• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

জামায়াতকে নমিনেশন দিয়ে কর্মীদের আস্থা হারাল বিএনপি

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১১ ডিসেম্বর ২০১৮  

জামায়াত নেতাদের হাতে ধানের শীষ প্রতীক দিয়ে বিপাকে পড়েছে বিএনপি। একদিকে জামায়াতের অজনপ্রিয়তায় আসন হারানোর শঙ্কা, অন্যদিকে দলের অভ্যন্তরে ব্যাপক ভাঙন দেখা দেয়ায় চিন্তিত বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। যুদ্ধাপরাধীদের দল খ্যাত জামায়াতকে নমিনেশন দিয়ে ইতোমধ্যেই নিজ দলের কর্মীদের আস্থা হারিয়ে ফেলেছে দলটির নেতারা। বিশেষ করে বিগত কিছুদিন ধরে মনোনয়ন বঞ্চিতদের গুলশান কার্যালয় ঘেরাও করে রাখার ঘটনা থেকে বিএনপির কর্মীদের আস্থায় যে চির ধরেছে তা স্পষ্ট বোঝা যায়। জামায়াতকে মনোনয়ন দেয়ায় বিক্ষুব্ধ কর্মীরা নিজেদের দলীয় কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের মতো ঘটনাও ঘটিয়েছে বলে জানা যায়।

সূত্র বলছে, বিএনপি জামায়াতকে সর্বাধিক ২২ আসনে নমিনেশন দিয়েছে। কিন্তু এসব আসনে জামায়াতের জামানত বাজেয়াপ্ত হতে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করছে দলের একাধিক শীর্ষ নেতা। এদিকে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আসন নিয়ে দর-কষাকষিতে জামায়াত জয়ী হলেও নির্বাচনে জয় নিয়ে চিন্তিত কেন্দ্রীয় বিএনপি। নিশ্চিত পরাজয় জেনেও ২০ দলীয় জোটে নিজেদের কর্তৃত্ব ধরে রাখার চেষ্টায় দলটি আসন নিয়ে দর-কষাকষিতে নেমেছে। আর এতে সায় দিয়ে তাদের চাহিদা মতো আসনে মনোনয়ন দিয়েছেন বিএনপি নেতারা। ফলে তৃণমূলে জামায়াত বিদ্বেষী মনোভাব বাড়তে শুরু করেছে। কেননা, যেখানে জনপ্রিয়তা থাকা সত্ত্বেও বিএনপির বিভিন্ন মনোনয়ন পাচ্ছে না, সেখানে অজনপ্রিয় হওয়া সত্ত্বেও অসংখ্য আসনে নির্বাচন করছে জামায়াতের নেতারা।

এ প্রসঙ্গে ঝিনাইদহ-৩ (মহেশপুর-কোটচাঁদপুর) আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী মনির খান জানান, আসনটি জোটের শরিক জামায়াতে ইসলামীকে ছেড়ে দেওয়ায় চূড়ান্ত তালিকায় ঠাঁই হয়নি তার। এরপরই পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেন মনির খান।

মনোনয়ন বঞ্চিত এই সংগীতশিল্পী বলেন, ‘মনোনয়ন পাওয়া-না পাওয়া বড় বিষয় করে দেখছি না। মনোনয়ন পেলে রাজনীতি করব, আর না পেলে করব না- বিষয়টি এমন ছিল না। তবে জামায়াতের মতো যুদ্ধাপরাধী দলকে আমার আসন থেকে মনোনয়ন দিয়ে আমার সম্মানহানি করা হয়েছে। দিন দিন বিএনপির রাজনীতি খুব কঠিন হয়ে পড়ছে। বিএনপি এখন জামায়াত নির্ভর দলে পরিণত হয়েছে। তাই আমি স্বেচ্ছায় দল থেকে পদত্যাগ করেছি।’

এ প্রসঙ্গে খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া ও ফুলতলা) আসনে বিএনপির মনোনয়ন বঞ্চিত নেতা ড. মামুন রহমান বলেন, খুলনার মতো জনপ্রিয় আসন থেকে জামায়াতের আল-বদর নেতা অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারকে মনোনয়ন দিয়ে আমাকে অপমান করা হয়েছে। সে নির্বাচন করলে নির্ঘাত জামানত হারাবে। বিএনপির একটি সিদ্ধান্ত খুলনার লাখ লাখ নেতাকর্মীর হৃদয় ভেঙে গেছে। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি নমিনেশন পরিবর্তন না করলে আর বিএনপির রাজনীতি করবো না। আমরা কেন্দ্রকে আল্টিমেটামও দিয়েছি।

উল্লেখ্য, জামায়াতকে নমিনেশন দেয়ায় বিএনপির গুলশান কার্যালয়ে তিনদিন ধরে তৃণমূল নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন। প্রথমে ২৫টি আসন বলা হলেও চূড়ান্তভাবে ২২ আসনে জামায়াতের প্রার্থীরা ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করবে বলেও নিশ্চিত হওয়া গেছে।