• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থ ও পদের প্রলোভনে বিএনপিতে একীভূত হওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯  

নিউজ ডেস্ক: ২০ দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করার উদ্দেশ্যে বিএনপিকে ছাড়ার ঘোষণার প্রাক্কালে তারেক রহমান জামায়াতকে যে প্রস্তাব দিয়েছিলো তা ফিরিয়ে দিয়েছে দলটি। যেকোন মূল্যে জামায়াতকে জোটে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রয়োজনে সাংগঠনিক স্পৃহা বাড়াতে জামায়াতকে আর্থিকভাবে সহায়তা করারও মনোভাব প্রকাশ করেছিলেন তারেক রহমান। কিন্তু সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। লন্ডন বিএনপির সভাপতি আব্দুল মালিকের ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাতে এই তথ্যের সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

এদিকে এ বিষয় সম্পর্কে যুক্তরাজ্য স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি নাসির আহমেদ শাহিনের বরাতে জানা যায়, জামায়াত নেতা ব্যারিস্টার রাজ্জাকের পদত্যাগ ও মুজিবুর রহমান মঞ্জুর বহিষ্কারে জামায়াতের ভাঙন রোধ এবং ২০ দলীয় জোটের সাংগঠনিক শক্তি ধরে রাখতে দলটিকে একাধিক অফার দিয়েছিলেন তারেক রহমান। লন্ডনে অবস্থানকারী জামায়াত নেতা ব্যারিস্টার রাজ্জাক ও মঞ্জুসহ একাধিক দেশত্যাগী নেতাদের বিএনপিতে যোগদান করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন তারেক। কারণ এসব নেতারা এখন জামায়াতে ব্রাত্য জন।

তিনি আরো জানান বিতর্ক, জনরোষ এবং ক্ষমতাসীনদের রোষানল থেকে বাঁচার তাগিদে তারেক রহমান জামায়াত ভেঙ্গে দিয়ে দলটির নেতাদের গণহারে বিএনপিতে যোগদান করে বিএনপির হাতকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান। বিএনপিতে যদি জামায়াত একীভূত হয় তবে সরকার, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং দেশের তরুণ সমাজদের অভিশাপ এবং ঘৃণা দৃষ্টি থেকে বাঁচতে পারতো। শুধু তাই নয়, জামায়াতের সিনিয়র নেতাদের বিএনপির স্থায়ী কমিটির শূন্যপদগুলোও দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু জামায়াত নেতারা বিএনপির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে নিজেদের পতন তরান্বিত করলেন। বিএনপির বাইরে জামায়াতের কখনই স্বতন্ত্র পরিচয় ছিল না। প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে জামায়াত ধৃষ্টতা দেখিয়ে তারেক রহমানকে বিব্রত করেছে। বিএনপিকে বিব্রত করে জামায়াত লাভবান হতে পারবে না।

বিষয়টিকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করে লন্ডনে নির্বাসিত জামায়াত নেতা জালাল ইউনুস বলেন, জামায়াত নিঃশেষ হয়ে যাবে, তবুও কারো করুণার পাত্রে পরিণত হবে না। জামায়াত অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে এখন বরং আরো বেশি শক্তিশালী। দু-একজন নেতার পদত্যাগ বা বহিষ্কারে জামায়াতের ভেঙে পড়াটা বোকামি ছাড়া কিছুই নয়।

তারেক রহমানের প্রস্তাবের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে জালাল বলেন, অন্যের ঘরে আগুন লাগলে সবাই নিজ আলু পুড়িয়ে খেতে চায়। বিএনপিকে এতদিন পেশিশক্তির রাজনীতিতে সমর্থন দিয়েছে জামায়াত। আজকে যখন জামায়াতের অভ্যন্তরে কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হয়েছে, তখন বিএনপিও অন্যদের মতো রাজনৈতিক সুবিধা আদায় করার চেষ্টা করছে। তারেক রহমান জামায়াত নেতা ব্যারিস্টার রাজ্জাক, মঞ্জু এমনকি জামায়াতের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান, নায়েবে আমির মিয়া গোলাম পরওয়ারকে অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে বিএনপিতে যোগদান করা এবং পদ দেয়ার প্রস্তাব দিয়েও প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন। জামায়াত বিক্রির বস্তু নয়।

তিনি আরো বলেন, জামায়াত বিলীন হয়ে যাবে, কিন্তু কারো কাছে নতি স্বীকার করবে না। জামায়াত তার আদর্শ থেকে এক হাতও নড়বে না। অর্থ ও পদের রাজনীতি বিএনপিতে চলে, জামায়াত আদর্শের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। যারা দুর্নীতি, অপরাজনীতিতে বিশ্বাস করে তারা অন্তত জামায়াতের সঙ্গী হতে পারে না। আমি শুনেছি, শিগগিরই জামায়াত ঘোষণা দিয়ে বিএনপিকে ত্যাগ করবে। বিক্রি হয়ে যাওয়া রাজনীতির জন্যেই আজকে বিএনপি নির্বাসিত এবং জেলে। জামায়াত দুই নৌকায় পা দেয় না।