• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

লন্ডনের চাঁদাবাজি থেকে বাঁচতে বিদেশে পালাতে বাধার মুখে বিএনপির ২

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ১১ মার্চ ২০১৯  

 মানি লন্ডারিং এবং অবৈধ সম্পদ বিদেশে পাচার, সহিংসতার একাধিক মামলার সম্ভাব্য সাজা থেকে বাঁচতে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় বিমান বন্দরে বাধার মুখে পড়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু ও স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। এই দুজনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা ও অভিযোগ থাকায় বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের ফেরত পাঠায়। বিভিন্ন গণমাধ্যমের বরাতে তথ্যের সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

যদিও বিএনপির একাধিক সংস্কারপন্থী সূত্রগুলো বলছে, আগামী দলীয় কাউন্সিলের চাঁদাবাজির অভিশাপ থেকে বাঁচতে ভারতে আত্মগোপন করার চেষ্টা করছিলেন মিন্টু ও গয়েশ্বর চন্দ্র। কারণ চলতি বছরে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় কাউন্সিলের যাবতীয় খরচের অর্ধেক ব্যয়ভার মিন্টুর উপর ন্যস্ত করেছেন তারেক রহমান। চাঁদার অভিশাপ থেকে বাঁচতেই মূলত দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করছিলেন তিনি। এদিকে বিমান বন্দরে গোপনে দেশত্যাগের প্রচেষ্টায় বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার খবর লন্ডন পৌঁছালে নির্ধারিত চাঁদার পরিমাণ আরো বৃদ্ধি পেতে পারে বলেও শঙ্কা করছেন মিন্টু বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে। তবে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের উপর চাঁদার পরিমাণ কম হলেও মূলত দলে কোণঠাসা হয়ে অবহেলার শিকার হওয়ায় অনেকটা অভিমান থেকে রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়াতে বিদেশে যাওয়ার পরিকল্পনার মাঝ পথেই বাধাপ্রাপ্ত হলেন তিনি। যদিও গয়েশ্বরের ব্যক্তিগত সহকারী শাহীন দাবি করেন, চিকিৎসা ও আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে ভারতে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু বাধাপ্রাপ্ত হয়েছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে কিন্তু বিদেশে যেতে বাধা নেই। কি কারণে আসলে তাকে ফিরিয়ে দেয়া হলো সেটি নিয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।

এদিকে গোপনীয়তা রক্ষার শর্তে আবদুল আউয়াল মিন্টুর মাল্টিমোড গ্রুপের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, আগামী জাতীয় কাউন্সিলকে ঘিরে কয়েকদিন ধরেই দুশ্চিন্তার মধ্যে ছিলেন মিন্টু স্যার। এরই মধ্যে গত ৬ মার্চ রাতে লন্ডন থেকে দলীয় কাউন্সিলের যাবতীয় খরচের অর্ধেক অর্থাৎ প্রায় ১ কোটি টাকা ব্যয় বহন করার নির্দেশনা আসে। এরপর থেকে মিন্টু স্যার কেমন জানি অস্থিরতা অনুভব করতে থাকেন। যতদূর জানতে পেরেছি, চাঁদা নামক অভিশাপ থেকে বাঁচতে মিন্টু সাহেব বিদেশে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আজকে বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষ তাকে বাধা দিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, হ্যাঁ, এটি সত্য যে, আবদুল আউয়াল মিন্টুর বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং এবং অর্থ পাচারের মামলা ও অভিযোগ রয়েছে। তবে স্যারের বিরুদ্ধে কিন্তু কোন মামলার রায় হয়নি। সুতরাং তিনি কিন্তু বিদেশ যেতেই পারেন। কিন্তু তাকে বিমান বন্দরে থেকে ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। এখন শুনছি বিএনপির কোন নেতা নাকি লন্ডনে উনার নামে অভিযোগ করে চাঁদার পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছে। উভয় সংকটে পড়েছেন আবদুল আউয়াল মিন্টু।

এই বিষয়ে মিন্টুর ছেলে ও বিএনপি নেতা তাবিথ আউয়ালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার বাবাকে বিমান বন্দরে বাধা দেয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে, কিন্তু সেগুলো বিচারাধীন। আমার বাবা তো পালিয়ে যাবেন না। দেশে এত অর্থ-সম্পদ রেখে আমার বাবা বিদেশে পালিয়ে গিয়ে কি করবেন? তিনি আসলে ক্লান্তি দূর করতে বিদেশ ভ্রমণের চিন্তা-ভাবনা করছিলেন। অথচ বিএনপির রাজনীতিতে গুঞ্জন উঠেছে যে আমার বাবা নাকি বিএনপির চাঁদা নামক রাজনৈতিক অভিশাপ থেকে বাঁচতে বিদেশে পালাচ্ছিলেন। এটি সত্য নয়। বিএনপিকে আর্থিকভাবে যারা টিকিয়ে রেখেছে সেখানে মিন্টু সাহেবের নাম আগে উচ্চারিত হবে।