• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জামায়াত প্রীতিই বিএনপি-ঐক্যফ্রন্টের দুর্দিনের কারণ

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৩১ জানুয়ারি ২০১৯  

গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষে অধিকাংশ এমপিরাই শপথ নিয়েছেন। নতুন মন্ত্রিসভা গঠিত হয়েছে।গত বুধবার সেই সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়েছে।

বিএনপি ও তাদের নতুন জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বিজয়ী প্রার্থীরা এখনও পর্যন্ত শপথ নেননি। নির্বাচনের পরদিনই তারাজানিয়েছে যে শপথ নেবে না এবার। তবে ঐক্যফ্রন্টের শরিক দল গণফোরামের ২ জন এমপি শপথ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে নির্বাচন কমিশন (ইসি) বলছে, নির্বাচনের ফলের গেজেট প্রকাশের তিনদিনের মধ্যে শপথ নিতে হয়। গেজেটপ্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে সংবিধান অনুযায়ী প্রথম অধিবেশন শুরুর পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচিত সাংসদরা শপথ গ্রহণনা করলে তাদের আসন শূন্য হয়ে যায়।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা নির্বাচনে বিএনপির ভরাডুবির পিছনে জামায়াতের প্রতি বিএনপির অন্ধ ভালোবাসাকেই দায়ীকরেছে। বছরের পর বছর ধরে স্বাধীনতাবিরোধী রাজনৈতিক দল জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির সখ্যতাই নির্বাচনে বিএনপির ভরাডুবির অন্যতম কারণ বলে মনে করেন তারা।

তারা বলছেন, একাত্তরের আগে ও পরে হত্যা-নির্যাতন, লুণ্ঠন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদসহ নানান অপকর্মের সাথে জড়িতপাকিস্থানপন্থি যুদ্ধাপরাধীদের সংগঠন জামায়াতের নেতাদের বিরুদ্ধে দেশের বেশিরভাগ নাগরিকই চরম নাখোশ। জনগণজামায়াত নিষিদ্ধসহ দলের শীর্ষ মহল যারা যুদ্ধাপরাধের সাথে যুক্ত ছিল, তাদের বিলুপ্তি চায়। কিন্তু জামায়াতের প্রতি মানুষেরএই মনোভাব জানা সত্ত্বেও দলটিকে পরম মমতায় আগলে রেখেছে বিএনপি।

যেখানে যুদ্ধাপরাধীমুক্ত দেশ গঠনের গণদাবি উপেক্ষা করে ২০১৪ সালের দশম জাতীয় নির্বাচন বিএনপি বর্জন করেছিলশুধুমাত্র যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তির দাবিতে। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিবন্ধন বাতিলের ঝুঁকিতে পর্যন্ত পড়েযায় বিএনপি। যেহেতু জামায়াত দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য অযোগ্য ঘোষিত হয়, এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন নাথাকা এই দলটির অন্তত ২৫ নেতাকে দলীয় প্রতীকে মনোনয়ন ও সমর্থন দিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেয় বিএনপি। যেখানে বিএনপি নতুন জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বাকি শরিকদের  দেয় মাত্র ১৯ টি আসন।

বিএনপির এই জামায়াত প্রেমের বিষয়টি দেশের মানুষের চোখ এড়ায়নি। তাইতো ২০০৮ সাল থেকেই দেশের মাটিতেবিএনপির এই জামায়াতপ্রেম জনগণের কাছে বারবারই প্রত্যাখ্যাত  হয়েছে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের শুরুতে জোটের প্রধান ও গণফোরামের নেতা ড. কামাল হোসেন বলেছিলেন, স্বাধীনতাবিরোধী এইশক্তির সাথে জোট গঠন করবে না। কিন্তু নির্বাচনের সময়ে জাতির সঙ্গে তার প্রতারণার বিষয়টি পরিষ্কার হয়। বিএনপি ও ড.কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট জামায়াত নেতাদের যেখানে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেয় ধানেরশীষ প্রতীকে। জামায়াত সন্ত্রাসী দল হিসেবে দেশে-বিদেশে স্বীকৃত। ফলে বিএনপির পাশাপাশি ড. কামালও দেশে-বিদেশেক্রমেই বন্ধুহীন হয়ে পড়ে।

জামায়াতের প্রতি অন্ধ প্রেমের বিষয়টি ড. কামাল হোসেন ‘ভুল বুঝতে পারলেও’ ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে শোচনীয়পরাজয়ের মাধ্যমে আরও পাঁচ বছরের জন্য জনগণের রায়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বাইরে থাকতে হচ্ছে বিএনপি ও জাতীয়ঐক্যফ্রন্টকে।