• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

‘মাহবুব তালুকদারের একক নির্দেশনা বিভ্রান্তিমূলক’

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮  

নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারকে ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম বলেছেন, ‘কোনো নির্বাচন কমিশনারের একক নির্দেশনা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে।’

নির্বাচন কমিশনের পাঁচ সদস্যের মধ্যে কোনো একজন কমিশনার এককভাবে নির্দেশনা দিতে পারেন না, উচিত নয়। তাহলে জনমনে এ বিষয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হতে পারে’ বলে অভিমত দিয়েছেন আওয়ামী লীগের এই সিনিয়র নেতা।

বুধবার সন্ধ্যায় আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে সিইসিসহ নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিদলের নেতা ইমাম।

এর আগে বুধবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকরী বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশ করে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, ‘অতি উৎসাহী হয়ে কোন অনভিপ্রেত আচরণ করবেন না। আপনারা নির্বাচনের সবচেয়ে বড় সহায়ক শক্তি। প্রত্যেকের প্রতি সম-আচরণ ও নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন আপনাদের কর্তব্য। নির্বাচনে পক্ষপাতমূলক আচরণ থেকে বিরত থাকুন। নিজেদের পোষাকের মর্যাদা ও পবিত্রতা রক্ষা করুন।’

এর পর পরই এইচ টি ইমামের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন।

পরে সাংবাদিকদের এইচ টি ইমাম বলেন, ‘সকালে গণমাধ্যমে একজন কমিশনারের বক্তব্য শুনেছি। যা আমাদের হচকচিত করেছে। কারণ একজন কমিশনার এককভাবে কোনো নির্দেশনা দিতে পারেন না। যা সিদ্ধান্ত হবে সেই বিষয়ে নির্দেশ দেবেন পাঁচ সদস্যের কমিশন। এরপর সেই সিদ্ধান্ত সিইসি জানাবেন। কমিশন থেকে বের হয়ে আরেকজন ব্যক্তিগত মত দেবে, তা গ্রহণযোগ্য নয়। তবে ‘চেইন অব কমান্ড’ মানা হচ্ছে না সেটি আমরা মনে করিনা।’

আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির এই কো-চেয়ারম্যান বলেন, ‘কমিশন বৈঠকে কোনো কমিশনার ভিন্নমত প্রকাশ করতে পারেন, কিন্তু তিনি তা বাইরে এসে বলতে পারেন না। এতে মানুষের কাছে ভুল বার্তা যেতে পারে। কারণ কমিশনের মর্যাদা রক্ষা করতে হবে।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘অর্থ ও পেশী শক্তি নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়। পেশী শক্তি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে প্রশাসন। কিন্তু অর্থের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। গতকালও (মঙ্গলবার) বড় একটি চালান এসেছে হুণ্ডির মাধ্যমে। নির্বাচনের আগের দিন ও পরের দিন টাকা লেনদেন নিয়ন্ত্রণ করা যায় কি-না, সেটি দেখার জন্য কমিশনকে বলেছি। ভোট কেনা বেচায় এটি ব্যবহৃত হতে পারে।’

এইচ টি ইমাম বলেন, ‘এনজিও পর্যবেক্ষণ ব্যুরো থেকে দেখলাম ১১৯টির মধ্যে ৭৫টির-ই নিবন্ধন নেই। অধিকারের বিরুদ্ধে মামলা আছে, এনজিও ব্যুরো বলছে- তাদের নিবন্ধন-ই নেই। তাদের আচরণ ও কথাবার্তায় তারা বিকৃত তথ্য দিয়ে যেগুলো রীতিমত নির্বাচন কমিশন নয় রাষ্ট্রের জন্য অপমানজনক। এনফ্রেলের লোকাল চ্যাপ্টার অধিকারের চেয়ারম্যান আদিলুর রহমানের বিরুদ্ধেও মামলা আছে। এনফ্রেল ও অধিকার এক ও অদ্বিতীয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা যানবাহন চলাচলের ওপর শিথিলতা করতে বলেছি। সাংবাদিকদের চলাচলে বিঘ্ন না ঘটে এবং মোটরসাইকেলের জন্য যাতে পাসের ব্যবস্থা করা হয় সেটি আমরা অনুরোধ জানিয়েছি। এছাড়া আমাদের ও সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য শিথিলতা চেয়েছি। কারণ আমাদের কমিশনে আসতে হবে ও অন্যান্য জায়গায় চলাচল করতে হবে। সে জন্য আমরা যানবাহন চলাচল কিছুটা শিথিলতা চেয়েছি।’

ঐক্যফন্টের সঙ্গে কমিশনের বৈঠকের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কি-না জানতে চাইলে এইচ টি ইমাম বলেন, ‘আমরা কমিশনকে বলেছি আপনারা সবচেয়ে উচু প্রতিষ্ঠান। আমরা টেবিলও চাপড়াবো না আর ধমকও দেবো না।’

আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলে ছিলেন- প্রধানমন্ত্রীরর অর্থ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী সদস্য রিয়াজুল কবির কাওসার প্রমুখ।