• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

মোশাররফ ও এমাজউদ্দীনের ফোনালাপ:তিক্ততা চরমে

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২৯ নভেম্বর ২০১৮  

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আসন বণ্টন নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে দেখা দিয়েছে হতাশা। এর মধ্যে আবার (২৫ নভেম্বর) বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী ড. এমাজউদ্দীন আহমেদ এর ষড়যন্ত্রের ফোনালাপ ফাঁস হয়ে যাওয়ায় পর বিএনপির সঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের বিভিন্ন দলের মধ্যে তিক্ততা চরমে পৌঁছেছে।  এছাড়া আসন বণ্টন, নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ও নীতিনির্ধারণসহ বিভিন্ন ইস্যুতে বিভেদ দৃশ্যমান হয়েছে।

ঐক্যফ্রন্ট সূত্রের খবরে জানা যায়, বিএনপিকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার প্রেক্ষাপট রচনা করে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা ঐক্যফ্রন্ট।  আন্দোলন-সংগ্রামে ব্যর্থ বিএনপি রাজনীতির কক্ষপথ থেকে ছিটকে গিয়েছিল।  সেই অগোছালো বিএনপিকে গুছিয়ে রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনতে দিনরাত পরিশ্রম করেছেন ড. কামাল, মান্না, রব ও সুলতান মনসুরের মতো ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতারা।  অথচ নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের বেইমানির চরিত্র ফুটিয়ে তুলছেন বিএনপি নেতারা।  খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ড. এমাজউদ্দীন আহমেদের ষড়যন্ত্রের ফোনালাপে হতাশ হয়েছে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা।  বিশেষ করে মান্না, রবের জামানত বাতিল হওয়া, রাজনৈতিক ব্ল্যাকমেইলিং বিষয় নিয়ে আলোচনায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন ঐক্যফ্রন্টের বিভিন্ন দলের নেতারা।

এই বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও এমাজউদ্দীন স্যার ঐক্যফ্রন্টকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করেছেন।  বিষয়টি আমাদের জন্য অপমানজনক।  বিএনপিকে নতুন করে জীবন দিয়েছি আমরা।  তাদের ভাঙ্গা কোমর মেরামত করে সোজা হয়ে দাঁড়াতে শিখিয়েছি আমরা।  এখন যখন নির্বাচনে আসন চেয়েছি, তখন আমরা বিএনপির কাছে ব্ল্যাকমেইলার খেতাব পেলাম।  আমরা নাকি নির্বাচন করলে জামানত হারাবো।  একজন রাজনীতিবিদের জন্য এরচেয়ে বড় অপমান আর কি হতে পারে! আমি শুরু থেকেই ড. কামালকে বলেছিলাম যে, স্যার আপনি দুধ-কলা দিয়ে কালসাপ পুষছেন।  তখন কামাল স্যার আমার কথায় পাত্তা দেননি।  বিএনপি যে সুবিধাবাদীদের দল সেটি মোশাররফ ও এমাজউদ্দীন প্রমাণ করেছেন।  মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধেই তো মানি লন্ডারিং ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ চুরি করার মামলা রয়েছে।  তারা কোন মুখে বড় বড় কথা বলেন।  আমি তো শুনেছি, মোশাররফ হোসেন কয়েকটি দূতাবাসের প্ররোচনায় পড়ে খালেদা-তারেককে মাইনাস করে বিএনপির মালিক হতে চান।  আর এমাজউদ্দীন স্যার তো  বিভ্রান্ত পথিক।  গুঞ্জন শুনেছিলাম, বিএনপি সরকারের রাষ্ট্রপতি হতে চান তিনি।  ড. কামালকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করে তিনি হয়ত ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের বিরুদ্ধে বিষেদগার সৃষ্টি করছেন।

 

বিষয়টিকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, মোশাররফ হোসেন ও এমাজউদ্দীন স্যারের ফোনালাপে ঐক্যফ্রন্টের বর্তমান বাস্তবতা উঠে এসেছে।  মান্না ও রব এর দাবিগুলো বিভ্রান্তিকর ও অযৌক্তিক।  মান্নার দলের তো নিবন্ধনই নেই।  এর পরও তিনি জোর করে দাবি আদায় করেছেন।  আর রব তো তার বাড়ির আসনেও গতবার হেরেছিলেন।  তাদের দাবিগুলো প্রতি বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সমর্থন নেই বললেই চলে।  তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে যতগুলো আসনে ছাড় দেয়া হয়েছে, সেটি তাদের জন্য চরম পুরষ্কার বলা যেতে পারে।  এর পরও তারা অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে উচ্চবাচ্য করছেন।  তাদের কারণে ২০ দলীয় জোটেও নানাবিধ গুঞ্জন শুরু হয়েছে।