• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনৈতিক স্বার্থে নিজ কার্যালয়ে চুরির ঘটনা ঘটিয়েছেন মাহী বি চৌধুর

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২০ মে ২০১৯  

 বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাহী বি. চৌধুরীর মধ্য বাড্ডার রাজনৈতিক কার্যালয়ে চুরির ঘটনা ঘটেছিলো রোববার (১২ মে)। সে সময় অফিস থেকে রাজনৈতিক গবেষণার বিভিন্ন দলিলপত্রসহ কম্পিউটারের হার্ডডিক্স, অন্যান্য যন্ত্রাংশ ও সিসিটিভি ক্যামেরার প্যানেলের হার্ডডিক্স চুরি হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন মাহী।

যদিও এই ঘটনায় তার পরিচিত জনরা জড়িত বলে অভিযোগ করেছিলেন মাহী। মাহীর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করতে গিয়ে ‘কেঁচো খুঁড়তে সাপের সন্ধান পেয়েছে’ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রাজনৈতিক স্বার্থে মাহী পরিকল্পিতভাবে বিশ্বস্ত মানুষদের দ্বারা নিজ অফিসেই চুরির ঘটনা ঘটিয়ে বিতর্ক সৃষ্টির পাঁয়তারা করছেন বলেও জানা গেছে।

এদিকে উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিকল্পধারার দফতর সম্পাদক ও গবেষণা সমন্বয়ক ওয়াসিমুল ইসলাম সোমবার (১৩ মে) বাড্ডা থানায় চুরির ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তে এমন বিস্ময়কর তথ্য উঠে এসেছে।

অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্যের বরাতে জানা যায়, চুরির ঘটনায় সন্দেহভাজন ৪ জন এবং ভবনের নিরাপত্তা প্রহরীসহ মোট ৭ ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রাপ্ত তথ্যের আলোকে মাহী বি চৌধুরীর পিএস লাবীব ও এপিএস সোহাগকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এমন তথ্য পায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

বিস্তারিত তদন্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানতে পারে, অফিস কক্ষের চাবি ব্যবহারের কোনো নিয়মতান্ত্রিকতা ছিলো না। চাবি দুটি রাখার দায়িত্বও নির্দিষ্ট করা ছিল না। প্রেস সেক্রেটারি জাহাঙ্গীর প্রতিদিন অফিসে আসলেও ঘটনার দিন ১২ই মে অফিসে আসেন নি। তাই ঘটনায় নিরাপত্তা প্রহরীদের জড়িত না থাকার বিষয়ে নিশ্চিত হতে পেরেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

দপ্তর সম্পাদক ওয়াসিমুল ইসলামের কম্পিউটার থেকে হার্ডডিক্স, র‌্যাম, প্রসেসর চুরি হয়েছে। যা ছিলো ১৩ থেকে ১৪ বছরের পুরনো কম্পিউটার। যার হার্ডডিস্ক ১ টেরাবাইট, যা একটি পেন ড্রাইভের মাধ্যমেও হস্তান্তর সম্ভব। এছাড়া প্রতিটি রাজনৈতিক গবেষণা ফাইলের ব্যাকআপ ফাইল বিকল্পধারার দপ্তর সম্পাদক ওয়াসিমুল ইসলাম ও মাহী বি চৌধুরীর বাসস্থানের ব্যক্তিগত কম্পিউটারে রয়েছে। ফলে হার্ডডিস্ক চুরি যে অপূরণীয় ক্ষতি, বা বলা যায় না।

এদিকে, মাহী বি চৌধুরীর পিএস লাবীবের বরাতে জানা যায়, মাহী বি চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে যাবার পূর্বে লাবীবকে বলে যান, মাহী বি চৌধুরীর দেশে ফিরে দফতর সম্পাদক ওয়াসিম ও প্রেস সেক্রেটারি জাহাঙ্গীরকে বের করে দিবেন। এ প্রেক্ষিতে ওয়াসিমুলের কম্পিউটারে রক্ষিত বিভিন্ন ফাইল স্থানান্তরের জন্য ওয়াসিমুলকে গত ৮ মে তারিখ এক সপ্তাহের সময় নির্ধারণ করে দেয়, তার ঠিক ৪ দিন পর অর্থাৎ বেঁধে দেয়া সময়ের ৩ দিন আগেই চুরির ঘটনা ঘটে। তাই ধারণা করা যায় যে, চুরির ঘটনায় দফতর সম্পাদক ওয়াসিম এর সম্পৃক্ততা রয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি সূত্র বলছে, চুরির ধরণ ও সন্দেহভাজন ১১ জনের ভাষ্য বিশ্লেষণে এও ধারণা করা হচ্ছে যে, মাহী বি চৌধুরী নিজেই কারোও সহযোগিতায় এ চুরির ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারেন। এ ক্ষেত্রে জাহাঙ্গীর এবং ওয়াসিমুলের মধ্যকার বিরোধকে ব্যবহার করে তিনি এ ঘটনা ঘটিয়ে আওয়ামী সরকারের আমলে কোন রাজনৈতিক দলের অফিস নিরাপদ নয় বলে প্রমাণ করার অপচেষ্টা করছেন। কারণ বিকল্পধারা দলটি সৃষ্টি হয়েছে বিএনপি থেকে বেরিয়ে গিয়ে। এছাড়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেও বিকল্প ধারা চেয়েছিলো বিএনপির সঙ্গে জোট করে ঐক্যফ্রন্ট তৈরি করার। বিএনপির কোনো এজেন্ডা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যেই কৌশলে নিজ অফিসে চুরির ঘটনা ঘটিয়েছেন মাহী ।