• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

গৃহবিবাদে বেগম জিয়ার মুক্তির পথে আলো দেখছে না বিএনপি!

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯  

নিউজ ডেস্ক: দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনে কোনো আলো দেখতে পাচ্ছে না নেতা-কর্মীরা। বেগম খালেদা জিয়া ছাড়া চাপের মুখে পড়া বিপর্যস্ত বিএনপি দীর্ঘমেয়াদী রাজনীতির কক্ষপথ থেকে ছিটকে পড়তে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন দলটির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ।

এদিকে বিএনপির বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, রাজনীতির সংস্কৃতিতে ক্রমশ বেমানান হয়ে পড়া বিএনপি, দলীয় নেত্রীর উপস্থিতির অভাবে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছে। আন্দোলন বাদ দিয়ে নাগরিক সভা-সমাবেশ করায় দলের সাংগঠনিক শক্তির ওপর আস্থা হারাচ্ছেন তৃণমূল নেতৃবৃন্দ। পাশাপাশি স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় নেতাদের নির্বাচনে বাধা দেয়ায় দলের প্রতি অশ্রদ্ধা ও অভক্তি বাড়ছে দিন দিন। সব মিলিয়ে সংকটের চূড়ায়  আটকা পড়ে বিএনপির দীর্ঘশ্বাসে ভারি হচ্ছে ২০ দলীয় জোটের রাজনীতি। কতদিন এমন অচলাবস্থা চলবে, কিংবা বিএনপির রাজনীতির ভবিষ্যৎ কোন দিকে মোড় নেবে- এমন অনিশ্চয়তায় ধুঁকছেন দলটির নেতা-কর্মীরা।

বিষয়টিকে বিশদভাবে ব্যাখ্যা করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমেদ বলেন, আমরা জানি সরকারের কাছে খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে কোনো লাভ হবে না। কারণ, আওয়ামী লীগ নয়, ম্যাডামকে জেলে পাঠিয়েছেন আদালত। সুতরাং আইনি প্রক্রিয়ায় আমরা ম্যাডামকে জেল থেকে মুক্ত করব। এতে সময় লাগলেও আমরা যথাযথ পথেই দাবি আদায় করব। এক বছর যখন কষ্ট হয়েছে, প্রয়োজনে আরো এক বছর কষ্ট করবেন ম্যাডাম। তারপরও আমরা কারো কাছে ভিক্ষা চাইবো না। বিএনপি ভিক্ষুকদের দল নয়। করুণা চাই না, আমরা কর্মে বিশ্বাসী।

কিছুটা সময় নিয়ে তিনি আরো বলেন, হ্যাঁ- এটি সত্য যে আমরা সংকটের চূড়ায় আটকা পড়েছি। এই সংকটতো চিরস্থায়ী নয়। আওয়ামী লীগ ২১ বছর আন্দোলন-সংগ্রাম করে ক্ষমতায় এসেছিল। তাদের ওপর যে পরিমাণ নির্যাতন-অত্যাচার করা হয়েছে, তার সিকি-আনাও আমরা পাইনি। সুতরাং ধৈর্যহারা হলে তো চলবে না। কষ্ট লাগে যখন শুনি, দলবেঁধে বিএনপি নেতা-কর্মীরা অন্য দলে যোগদান করেন। বিএনপির রাজনীতিতে আদর্শের অভাব দেখা দিয়েছে। সুবিধাবাদী নেতারা মাঠে নামতে চান না। এভাবে দল চলতে পারে না। ম্যাডাম বাইরে থাকলে চাটুকারদের অভাব হয় না। তিনি আজ জেলে, অথচ এক সময়ের চাটুকাররা এখন গা বাঁচিয়ে চলছেন। সংকট তীব্র হবে যদি বিএনপি চাটুকার আর বেইমানদের হাত থেকে মুক্তি না পায়।

বিএনপির বিপর্যয়কে সাময়িক হিসেবে উল্লেখ করে স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বিএনপি যদি আন্দোলন করে তাহলে বাধা আসবে, আর বাধা আসলে তার প্রতিরোধ করবে বিএনপি। তখন যে আন্দোলন শুরু হবে তাকে তো আপনারা বলবেন- বিএনপি জ্বালাও-পোড়াও, ধ্বংসাত্মক আন্দোলন শুরু করেছে। বিএনপির তো ঘরে ও বাইরের শত্রুর অভাব নেই! কুমন্ত্রণা দিয়ে বিএনপিকে সহায়-সম্বলহীন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে দলের ভেতরের কিছু কুচক্রী মহল। কিন্তু এই অশুভ মিশন কোনোদিন সফল হবে না।

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে আরো বলেন, ভয়-ভীতি দূর করে আমাদের মাঠে নামতে হবে। অন্যের দয়ায় নয় বরং নিজ শক্তি দিয়ে অসাধ্যকে সাধন করতে হবে। ভয়ের সংস্কৃতি থেকে বের হতে পারলে বিএনপি স্বরূপে ফিরতে পারবে। আর যদি না হয়, তাহলে দীর্ঘ সময়ের জন্য বিএনপি শীতনিদ্রায় চলে যেতে পারে।