• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

যে কৌশলে জামায়াতের সঙ্গে সখ্যতা বাড়ছে অলি আহমদের!

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২১ মে ২০১৯  

 হঠাৎই জামায়াতকে আশ্রয় করে রাজনীতিতে সরব হয়েছেন ২০ দলীয় জোটের শরিক এলডিপি চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ। এমনকি একইরকম ঘনিষ্ঠতা দেখা যাচ্ছে জামায়াতের পক্ষ থেকেও। প্রশ্ন উঠেছে— কর্নেল (অব.) অলি আহমেদকে সামনে রেখে জামায়াত কি কোনও নতুন মিশনে নেমেছে?

এলডিপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো দাবি করছে, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ‘সাংগঠনিকভাবে ব্যর্থ’ হওয়ায় অলি আহমদকে সামনে আনা হয়েছে। এর পেছনে দু’টি গুরুত্বপূর্ণ দেশের সহযোগিতা ও পরামর্শ রয়েছে তাদের প্রতি। তবে, গুরুত্বপূর্ণ ওই দেশ দু’টির নাম জানাতে রাজি হননি কেউই। মির্জা ফখরুল সাংগঠনিকভাবে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হওয়ায় বিএনপির হাইকমান্ড অলি আহমদকে সামনে এনেছে।

বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক পক্ষ মনে করে, প্রতিবেশী বিভিন্ন দেশের আপত্তি ও দেশের ভেতরে নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক দলগুলোর একটি বড় অংশের বিরোধিতার কারণে দলটির উচ্চপর্যায়ের একটি বড় অংশ চায় বিএনপিকে ছেড়ে যাক জামায়াত। আর বিষয়টি বুঝতে পেরে অলি আহমদকে সামনে আসার পরামর্শ দিয়েছে জামায়াত। ইস্যু হিসেবে ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি’র বিষয়টিকে নির্বাচন করেছে। এক্ষেত্রে বিএনপির যে অংশটি জামায়াতকে বাদ দিতে তৎপর, সেই মির্জা ফখরুলবলয়কে কোণঠাসা করার কাজটি সহজ হয়। এটি হতে পারে ফখরুলকে কোণঠাসা করে বিএনপির দায়িত্বটা কর্নেল অলির নিজের হাতে নেয়ার চেষ্টা। কেননা, বেশ কিছুদিন ধরে বিএনপির দায়িত্ব পেতে নানা রকম বক্তব্য দিচ্ছে কর্নেল অলি।

যদিও জাতীয়তাবাদী ঘরানার কয়েকটি দলের নেতারা বলছেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি নিয়ে অলি আহমদ সক্রিয় হয়েছেন জামায়াতকে সঙ্গে রেখে। যদিও এলডিপির সঙ্গে জামায়াতের দূরত্ব ছিলো যোজন-যোজন। সবমিলিয়ে এমন এক সময়ে জামায়াতের সঙ্গে অলি আহমদের ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে, যখন দলটির সেক্রেটারি কিছুদিন আগে বেশ কয়েকটি দেশ ঘুরে এসেছেন। গত এপ্রিলের মাঝামাঝি সময় থেকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান প্রথমে মালয়েশিয়া, এরপর ফিলিপাইন, লন্ডন ও তুরস্ক সফর করেছেন। লন্ডনে তার সঙ্গে দেখা হয়েছে পাকিস্তান জামায়াতের নায়েবে আমির খুরশিদ আহমেদের। এরপর তুরস্কে দেখা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী আহমেদ দা ‘উতোলো’র সঙ্গে।

এমন প্রেক্ষাপটে বলা হচ্ছে, এর আগেও জোটগত রাজনীতির ক্ষেত্রে ভিন্ন কৌশল গ্রহণ করেছে জামায়াত। ১৯৯১ সালে চারদলীয় জোট হওয়ার পর ২০১২ সালের এপ্রিলে জোটের পরিসর বেড়ে ১৮ দলীয় জোট হয়। এই বৃদ্ধিতে মূল কারিগর ছিলেন প্রয়াত শফিউল আলম প্রধান, যাকে নেপথ্যে থেকে সহযোগিতা করে জামায়াত। এবার বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্ক বিষয়ে নানা মহলের চাপের প্রেক্ষিতে কর্নেল অলি আহমদকে ব্যবহার করছে বিএনপির প্রধান নেতৃত্ব। অন্যদিকে জামায়াতকে আশ্রয় করে কর্নেল অলি আহমদ রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা করে নিতে চাইছে।