• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

খালেদার মুক্তির জন্য আবারো সরকারের দ্বারস্থ হচ্ছে বিএনপি

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৬ মার্চ ২০১৯  

আইনি লড়াইয়ে পরাস্ত হয়ে আবারও সরকারের সুদৃষ্টি আকর্ষণ করে দুর্নীতির দায়ে কারাবন্দী বিএনপি নেত্রী বেগম জিয়াকে মুক্ত করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন বিএনপির খালেদাপন্থী নেতারা।

যদিও লন্ডন থেকে তারেক রহমান স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন যে, সরকারের করুণায় বেগম জিয়ার মুক্তি চান না তিনি। সরকারের কৃপায় বেগম জিয়া কারাগার থেকে বের হলেও সারা জীবন তাকে দুর্নীতি ও সরকারি সহায়তার গঞ্জনা শুনতে হবে। তাই অন্যের করুণার চেয়ে কারাগারেই বেগম জিয়ার রাজনৈতিক জীবনের যবনিকা টানার বিষয়কে প্রাধান্য দিচ্ছেন তারেক। ঢাকা বিএনপি ও লন্ডন বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতার বরাতে তথ্যের সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে কিছুটা হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেন, বেগম জিয়ার মুক্তির বিষয়ে আমরা যথেষ্ট আইনি লড়াই লড়েছি। এই লড়াইয়ের কোন শেষ দেখছি না। খালেদা জিয়া মামলা জালে আটকা পড়েছেন। আইনি প্রক্রিয়ায় তাকে মুক্ত করতে গেলে অন্তত দশ বছর লেগে যেতে পারে। খালেদা জিয়া বিহীন বিএনপি এক বছরে যে ঝড়-ঝাপটার ভেতর দিয়ে গেছে তা বর্ণনাতীত। বেগম জিয়াকে ছাড়া বিএনপি অচল। সুতরাং আমরা সার্বিক দিক বিবেচনা করে সরকারের দ্বারস্থ হয়ে তার মুক্তি চাইতে যাব।
এসময় তিনি আরও বলেন, অভিমান করে এক বছরে কোন লাভ পাইনি আমরা। মাঝখান থেকে হাজার হাজার কর্মী দলত্যাগ করেছেন। যা বিএনপির ভবিষ্যৎ রাজনীতির জন্য শুভকর হবে না। অবশ্য লন্ডন থেকে নিষেধাজ্ঞা আছে যে বেগম জিয়ার মুক্তির জন্য কারো করুণা আশা করা যাবে না। প্রয়োজনে কারাগারেই বেগম জিয়ার রাজনৈতিক জীবনের যবনিকা টানারও আভাস দেয়া হয়েছে লন্ডন থেকে। আমরা অবশ্য সকল বাধা অতিক্রম করে বেগম জিয়াকে মুক্ত করার জন্য যা করার তাই করবো। আমরা খালেদা জিয়াকে জেলে নয়, রাজনীতিতে দেখতে চাই।

এদিকে যুক্তরাজ্য বিএনপি নেতা আব্দুল মালেকের বরাতে জানা গেছে, তারেক রহমান কারো দয়া-দাক্ষিণ্যে বেগম জিয়ার মুক্তির বিপক্ষে। প্রয়োজনে বাকিটা জীবন বেগম জিয়াকে জেলে দেখতে চান তারেক। সরকারের করুণায় বেগম জিয়া মুক্তি পেলে সারা জীবন বিএনপিকে কটু কথা শুনতে হবে। অন্যের দয়ায় বাঁচিয়ে রাখার চেয়ে বিএনপিকে নিষ্প্রাণ দেখতে চান তারেক। তার মতে, দ্বিতীয় সারির রাজনৈতিক দল হিসেবেও যদি বিএনপির অবনমন হয় তবুও বিএনপি কারো কাছে মাথা নত করবে না। রাজনীতিতে পরাজিত হওয়ার অর্থ মেরুদণ্ডহীন হয়ে পড়া। মাথা নত করার অর্থ গৃহপালিত দল হয়ে যাওয়ার সমান হবে। যা বিএনপির ভবিষ্যৎ রাজনীতির জন্য আত্মঘাতী হবে।

এদিকে বেগম জিয়ার মুক্তির বিষয়ে ব্যারিস্টার মওদুদদের সমর্থন জানিয়েছেন তৃণমূল বিএনপি নেতৃবৃন্দ। তারেক রহমানের অহমিকা ও স্বার্থপরতায় বিএনপির আজ বেহাল অবস্থায় পড়েছে বলে মনে করছেন তারা। তাই বিএনপিকে বাঁচাতে এবং রাজপথে সগৌরবে ফিরিয়ে আনতে সরকারের সহযোগিতা চাওয়াকে আপাতত বুদ্ধিমানের কাজ হিসেবে বিবেচনা করছে তৃণমূল নেতৃত্ব। বিএনপিকে জাদুঘরে নয় বরং রাজপথে দেখতে চান নেতা-কর্মীরা। সেজন্য প্রয়োজনে দোষ স্বীকার করে সরকারের সহযোগিতা নেয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা।