর: ঢশিবো/বি/৭০৯/মানিক/৩৪৬) দেওয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়, বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো. সায়েদুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে দিয়ে ১৫ দিনের মধ্যে যেন বোর্ডকে জানানো হয়। কিন্তু দুই মাস পেরিয়ে গেলেও এই নির্দেশ উপক্ষিত রয়ে গেছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ৬ মার্চ শিক্ষা বোর্ড বরাবর তদন্ত প্রতিবেদন (নম্বর ২১৪) দেন মানিকগঞ্জ জেলা শিক্ষা অফিসার। সেই আলোকে সিনিয়র শিক্ষক সায়েদুর রহমানকে দায়িত্ব দেওয়ার নির্দেশনা দেয় বোর্ড।

শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, সিনিয়র শিক্ষক মো. সায়েদুর রহমানকে ডিঙিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদে বসে আছেন বিদ্যালয়ের করণিক ও জুনিয়র শিক্ষক মো. সোহরাব উদ্দিন। অর্থের বিনিময়ে ব্যবস্থাপনা কমিটিকে প্রভাবিত করে তিনি পদ দখল করেছেন এবং বিভিন্ন অনিয়ম চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে।

শিক্ষা বোর্ডের চিঠি পাওয়ার পরেও কেন জুনিয়র শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে রাখা হয়েছে জানতে চাইলে, এডহক কমিটির সভাপতি দেওয়ান সাইদুর রহমান এই প্রতিবেদককে বলেন, বিষয়টি নিয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি অ‌পেক্ষা কর‌তে ব‌লে‌ছেন। তার স‌ঙ্গে পরামর্শ ক‌রে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হ‌বে।

অন্যদিকে অভিযুক্ত জুনিয়র শিক্ষক সোহরাব উদ্দিন বলেন, ম্যানেজিং কমিটি আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে এবং এ জন্যই আমি দায়িত্ব পালন করছি। কে সিনিয়র কে জুনিয়র সেটি দেখার দায়িত্ব ম্যানেজিং কমিটির।