• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

দল বাঁচাতে মহাসচিব পাল্টাতে অনড় সিনিয়র নেতৃবৃন্দ

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ৬ মার্চ ২০১৯  

খালেদা জিয়ার মুক্তি, তৃণমূল বিএনপির বেহাল দশা, নেতৃত্ব সংকট এবং আগামী জাতীয় কাউন্সিলকে ঘিরে বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের মধ্যে দ্বন্দ্ব চরম রূপ ধারণ করেছে। বিশেষ করে মহাসচিব পরিবর্তন করে বিএনপিকে রাজপথের রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনতে মির্জা ফখরুলকে একঘরে করে রেখেছেন খন্দকার মোশাররফ, মওদুদ আহমেদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও রিজভী আহমেদের মতো সিনিয়র নেতারা। তাদের মতে, বিএনপিকে বাঁচাতে হলে মির্জা ফখরুলের অপসারণ জরুরি। দলটির একাধিক সিনিয়র নেতার সঙ্গে কথা বলে তথ্যের সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

এদিকে বিএনপির করুণ দশাকে সাময়িক এবং নেতৃত্বের অভাবের কারণ হিসেবে দেখছে তৃণমূল বিএনপির নেতা-কর্মীরা। দলটির বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্রের বরাতে জানা গেছে, জাতীয় নির্বাচনের পরেই দলের ভেতর নেতৃত্ব নিয়ে অনাস্থা সৃষ্টি হয়। মির্জা ফখরুলের দুর্বল নেতৃত্ব, সমন্বয়হীনতা, তৃণমূলে অজনপ্রিয়তা এবং বিভিন্ন বেনামী কমিটির অনুমোদন দেয়ার কারণে দিন দিন বিএনপির রাজনীতিতে অশ্রদ্ধেও হয়ে পড়ছেন মির্জা ফখরুল। বিএনপির মরণদশা এবং বিরাজনীতিকরণের কারণে মির্জা ফখরুলের অদূরদর্শিতা ও ভীতির রাজনীতিকে দায়ী করছেন তৃণমূলসহ বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ। বিশেষ করে খন্দকার মোশাররফ, মির্জা আব্বাস, মওদুদরা মির্জা ফখরুলকে বিএনপির রাজনীতি থেকে অবসর নেয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। যদিও মির্জা ফখরুল আরো কিছুদিন রাজনীতি করতে চান বলেও গুঞ্জন রয়েছে।

মির্জা ফখরুলের রাজনৈতিক দুর্বলতার বিষয়ে কিছুটা ক্ষোভ প্রকাশ করে মহাসচিব হতে ইচ্ছুক খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, শুনতে খারাপ লাগলেও এটি সত্য যে মির্জা ফখরুল বিএনপিকে নেতৃত্ব দিতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছেন। মির্জা ফখরুলের পদ ভীতির রাজনীতির জন্য সংসদ নির্বাচনে যোগ্য ও পরীক্ষিত নেতারা মনোনয়ন বঞ্চিত হন। যার ফলে বিএনপিকে চরম বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হয়। উনার বয়স হয়েছে। তার কথা মানতে চাচ্ছে না তৃণমূলসহ বিএনপির দ্বিতীয় ও তৃতীয় সারির নেতারা। এছাড়া বেগম জিয়াও আগামী কাউন্সিলে মহাসচিব পদে পরিবর্তন আনার বিষয়ে মতামত দিয়েছেন। সেই লক্ষ্যে আমরা নতুন মুখের খোঁজ করছি। অবশ্য দল যদি মনে করে তবে এই দায়িত্ব আমি পালন করতে রাজি আছি।

এই বিষয়ে নিজস্ব মনোভাব পোষণ করে মওদুদ আহমেদ বলেন, বিএনপির রাজনীতিতে স্থবিরতার জন্য অন্য কেউ নয় বরং দুর্বল নেতৃত্বই দায়ী। তাই বিএনপির দুর্বলতা কাটিয়ে স্ব-মহিমায় ফেরার জন্য মহাসচিবসহ একাধিক পদের পরিবর্তন করার জন্য একমত হয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রভাবশালী নেতারা। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আগামী কাউন্সিলে মহাসচিব পরিবর্তন করে নতুন মুখ আনতে হবে। সেই লক্ষ্যে আমি গত মাসের ২৭ তারিখে লন্ডনে চিঠিও লেখি। এই পদটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যেনতেন মানুষকে দিয়ে বিএনপির মতো বৃহত্তর দলকে নেতৃত্ব দেয়া সম্ভব নয়। অবশ্য দল চাইলে আমি বিএনপির দায়িত্ব নিতে রাজি আছি। দলে আমি অনেক সিনিয়র। এছাড়া মন্ত্রিত্বেরও অভিজ্ঞতা রয়েছে। সুতরাং বিএনপিকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হলে নতুন মহাসচিবের সন্ধান করতে হবে। আমি আশা করি লন্ডন থেকে শুভ সংকেত পাব।